মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ বেশি দামে এলএনজি আমদানি করছে পেট্রোবাংলা। বেশি দামে এলএনজি কেনার প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে দেশের গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে। ভর্তুকির চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যার কারণে ফিরে আসছে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। শুধু তা-ই নয়, এলএনজির পেছনে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে গ্যাসের দামও বাড়াতে চায় সরকার।
পেট্রোবাংলার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি ৯ দশমিক ২০ মার্কিন ডলারে কিনেছিল পেট্রোবাংলা। তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তা কিনতে হয়েছে ১৩ দশমিক ৩২ ডলারে। ইউনিটপ্রতি দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ১২ ডলার।
অন্যদিকে একই সময়ে এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেড়েছে প্রায় চার গুণ। স্পট মার্কেটে গত বছরের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ গ্যাসের দাম ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। অথচ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সেই দাম বেড়ে হয়েছে প্রতি ইউনিট ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার। আমদানি-নির্ভরতার কারণে এই দামেই এলএনজি কিনতে হয়েছে পেট্রোবাংলাকেও।
গ্যাসের সমস্যা সমাধানে এলএনজির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার জন্য নীতিনির্ধারকদের অদূরদর্শিতা ও পরিকল্পনার অভাবকেই দায়ী করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম একসময় কম থাকায় নীতিনির্ধারকেরা দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তিতে অবহেলা করেছিলেন। স্পট মার্কেটে কম দামে পেলে কেন আমরা বেশি দামে দীর্ঘমেয়াদি টার্মে এলএনজি কিনতে যাব—এমনই ছিল তাঁদের মনোভাব। তাঁরা তখন বুঝতেই পারেননি যে স্পট মার্কেটের কম দাম ক্ষণস্থায়ী। স্পট মার্কেটের দামের ওপর নির্ভর না করতে আমরা বারবার বললেও পেট্রোবাংলা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। এখন তাঁরা এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ ওঠাতে গ্যাসের দাম বাড়াতে চায়। কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে।’
সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি না করে স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন এলএনজি সরবরাহের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করি, তখন স্পট মার্কেটের দাম দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহের চেয়ে অনেক কম ছিল। আমাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি বলেন বা যা-ই বলেন স্পট মার্কেটের দাম বেড়ে আকাশে উঠবে –এটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।’
স্থানীয় উৎস থেকে গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমুল আহসান বলেন, ‘অতীতে অফশোর ও অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা বিভিন্ন সময় টেন্ডার আহ্বান করলেও প্রত্যাশিত সাড়া পাইনি। অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, যা শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।’
দেশের অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্যাসের চাহিদা। গ্যাসের জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস খোঁজার পরিবর্তে ঝুঁকছে আমদানিনির্ভর এলএনজির দিকে। এই আমদানিনির্ভরতা দেশের সার্বিক অর্থনীতির ওপর ভালো ফল বয়ে আনবে না–এমন সতর্কবার্তা শুরু থেকেই দিয়ে এসেছেন বিশ্লেষকেরা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এলএনজির দাম বাড়ার কারণে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল দেশীয় রপ্তানিমুখী খাতগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে এবং সর্বোপরি জ্বালানি সরবরাহে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।’
বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে। বেশি দামে গ্যাস ক্রয় করতে গিয়ে একদিকে সরকারের ওপর ভর্তুকির চাপ বাড়বে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়বে—এমন সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে।
বর্তমান পরিস্থিতি তাদের সতর্কবার্তারই প্রতিফলন বলা যায়। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে পেট্রোবাংলার অবস্থা এখন চিড়েচেপ্টা। সংস্থাটি একদিকে সরকারের দিক থেকে ভর্তুকির কমানোর চাপে আছে। অন্যদিকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করতে হচ্ছে তাদের। ২০২১-২২ অর্থবছরে এলএনজি আমদানির জন্য পেট্রোবাংলাকে দেওয়া সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামনের অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ আরও বাড়বে।
স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বাড়ার মধ্যেই মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে কাতারের রাসগ্যাস এবং ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল এলএনজি কর্তৃক কার্গো সরবরাহ কমানোর আভাস। মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি করেছিল পেট্রোবাংলা।
চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠান দুটি পেট্রোবাংলাকে বছরে ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ৬৪ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করার কথা। চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সরবরাহ করেছে ৫৩ কার্গো। এর আগে এলএনজির বাজার স্থিতিশীল থাকায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৮ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করেছিল তারা।
পেট্রোবাংলা গ্যাসের বড় অংশই সরবরাহ করে বিদ্যুৎ খাতে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪২ শতাংশ আসে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। গ্যাসের ওপর চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
পেট্রোবাংলা এলএনজি গ্যাস আমদানি শুরু করে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়তে শুরু করে ২০২১ সাল থেকে। গত বছরের শেষের দিকে করোনা মহামারির অভিঘাত কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় বিশ্ব অর্থনীতির চাকা আবারও ঘুরতে শুরু করলে এলএনজির দাম চড়তে শুরু করে।
জ্বালানি তেল ও গ্যাসের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডটি ইনসাইটসের মতে, ২০২০ সালের অক্টোবরে এশিয়ার বাজারে স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল মাত্র ৬ মার্কিন ডলার। পরবর্তী সময়ে দাম বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালের অক্টোবরে প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৬ দশমিক ৩২৬ মার্কিন ডলারে ঠেকে। আর ২০২২ সালের এপ্রিলে দাম বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৯ ডলার। স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস কেনার কারণে দাম বাড়ার ঘা সইতে হচ্ছে পেট্রোবাংলাকেও।
দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি ক্রয়
পেট্রোবাংলা ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার রাসগ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ৫৩টি কার্গোতে করে ১৬ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৫৮ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করে। এতে খরচ পড়ে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে কাতারের রাসগ্যাস থেকে ৩৭টি কার্গোতে করে ১১ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫৪ এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনা হয়। এতে খরচ পড়ে ১২৮ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। অন্যদিকে ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ১৬টি কার্গোতে করে ৫ কোটি ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৪ এমএমবিটিইউ গ্যাস আমদানি করা হয়। এ জন্য পেট্রোবাংলাকে গুনতে হয় ৪৮ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার।
স্পট মার্কেট থেকে ক্রয়
স্পট মার্কেটে ২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। কিন্তু ৯ মাসের ব্যবধানে চলতি বছরের এপ্রিলে এসে প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার।
স্পট মার্কেটে পেট্রোবাংলাকে এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ভিটল এশিয়া, এক্সিলারেট এনার্জি এলপি, এওটি ট্রেডিং এজি এবং টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৩ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করেছে পেট্রোবাংলা। ১৩টি কার্গোতে করে এসব গ্যাস আসে। এতে আমদানি খরচ পড়ে ১৪৩ কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আরও চারটি এলএনজি কার্গো স্পট মার্কেট থেকে ক্রয় করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে পেট্রোবাংলা। সংস্থাটি জানিয়েছে, জুন ও জুলাই মাসে এই চার কার্গো পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
হুমকির মুখে পড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয়ের কারণে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ইনডিপেনডেন্ট কমোডটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেসের আইসিআইএস এলএনজি গ্লোবাল সাপ্লাই অ্যান্ড ডিমান্ড আউটলুক-২০২২ প্রতিবেদনে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘২০২২ সালে এই তিন দেশে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজির চাহিদা ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন হবে। কাতারের রাসগ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি সরবরাহ করতে না চাওয়ায় বাংলাদেশে গ্যাস-সংকট দেখা দেবে।’
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি প্রকাশিত শুক্রবার ইন্টেলিজেন্স প্রকাশিত ‘২০২২ আউটলুক: গ্লোবাল লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস’ রিপোর্টে বলা হয় বাংলাদেশে দিন দিন গ্যাসের মজুত কমে যাওয়ায় ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেল ও কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর ফলে আমদানি করা গ্যাসের দাম বাড়বে।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ বেশি দামে এলএনজি আমদানি করছে পেট্রোবাংলা। বেশি দামে এলএনজি কেনার প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে দেশের গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে। ভর্তুকির চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যার কারণে ফিরে আসছে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। শুধু তা-ই নয়, এলএনজির পেছনে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে গ্যাসের দামও বাড়াতে চায় সরকার।
পেট্রোবাংলার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি ৯ দশমিক ২০ মার্কিন ডলারে কিনেছিল পেট্রোবাংলা। তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তা কিনতে হয়েছে ১৩ দশমিক ৩২ ডলারে। ইউনিটপ্রতি দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ১২ ডলার।
অন্যদিকে একই সময়ে এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেড়েছে প্রায় চার গুণ। স্পট মার্কেটে গত বছরের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ গ্যাসের দাম ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। অথচ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সেই দাম বেড়ে হয়েছে প্রতি ইউনিট ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার। আমদানি-নির্ভরতার কারণে এই দামেই এলএনজি কিনতে হয়েছে পেট্রোবাংলাকেও।
গ্যাসের সমস্যা সমাধানে এলএনজির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার জন্য নীতিনির্ধারকদের অদূরদর্শিতা ও পরিকল্পনার অভাবকেই দায়ী করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম একসময় কম থাকায় নীতিনির্ধারকেরা দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তিতে অবহেলা করেছিলেন। স্পট মার্কেটে কম দামে পেলে কেন আমরা বেশি দামে দীর্ঘমেয়াদি টার্মে এলএনজি কিনতে যাব—এমনই ছিল তাঁদের মনোভাব। তাঁরা তখন বুঝতেই পারেননি যে স্পট মার্কেটের কম দাম ক্ষণস্থায়ী। স্পট মার্কেটের দামের ওপর নির্ভর না করতে আমরা বারবার বললেও পেট্রোবাংলা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। এখন তাঁরা এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ ওঠাতে গ্যাসের দাম বাড়াতে চায়। কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে।’
সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি না করে স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন এলএনজি সরবরাহের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করি, তখন স্পট মার্কেটের দাম দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহের চেয়ে অনেক কম ছিল। আমাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি বলেন বা যা-ই বলেন স্পট মার্কেটের দাম বেড়ে আকাশে উঠবে –এটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।’
স্থানীয় উৎস থেকে গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমুল আহসান বলেন, ‘অতীতে অফশোর ও অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা বিভিন্ন সময় টেন্ডার আহ্বান করলেও প্রত্যাশিত সাড়া পাইনি। অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, যা শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।’
দেশের অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্যাসের চাহিদা। গ্যাসের জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস খোঁজার পরিবর্তে ঝুঁকছে আমদানিনির্ভর এলএনজির দিকে। এই আমদানিনির্ভরতা দেশের সার্বিক অর্থনীতির ওপর ভালো ফল বয়ে আনবে না–এমন সতর্কবার্তা শুরু থেকেই দিয়ে এসেছেন বিশ্লেষকেরা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এলএনজির দাম বাড়ার কারণে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল দেশীয় রপ্তানিমুখী খাতগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে এবং সর্বোপরি জ্বালানি সরবরাহে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।’
বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে। বেশি দামে গ্যাস ক্রয় করতে গিয়ে একদিকে সরকারের ওপর ভর্তুকির চাপ বাড়বে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়বে—এমন সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে।
বর্তমান পরিস্থিতি তাদের সতর্কবার্তারই প্রতিফলন বলা যায়। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে পেট্রোবাংলার অবস্থা এখন চিড়েচেপ্টা। সংস্থাটি একদিকে সরকারের দিক থেকে ভর্তুকির কমানোর চাপে আছে। অন্যদিকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করতে হচ্ছে তাদের। ২০২১-২২ অর্থবছরে এলএনজি আমদানির জন্য পেট্রোবাংলাকে দেওয়া সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামনের অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ আরও বাড়বে।
স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বাড়ার মধ্যেই মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে কাতারের রাসগ্যাস এবং ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল এলএনজি কর্তৃক কার্গো সরবরাহ কমানোর আভাস। মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি করেছিল পেট্রোবাংলা।
চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠান দুটি পেট্রোবাংলাকে বছরে ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ৬৪ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করার কথা। চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সরবরাহ করেছে ৫৩ কার্গো। এর আগে এলএনজির বাজার স্থিতিশীল থাকায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৮ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করেছিল তারা।
পেট্রোবাংলা গ্যাসের বড় অংশই সরবরাহ করে বিদ্যুৎ খাতে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪২ শতাংশ আসে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। গ্যাসের ওপর চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
পেট্রোবাংলা এলএনজি গ্যাস আমদানি শুরু করে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়তে শুরু করে ২০২১ সাল থেকে। গত বছরের শেষের দিকে করোনা মহামারির অভিঘাত কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় বিশ্ব অর্থনীতির চাকা আবারও ঘুরতে শুরু করলে এলএনজির দাম চড়তে শুরু করে।
জ্বালানি তেল ও গ্যাসের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডটি ইনসাইটসের মতে, ২০২০ সালের অক্টোবরে এশিয়ার বাজারে স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল মাত্র ৬ মার্কিন ডলার। পরবর্তী সময়ে দাম বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালের অক্টোবরে প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৬ দশমিক ৩২৬ মার্কিন ডলারে ঠেকে। আর ২০২২ সালের এপ্রিলে দাম বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৯ ডলার। স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস কেনার কারণে দাম বাড়ার ঘা সইতে হচ্ছে পেট্রোবাংলাকেও।
দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি ক্রয়
পেট্রোবাংলা ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার রাসগ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ৫৩টি কার্গোতে করে ১৬ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৫৮ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করে। এতে খরচ পড়ে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে কাতারের রাসগ্যাস থেকে ৩৭টি কার্গোতে করে ১১ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫৪ এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনা হয়। এতে খরচ পড়ে ১২৮ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। অন্যদিকে ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ১৬টি কার্গোতে করে ৫ কোটি ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৪ এমএমবিটিইউ গ্যাস আমদানি করা হয়। এ জন্য পেট্রোবাংলাকে গুনতে হয় ৪৮ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার।
স্পট মার্কেট থেকে ক্রয়
স্পট মার্কেটে ২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। কিন্তু ৯ মাসের ব্যবধানে চলতি বছরের এপ্রিলে এসে প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার।
স্পট মার্কেটে পেট্রোবাংলাকে এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ভিটল এশিয়া, এক্সিলারেট এনার্জি এলপি, এওটি ট্রেডিং এজি এবং টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৩ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করেছে পেট্রোবাংলা। ১৩টি কার্গোতে করে এসব গ্যাস আসে। এতে আমদানি খরচ পড়ে ১৪৩ কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আরও চারটি এলএনজি কার্গো স্পট মার্কেট থেকে ক্রয় করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে পেট্রোবাংলা। সংস্থাটি জানিয়েছে, জুন ও জুলাই মাসে এই চার কার্গো পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
হুমকির মুখে পড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয়ের কারণে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ইনডিপেনডেন্ট কমোডটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেসের আইসিআইএস এলএনজি গ্লোবাল সাপ্লাই অ্যান্ড ডিমান্ড আউটলুক-২০২২ প্রতিবেদনে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘২০২২ সালে এই তিন দেশে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজির চাহিদা ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন হবে। কাতারের রাসগ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি সরবরাহ করতে না চাওয়ায় বাংলাদেশে গ্যাস-সংকট দেখা দেবে।’
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি প্রকাশিত শুক্রবার ইন্টেলিজেন্স প্রকাশিত ‘২০২২ আউটলুক: গ্লোবাল লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস’ রিপোর্টে বলা হয় বাংলাদেশে দিন দিন গ্যাসের মজুত কমে যাওয়ায় ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেল ও কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর ফলে আমদানি করা গ্যাসের দাম বাড়বে।

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৭ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১২ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৮ ঘণ্টা আগেরোকন উদ্দীন, ঢাকা

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজারে বাংলাদেশের অংশ এখনো মাত্র ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাড়ে ৫ শতাংশ।
এই অবস্থান আরও স্পষ্ট হয় ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়। ইউরোপের তৈরি পোশাক আমদানির প্রায় অর্ধেকই আসে বাংলাদেশ থেকে, আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শীর্ষ সরবরাহকারীর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। তবু জাপানের মতো স্থিতিশীল ও উচ্চমূল্যের বাজারে বাংলাদেশ এখনো ব্যবহৃত সুযোগের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। পরিসংখ্যান তা-ই বলে—এখানে এখনো বড় জায়গা খালি রয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যও সেই সম্ভাবনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। ২০২৪ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার; যার মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ জাপান এখন বাংলাদেশের ১২তম রপ্তানি গন্তব্য।
তবে চলতি অর্থবছরের গত কয়েক মাসের প্রবণতা বাজারের পরিবর্তন আরও স্পষ্ট করে। ইপিবির সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাপানে রপ্তানি হয়েছে ২২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া এ সময়ে দ্বিতীয় বৃহৎ অপ্রচলিত বাজার হলেও সেখানে রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশ। ফলে জাপান এখন অপ্রচলিত রপ্তানি বাজারে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা গন্তব্য হিসেবে সামনে আসছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও স্থিতিশীল একটি বাজার হলো জাপান। সরকারের পর্যালোচনায়ও বিষয়টি রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে দ্রুত কাজে লাগাতে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি, যা সম্পন্ন হলে রপ্তানি আশানুরূপ বাড়ানো সম্ভব হবে।’
জাপানের এই উত্থান কাকতাল নয়। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ-ঝুঁকি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ায় আমদানিকারকেরা নতুন বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। আর জাপান এমন একটি বাজার, যেখানে মূল্য-সুবিধার পাশাপাশি গুণগত মান, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং দ্রুত বদলে যাওয়া ফ্যাশন-চাহিদার প্রতি গুরুত্ব বেশি। এসব মানদণ্ড পূরণ করতে পারলে বাজারটি দীর্ঘমেয়াদি ও নিশ্চিত প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেয়।
কিন্তু এখানেই চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট। জাপানি ক্রেতারা ছোট পরিমাণের অর্ডার দেন, মূল্য নিয়ে আগাম ছাড় পাওয়া সহজ নয়, আর প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ কমপ্লায়েন্স অপরিহার্য। এ বিষয়ে দেশের অন্যতম প্রস্তুতকারক টিম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহিল নকিব জানান, ‘অর্ডারের কঠোর ইন্সপেকশন বাংলাদেশে জাপানের অর্ডার ধরার সবচেয়ে বড় বাধা। মান নিশ্চিত না হলে তারা একটিও পণ্য নেয় না।’
এই কঠোরতা একদিকে বাধা, আবার অন্যদিকে সুবিধা। কারণ যে প্রতিষ্ঠান একবার জাপানের মান ধরে রাখতে পারে, তাদের জন্য বাজারটি স্থিতিশীল থাকে। জাপানি ব্র্যান্ডগুলো সরবরাহকারী খুব সহজে বদলায় না, ফলে দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয়।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, বৈশ্বিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়াতে পারলে অপ্রচলিত বাজারগুলোই ভবিষ্যতের বড় নিরাপত্তা হয়ে উঠবে।

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজারে বাংলাদেশের অংশ এখনো মাত্র ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাড়ে ৫ শতাংশ।
এই অবস্থান আরও স্পষ্ট হয় ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়। ইউরোপের তৈরি পোশাক আমদানির প্রায় অর্ধেকই আসে বাংলাদেশ থেকে, আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শীর্ষ সরবরাহকারীর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। তবু জাপানের মতো স্থিতিশীল ও উচ্চমূল্যের বাজারে বাংলাদেশ এখনো ব্যবহৃত সুযোগের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। পরিসংখ্যান তা-ই বলে—এখানে এখনো বড় জায়গা খালি রয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যও সেই সম্ভাবনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। ২০২৪ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার; যার মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ জাপান এখন বাংলাদেশের ১২তম রপ্তানি গন্তব্য।
তবে চলতি অর্থবছরের গত কয়েক মাসের প্রবণতা বাজারের পরিবর্তন আরও স্পষ্ট করে। ইপিবির সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাপানে রপ্তানি হয়েছে ২২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া এ সময়ে দ্বিতীয় বৃহৎ অপ্রচলিত বাজার হলেও সেখানে রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশ। ফলে জাপান এখন অপ্রচলিত রপ্তানি বাজারে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা গন্তব্য হিসেবে সামনে আসছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও স্থিতিশীল একটি বাজার হলো জাপান। সরকারের পর্যালোচনায়ও বিষয়টি রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে দ্রুত কাজে লাগাতে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি, যা সম্পন্ন হলে রপ্তানি আশানুরূপ বাড়ানো সম্ভব হবে।’
জাপানের এই উত্থান কাকতাল নয়। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ-ঝুঁকি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ায় আমদানিকারকেরা নতুন বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। আর জাপান এমন একটি বাজার, যেখানে মূল্য-সুবিধার পাশাপাশি গুণগত মান, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং দ্রুত বদলে যাওয়া ফ্যাশন-চাহিদার প্রতি গুরুত্ব বেশি। এসব মানদণ্ড পূরণ করতে পারলে বাজারটি দীর্ঘমেয়াদি ও নিশ্চিত প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেয়।
কিন্তু এখানেই চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট। জাপানি ক্রেতারা ছোট পরিমাণের অর্ডার দেন, মূল্য নিয়ে আগাম ছাড় পাওয়া সহজ নয়, আর প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ কমপ্লায়েন্স অপরিহার্য। এ বিষয়ে দেশের অন্যতম প্রস্তুতকারক টিম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহিল নকিব জানান, ‘অর্ডারের কঠোর ইন্সপেকশন বাংলাদেশে জাপানের অর্ডার ধরার সবচেয়ে বড় বাধা। মান নিশ্চিত না হলে তারা একটিও পণ্য নেয় না।’
এই কঠোরতা একদিকে বাধা, আবার অন্যদিকে সুবিধা। কারণ যে প্রতিষ্ঠান একবার জাপানের মান ধরে রাখতে পারে, তাদের জন্য বাজারটি স্থিতিশীল থাকে। জাপানি ব্র্যান্ডগুলো সরবরাহকারী খুব সহজে বদলায় না, ফলে দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয়।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, বৈশ্বিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়াতে পারলে অপ্রচলিত বাজারগুলোই ভবিষ্যতের বড় নিরাপত্তা হয়ে উঠবে।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ ব
০৪ জুন ২০২২
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১২ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আট দিনব্যাপী ১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন উদ্যোক্তারা। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ১৬ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। আজ রোববার আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত ইয়াসমিন ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুমী এ আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে ১১টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ৩ হাজার উদ্যোক্তা তাঁদের পণ্য বিক্রি করেছেন। ১১টি পণ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ৫৭ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৯৩ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছেন।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
শতভাগ দেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ৭ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে প্রায় সাড়ে তিন শ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৪টি প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া হস্ত ও কারুশিল্পের ৫৪টি, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৪০টি; পাটজাত পণ্যের ৩৫টি; কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৮টি; শতরঞ্জি, বাঁশ, বেত, হোগলা, সুপারিখোল ও কাঠের ১৫টি; খাদ্যপণ্যের ১৪টি; লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ১৩টি; জুয়েলারি শিল্পের ৯টি; প্রসাধন খাতের সাতটি; তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের পাঁচটি; হারবাল–ভেষজশিল্পের পাঁচটি; প্লাস্টিক পণ্যের পাঁচটি; ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস খাতের তিনটি, ফার্নিচার খাতের তিনটি এবং অন্যান্য খাতের ১১টি স্টল।
মেলায় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী শিল্প মন্ত্রণালয়ের আটটি দপ্তর-সংস্থাসহ সরকারের প্রায় ১৫টি সংস্থা, প্রায় ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
মেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, পণ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও পণ্যের হালাল সনদ প্রাপ্তি, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ট্রেড মার্ক ও জি আই স্বীকৃতি, স্কিলস ইকোসিস্টেম বিষয়ে ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

আট দিনব্যাপী ১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন উদ্যোক্তারা। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ১৬ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। আজ রোববার আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত ইয়াসমিন ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুমী এ আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে ১১টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ৩ হাজার উদ্যোক্তা তাঁদের পণ্য বিক্রি করেছেন। ১১টি পণ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ৫৭ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৯৩ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছেন।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
শতভাগ দেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ৭ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে প্রায় সাড়ে তিন শ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৪টি প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া হস্ত ও কারুশিল্পের ৫৪টি, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৪০টি; পাটজাত পণ্যের ৩৫টি; কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৮টি; শতরঞ্জি, বাঁশ, বেত, হোগলা, সুপারিখোল ও কাঠের ১৫টি; খাদ্যপণ্যের ১৪টি; লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ১৩টি; জুয়েলারি শিল্পের ৯টি; প্রসাধন খাতের সাতটি; তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের পাঁচটি; হারবাল–ভেষজশিল্পের পাঁচটি; প্লাস্টিক পণ্যের পাঁচটি; ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস খাতের তিনটি, ফার্নিচার খাতের তিনটি এবং অন্যান্য খাতের ১১টি স্টল।
মেলায় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী শিল্প মন্ত্রণালয়ের আটটি দপ্তর-সংস্থাসহ সরকারের প্রায় ১৫টি সংস্থা, প্রায় ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
মেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, পণ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও পণ্যের হালাল সনদ প্রাপ্তি, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ট্রেড মার্ক ও জি আই স্বীকৃতি, স্কিলস ইকোসিস্টেম বিষয়ে ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ ব
০৪ জুন ২০২২
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৭ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১২ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে তাজা ফলের ওপর শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুরের মতোই এবার আপেল, কমলা, আঙুর, মেস্তারিন, নাশপাতি ইত্যাদি তাজা ফলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেওয়া এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়। রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপণ্য বিবেচনায় এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আনার আমদানিতে মোট শুল্ক-কর রয়েছে ১২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আপেল, মাল্টা, আনার ইত্যাদি ফলের স্থানীয় উৎপাদন নেই; তাই এই উচ্চহারে শুল্ক-কর রাখার প্রয়োজনীয়তা সীমিত।
অন্যদিকে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপের ফলে বৈধ পথে আমদানি কমে তা অবৈধ পথে আমদানিকে উৎসাহিত করতে পারে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিমাত্রায় বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতাও বাড়তে পারে। উচ্চ শুল্ক-করের ফলে তাজা ফলের আমদানি কমার ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু ভোক্তাসাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; ভবিষ্যতে রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তাজা ফলকে ‘বিলাস পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে নিত্যপণ্য আইন, ১৯৫৬ অনুযায়ী খাদ্যপণ্য হিসেবে তাজা ফল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ বিধায় এর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার বা যৌক্তিক করা যেতে পারে।

আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে তাজা ফলের ওপর শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুরের মতোই এবার আপেল, কমলা, আঙুর, মেস্তারিন, নাশপাতি ইত্যাদি তাজা ফলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেওয়া এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়। রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপণ্য বিবেচনায় এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আনার আমদানিতে মোট শুল্ক-কর রয়েছে ১২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আপেল, মাল্টা, আনার ইত্যাদি ফলের স্থানীয় উৎপাদন নেই; তাই এই উচ্চহারে শুল্ক-কর রাখার প্রয়োজনীয়তা সীমিত।
অন্যদিকে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপের ফলে বৈধ পথে আমদানি কমে তা অবৈধ পথে আমদানিকে উৎসাহিত করতে পারে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিমাত্রায় বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতাও বাড়তে পারে। উচ্চ শুল্ক-করের ফলে তাজা ফলের আমদানি কমার ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু ভোক্তাসাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; ভবিষ্যতে রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তাজা ফলকে ‘বিলাস পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে নিত্যপণ্য আইন, ১৯৫৬ অনুযায়ী খাদ্যপণ্য হিসেবে তাজা ফল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ বিধায় এর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার বা যৌক্তিক করা যেতে পারে।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ ব
০৪ জুন ২০২২
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৭ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘দেশে শুধু ভোটাররাই নন, রাজনীতিবিদেরাও এখন বিপন্নতার মধ্যে রয়েছেন।’

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির ফেলো।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে সাধারণত ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের কথা উঠে আসে। তবে এর সঙ্গে বড় একটি বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে সিপিডির এই ফেলো বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার পর এখন নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, গত দেড় মাসে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ প্ল্যাটফর্ম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাক্-নির্বাচনী সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে একটি নাগরিক ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব জায়গায় গিয়েছি, প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তার বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে কি না, এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন।’
সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্তমানে সংস্কার-সংক্রান্ত বিতর্কের ভিত তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, রাজনীতিবিদ, আমলা ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি এলিট গোষ্ঠী প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে দুর্বল করেছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতি।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ক্রনি ক্যাপিটালিজম ও একটি অলিগার্কিক ব্যবস্থা, যেখানে নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমান উদ্যোগটি আলাদা, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কমিশন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেও তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে যে গতি তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বচ্ছতা, সমন্বয় ও যোগাযোগ সব সময় পর্যাপ্ত ছিল না। আর শুধু পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সফল করা সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন নাগরিকদের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ।’
তাঁর মতে, সংস্কার শুধু পরিকল্পনা বা উদ্দীপনার বিষয় নয়। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নাগরিকদের সচেতনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘দেশে শুধু ভোটাররাই নন, রাজনীতিবিদেরাও এখন বিপন্নতার মধ্যে রয়েছেন।’

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির ফেলো।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে সাধারণত ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের কথা উঠে আসে। তবে এর সঙ্গে বড় একটি বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে সিপিডির এই ফেলো বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার পর এখন নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, গত দেড় মাসে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ প্ল্যাটফর্ম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাক্-নির্বাচনী সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে একটি নাগরিক ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব জায়গায় গিয়েছি, প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তার বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে কি না, এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন।’
সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্তমানে সংস্কার-সংক্রান্ত বিতর্কের ভিত তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, রাজনীতিবিদ, আমলা ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি এলিট গোষ্ঠী প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে দুর্বল করেছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতি।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ক্রনি ক্যাপিটালিজম ও একটি অলিগার্কিক ব্যবস্থা, যেখানে নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমান উদ্যোগটি আলাদা, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কমিশন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেও তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে যে গতি তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বচ্ছতা, সমন্বয় ও যোগাযোগ সব সময় পর্যাপ্ত ছিল না। আর শুধু পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সফল করা সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন নাগরিকদের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ।’
তাঁর মতে, সংস্কার শুধু পরিকল্পনা বা উদ্দীপনার বিষয় নয়। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নাগরিকদের সচেতনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ ব
০৪ জুন ২০২২
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৭ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১২ ঘণ্টা আগে