Ajker Patrika

বাজেটে বড় পরিবর্তন নেই, কালোটাকার সঙ্গে থাকছে এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ির সুবিধা

আপডেট : ২৮ জুন ২০২৪, ১৭: ০০
বাজেটে বড় পরিবর্তন নেই, কালোটাকার সঙ্গে থাকছে এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ির সুবিধা

ছোটখাটো কয়েকটি সংশোধনীর মধ্য দিয়ে আগামী শনিবার পাস হতে যাচ্ছে প্রস্তাবিত বাজেটের অর্থবিল। নানান সমালোচনার মধ্যেও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করা, পুঁজিবাজারের গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহার হচ্ছে না। এমনকি এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানিতে শুল্ক আরোপের যে প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল, সেটিও বাজেটে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। তবে হাই-টেক পার্ক ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাঁচামাল আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারে এনবিআর। শেষ পর্যন্ত এসব খাতে শুল্ক আরোপ না-ও হতে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে বিনা প্রশ্নে ব্যক্তি ও কোম্পানির ক্ষেত্রে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় মাত্র ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে তা বৈধ করার প্রস্তাব রেখেছেন। তবে এ ঘোষণার পরই দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। বলা হয়, এটা সৎ করদাতাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হবে। যেখানে একজন সৎ করদাতা তাঁর কষ্টার্জিত আয়ের ওপর সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর দেবেন, সেখানে একজন অসৎ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তা করবেন মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে।

সমালোচনার একপর্যায়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ ব্যক্তি খাতে না দিয়ে কোম্পানি খাতে দেওয়ার দাবি জানিয়ে এনবিআরকে চিঠি দেয়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এনবিআর কালোটাকার সুযোগ দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, তাতে আর কোনো পরিবর্তন আসছে না। ফলে ১৫ শতাংশ কর দিয়েই আসছে বাজেটে সব ধরনের করদাতা ও কোম্পানি অবৈধ অর্থ বৈধ করতে পারবেন।

 এদিকে সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিলাসবহুল গাড়ি আমদানির সুযোগ কমিয়ে কিছুটা শুল্ক-কর আরোপের চিন্তা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। বাজেটে তিনি সংসদ সদস্যদের এ খাতে কর আরোপ করতে আইনের সংশোধনী আনতে উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তবে এ রকম কোনো আভাস সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। বরং তাঁদের অনেকে আগের মতো শুল্কমুক্ত সুবিধায়ই গাড়ি আমদানির পক্ষে বলে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে মত দিয়েছেন। ফলে আসছে বাজেটে এ উদ্যোগ কার্যকর হচ্ছে না।

প্রস্তাবিত বাজেটে হাই-টেক পার্ক ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্পের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। এরপরই এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। ফরেন চেম্বারসহ সংশ্লিষ্টরা আপত্তি করেন। তাঁরা দাবি করেন, এর ফলে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শূন্য শুল্কে কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুযোগ থাকার কারণেই এ দেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসেন। কিন্তু আকস্মিক শুল্ক আরোপ করায় তাঁদের বিনিয়োগে খরচ বেড়ে যাওয়ার যুক্তিতে তাঁরা পিছিয়ে যাবেন বলে মনে করা হয়। তাই বাজেটে এ শুল্ক প্রত্যাহার করার দাবি জানান। এসব বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত বাজেটে ১ শতাংশ শুল্ক বাতিল হতে পারে।

প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে অর্জিত ক্যাপিটাল গেইনের ওপর এবার কর আরোপ করা হয়েছে। যাঁদের মুনাফা ৫০ লাখ টাকার বেশি, আসছে বাজেটে ১৫ শতাংশ হারে তাঁদের গেইন ট্যাক্স দেওয়ার কথা বলা হয়। এর ফলে পতনের মধ্যে থাকা বাজার আরও খারাপের দিকে যাবে মন্তব্য করে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার এ কর বাতিলের দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন। যদিও এনবিআর এ কর প্রত্যাহার করছে না বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত