রিহ্যাব নির্বাচন: নেতৃত্ব বেছে নিতে এক যুগ পর ভোট দিচ্ছেন দেশের আবাসন ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ৩৮
Thumbnail image

প্রায় এক যুগ পর আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) নির্বাচন হচ্ছে। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশে (কেআইবি) আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ভোট গ্রহণ চলছে। বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।

নির্বাচনে ঢাকার ২৯ পরিচালক পদের বিপরীতে লড়ছেন ৮৬ জন প্রার্থী। আর চট্টগ্রামের তিনটি পরিচালক পদের বিপরীতে প্রার্থী আছেন সাতজন। সদস্যদের মধ্য থেকে মোট ভোটার হয়েছেন ৪৭৬ জন।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চারটি প্যানেল হয়েছে। প্যানেলগুলো হলো রিহ্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাপান গার্ডেন সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন ‘আবাসন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ’, সেঞ্চুরি রিয়্যালিটির চেয়ারম্যান এম জি আর নাসির মজুমদারের নেতৃত্বে ‘ডেভেলপারস ফোরাম’, রিহ্যাবের সাবেক সহসভাপতি নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ‘নবজাগরণ প্যানেল’ এবং সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও হামিদ রিয়েল এস্টেট কনস্ট্রাকশনের এমডি ইন্তেখাবুল হামিদের নেতৃত্ব ‘জয়ের ধারা প্যানেল’।

নির্বাচন অনুষ্ঠানে আদালতের ঘোষণার পর বাণিজ্য সংগঠনটির নির্বাচন নিয়ে প্রাণ ফেরে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে। ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে এরই মধ্যে একবার তারিখ পেছানো হয়েছে। নতুন সূচি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২৪-২৬ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালানো শেষ করেছেন প্রার্থীরা।

রিহ্যাবের এই নির্বাচন গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেই নির্বাচনের কমিশন গঠন এবং ভোটার তালিকায় অনিয়ম নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলার ঘটনাও ঘটে। একপর্যায়ে নির্বাচন স্থগিত হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত হয় সংগঠনটির সব ব্যাংক হিসাব। একই সঙ্গে নভেম্বরের শেষ দিকে রিহ্যাবের তৎকালীন কমিটির বর্ধিত মেয়াদ স্থগিত করে প্রশাসক বসায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রশাসক পদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জান্নাতুল ফেরদৌস দায়িত্ব নেন। তারপর নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণা করা হয়।

তবে নির্বাচনে ভোটের ভেন্যু নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে নানান কৌতূহল ছিল শুরু থেকেই। কারণ বিজিএমইএ ও রিহ্যাবের নির্বাচন সাধারণত পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আসন্ন নির্বাচনও রাজধানীর যেকোনো একটি পাঁচ তারকা হোটেলে করার অনুরোধ করেছিল প্রায় সব প্যানেলই। 

তবে নির্বাচন কমিশন খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটকে বেছে নিয়েছে। ভোটের দিন কোনো চাপ প্রয়োগ হতে পারে—এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন একাধিক প্রার্থী। তবে কমিশন বলছে, ভোট সুষ্ঠু করার জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ভোটের পরিবেশে যাতে বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য উপস্থিতি থাকবেন। 

এক প্রার্থী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রিহ্যাব নির্বাচন নিয়ে এখন শঙ্কা নেই, নির্বাচন হবে। তবে শঙ্কা হলো ভোটের পরিবেশ নিয়ে। আমরা চাই সুষ্ঠু ভোট। ভোটের মাধ্যমে প্রার্থীরা আসুক, এটা চাই। নির্বাচিত নেতা এলে সংগঠনকে বুঝতে পারবেন নেতারা।’

তবে ভোটার ও প্রার্থীদের সুষ্ঠু ভোটের বিষয়ে আশ্বস্ত করছে রিহ্যাব নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুব্রত কুমার দে (যুগ্ম-সচিব) বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, ভোটের পরিবেশ ভালো থাকবে। এ ছাড়া নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য উপস্থিত থাকবেন। স্ক্রিনের সাহায্যে দেখানো হবে ভোটের চিত্র। ভোটের পরিবেশ নিয়ে ঘণ্টায় ঘণ্টায় গণমাধ্যমকে ব্রিফ করা হবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুব্রত কুমার দে (যুগ্ম-সচিব) আরও বলেন, ‘খামারবাড়ির কেআইবিকে আমরা নির্বাচনের জন্য বেছে নিয়েছি। ভেন্যুতে ১৫টি বুথ থাকবে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ নেই। ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। এরই মধ্যে একাধিকবার ভেন্যু পরিদর্শন করেছি। কোনো সমস্যা হয়নি, আশা করছি আগামীতেও কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।’

এর আগে নির্বাচনের ভোট গ্রহণের স্থান নিয়ে নানা নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়। বারবার পরিবর্তন করা হয় ভোটের ভেন্যু। এর ফলে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে প্রার্থী-ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়। প্রথমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়। পরে গুলশান শুটিং ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কেআইবি নির্ধারণ করা হয়। চতুর্থ দফায় পরিবর্তন করে হোটেল রেডিসন ব্লুতে নেওয়া হয়। আর গত বৃহস্পতিবার পঞ্চম দফায় ভেন্যু পরিবর্তন করে পুনরায় কেআইবিতে নিয়ে আসা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত