Ajker Patrika

চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকশিল্পী সুষমা দাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৫, ২২: ৩৬
লোকশিল্পী সুষমা দাশ। ছবি: সংগৃহীত
লোকশিল্পী সুষমা দাশ। ছবি: সংগৃহীত

একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকশিল্পী সুষমা দাশ আর নেই। আজ বুধবার বিকেলে সিলেট নগরের হাওলাদারপাড়ার নিজ বাসভবনে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। চার ছেলে, দুই মেয়েসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।

সুষমা দাশের মৃত্যুতে সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে বিকেলে ও সন্ধ্যায় নগরের হাওলাদারপাড়ার বাসায় ভিড় করেন অনুরাগীরা।

পরিবারসূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই শিল্পী। ১৩ মার্চ থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যান তিনি। এরপর অবস্থার অবনতি হলে বাসাতেই রাখা হয়েছিল।

বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী সুষমা দাশ গান করেছেন বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিম, বাউল দুর্বিন শাহ, বাউল আলী হোসেন সরকার, বাউল কামাল পাশাসহ বাংলাদেশের প্রবীণ শিল্পীদের সঙ্গে। লোকসংগীতে অবদানের জন্য ২০১৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন সুষমা দাশ। এ ছাড়া অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন লোকসংগীতের এই সাধক শিল্পী।

সুষমা দাশ ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার পেরুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন প্রখ্যাত লোককবি রশিকলাল দাশ এবং মাতা লোককবি দিব্যময়ী দাশ। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সুষমা দাশ ছিলেন বড়। তাঁর ছোট ভাই একুশে পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত রামকানাই দাশ ছিলেন শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী। এ ছাড়া পরিবারের অনেক সদস্যই সংগীতের সঙ্গে জীবনযাপন করছেন।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পরিষদের সদস্য ও কথাকলি সিলেটের সভাপতি শামসুল বাসিত শেরো আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গুণী লোকসংগীতশিল্পী সুষমা দাশের মৃত্যুতে সিলেট তথা দেশে সংস্কৃতি অঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।’

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হুমায়ুন কবির জুয়েল বলেন, ‘সুষমা দাশ ছিলেন সিলেটের সংস্কৃতি অঙ্গনের অভিভাবক। আমরা আজ একজন গুণী অভিভাবক আর দেশবাসী একজন প্রখ্যাত লোকশিল্পীকে হারাল। এই শূন্যতা আর কোনোভাবেই পূরণ করা যাবে না। তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে হাজার বছর আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে বেঁচে থাকবেন। তাঁর এই মৃত্যুতে গভীরভাবে মর্মাহত ও শোকাহত।’

১৩৫২ বাংলা মোতাবেক ১৯৪৫ সালে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার চাকুয়া গ্রামের প্রাণনাথ দাশের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সুষমা দাশ। সংগীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি। রবীন্দ্রপদক ২০১৯, কলকাতা বাউল ফকির উৎসব সম্মাননা ১৪১৭ বাংলা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সম্মাননা, লালন শাহ ফাউন্ডেশন সম্মাননা, জেলা শিল্পকলা একাডেমি গুণীজন সম্মাননা ২০১৫, বাংলাদেশ বেতার গুণীজন সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ঢাকা: প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপিকে বৈষম্যবিরোধীদের বাধা

নির্বাচনে প্রার্থীর প্রচারে পোস্টার থাকছে না

মিয়ানমার যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল

শত শত বিদেশি শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে বলা হচ্ছে কেন

কুমিল্লাকে ‘প্রস্রাবের স্থান’ বলে মন্তব্য বিএনপি নেতার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত