চাপের মুখে সুদহার এবার ১৪ শতাংশে আটকানোর আশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৪, ১০: ০৪

ব্যাংকঋণের সুদহার নিয়ে কয়েক বছরে কয়েক রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বারবার এভাবে নীতি বদলে বিপাকে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। তাই তাঁরা গিয়েছিলেন নিজেদের দুশ্চিন্তা-উদ্বেগ জানাতে প্রতিকার চাইতে। তাঁদের দাবির মুখে আবারও নিজেদের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলেও এখন তা ১৪ শতাংশে আটকে দেওয়ার কথা বলা হলো।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন খাতের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা গতকাল বৃহস্পতিবার গিয়েছিলেন ব্যাংলাদেশ ব্যাংকে। ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের এ উদ্বেগের কথা জানান তাঁরা। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার তাঁদের কথা শুনে শিগগির সুদের হারে হস্তক্ষেপ করবেন বলে জানিয়েছেন।

বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম দলনেতা হিসেবে ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব দেন। এ সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন, বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট এস এম মান্নান কচি, বিকেএমইএর নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেমসহ অন্যরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

পরে বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুল আলম বলেন, ‘একটা ব্যবসা প্রজেক্ট (প্রকল্প) করার সময় সুদের হার, বিনিময় হারসহ নানাবিধ চিন্তাভাবনা করেই কার্যক্রম শুরু করা হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক অল্প সময় পরপর নীতিতে পরিবর্তন আনছে। এভাবে বারবার নীতি পরিবর্তন হলে ব্যবসায়ীরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করেছি যাতে নীতিগুলো বারবার পরিবর্তন না করে দীর্ঘমেয়াদি করা হয়।’

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আরও বলেন, ‘গর্ভনর এ বিষয়ে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আর ব্যবসায়ীদের ক্ষতি ঠেকাতে সুদের হার ভবিষ্যতে ১৪ শতাংশের মধ্য আটকে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন।’

৮ মে ব্যাংকঋণের সুদহার নির্ধারণ পদ্ধতি সিক্স মান্থ মুভিং অ্যাভারেজ রেট (স্মার্ট) প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হবে।

তার আগে গত ১০ জুলাইয়ে স্মার্ট সুদের হার পদ্ধতি চালু করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

ডলারসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আলম বলেন, ডলারের দাম একসঙ্গে ৭ টাকা বাড়ার কারণে যে পরিমাণ ঋণ বেড়েছে, সে পরিমাণ টাকার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের আবেদন করেছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ ডলারের দাম বাড়ার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকের ঋণে একক গ্রাহক ঋণসীমা অতিক্রম করেছে। তাদের জন্য বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছেন গভর্নর।

বিকেএমইএয়ের নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘আমরা ডলারের অভাবে এলসি খুলতে পারছি না। এদিকে ইডিএফ কমিয়ে তিন বিলিয়নে নামিয়ে আনা হয়েছে। এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এই সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিকল্প একটি তহবিল ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

বিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট এস এম মান্নান কচি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বিনিয়োগ অঞ্চল ছাড়া কোথাও ব্যাংকগুলো বড় বিনিয়োগ করতে পারবে না বলে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না করে বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন ভুল প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের অনেক অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে জায়গাও এখনো ঠিক হয়নি। আবার অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ছোট ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করার সক্ষমতা নেই। তাহলে তারা কীভাবে বিনিয়োগ করবে, কোথায় বিনিয়োগ করবে তার একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা দরকার। কিন্তু এসব পরিকল্পনা ছাড়াই প্রজ্ঞাপন দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ভুল সিদ্ধান্ত।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত