ধান কাটার শ্রমিক সংকট জগন্নাথপুরে, কৃষকদের ভরসা কম্বাইন হারভেস্টর

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৭: ৩৫

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সংকট দেখা দিয়েছে ধান কাটা শ্রমিকের। থান পাকলেও শ্রমিক সংকটে অনেকে ধান কাটতে পারছেন না। এমন অবস্থায় কৃষকের ভরসা এখন যন্ত্র। কম্বাইন হারভেস্টের দিয়ে ধান কাটছেন তাঁরা। 

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার নলুয়ার হাওর, মইয়ার হাওর ও পিংলার হাওরসহ ছোট-বড় ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিনে বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে। 

হাওর ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলাজুড়ে এখন চলছে ধান কাটার ধুম। পাকা ধানও কাটতে পারছেন না শ্রমিক সংকটে। কেউ আবার অপেক্ষা রয়েছেন ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টের। উপজেলা পর্যাপ্ত কম্বাইন হারভেস্টর না থাকায়ও ফসল ঘরে তুলা নিয়ে চিন্তিত কৃষকেরা। 

কৃষকেরা জানান, ২০১৭ সালে আগাম বন্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে হাওরের ফসলডুবির ঘটনায় কৃষক পরিবারে দুর্দিন নেমে আসে। এরপর বড় ধরনের অকাল বন্যার বিপর্যয়ের ঘটনা না ঘটলেও অতি বৃষ্টি, খরা ও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এ বারের বাম্পারে ফলনে কৃষকেরা আনন্দিত। তবে শ্রমিক সংকট থাকায় চিন্তায় আছেন তাঁরা। যেসব জমিতে বৃষ্টির পানি জমে সেসব জমিনে ধান কাটার মেশিন নিয়ে কাজ করা যায় না। এতে করে দুশ্চিতাও দেখা দিয়েছে। 

নলুয়ার হাওরের ভুরাখালি গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘এবার খুবই ভালো আবাদ হয়েছে। প্রতি কেদারে মিলছে ২০-২৫ মন ধান। ফলনেও আমরা খুবই খুশি। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে দুশ্চিন্তায় আছি। এর মধ্যে জমিনে পানি থাকায় ধান কাটার মেশিন কাজ করছে না। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে আছে। এ রকম ১০ থেকে ১২ দিন থাকলেও গোলায় ধান ভরে উঠবে।’ 

মইয়ার হাওরের কৃষক সোয়া মিয়া বলেন, ‘চাহিদার চেয়ে ভালো ফলন হওয়াতে খুবই আনন্দিত। তবে পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় হাওরে শ্রমিক সংকট রয়েছে। ১০ কেদার জমির ধান পেকে রয়েছে কাটাতে পারছি না। আমাদের হাওরে মাত্র দুইটি কম্বাইন হারভেস্টর আছে। সিরিয়ালে অপেক্ষায় আছি এখন।’ 

নলুয়া হাওরে বেষ্টিত চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, এ বছর যে ফলন হয়েছে তা গত কয়েক বছরেও বোরো জমিতে এমন ফসল হয়নি। বাম্পার ফলনে কৃষকের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক। 

হাওর বাঁচাও জগন্নাথপুর উপজেলা আন্দোলন কমিটির সদস্যসচিব অমিত দেব বলেন, হাওরে শ্রমিক সংকট ও পর্যাপ্ত কম্বাইন হারভেস্টর মেশিন না থাকায় ধান কাটা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ এ বিষয়টির প্রতি আরও বেশি গুরুত্ব থাকা প্রয়োজন। 

জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমদ শ্রমিক সংকট নেই দাবি করে বলেন, এ উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক ধান কাটার কাজ করছেন। পাশাপাশি ৭৫টি কম্বাইন হারভেস্টর মেশিন হাওরে ধান কাটছে। ভবিষ্যতে যন্ত্রের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত