নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি: ১২ জনের তথ্য খতিয়ে দেখছে বিএফআইইউ

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ৫৭
Thumbnail image

অভিনব কায়দায় পোলট্রি ফিডের মূলধনি যন্ত্রপাতির আড়ালে কোকেন, মদ, সিগারেট ও এলইডি টেলিভিশন আমদানির ঘটনায় আইএফআইসি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাসহ ১২ জনের আয়ের হিসাব খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এরই মধ্যে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে তাঁদের যাবতীয় তথ্য নেওয়া হয়েছে। সংস্থাটির সন্দেহ, এই কর্মকাণ্ডে বিপুল মুদ্রা পাচার হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ঢাকার অ্যাগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপি এবং হেনান আনহুই অ্যাগ্রো লিমিটেডের নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে পোলট্রি ফিডমিলের ঘোষণা দিয়ে কোকেন, মদ, এলইডি টেলিভিশন ও ফটোকপি মেশিন আমদানি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দুজন ব্যবসায়ী, আইএফআইসি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা, কাস্টমসের চার কর্মকর্তা, একজন নিরাপত্তা প্রহরী ও দুজন গাড়িচালকের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। ঘটনাটি তদন্ত করছে বিএফআইইউসহ একটি যৌথ তদন্ত দল।

বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেসার্স অ্যাগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপি এবং মেসার্স হেনান আনহুই অ্যাগ্রো নামক প্রতিষ্ঠান দুটি মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করেছে। অর্থ পাচার হয়েছে। যাদের গাফিলতি রয়েছে, তাদের ব্যাংক হিসাব ও সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, হেনান আনহুই অ্যাগ্রো মূলধনি যন্ত্রপাতির জন্য এলসি খুলে ২০১৬ সালের জুন ও জুলাই মাসে পাঁচটি কনটেইনারের মাধ্যমে ২৫ হাজার ৮০১ ডলারের মদ, সিগারেট, টেলিভিশনসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে। এসব পণ্য আমদানির জন্য ভুয়া নাম, ছবি, ঠিকানা, এনআইডি, মূসক নিবন্ধন নম্বর, ভুয়া দলিল ব্যবহার করা হয়েছে। পরে কনটেইনারগুলো লাপাত্তা হয়। এ ছাড়া জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক হিসাব ও এলসি খুলে আমদানির কথা বলে ৬৯ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে পাচার করা হয়। এ ঘটনায় রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় মামলা হয়। 

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) তদন্তে উঠে এসেছে, অ্যাগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপি ৯টি এলসির বিপরীতে ৯টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে আমদানি করা ৪৬টি কনটেইনার এবং হেনান আনহুই অ্যাগ্রো ৬টি এলসির বিপরীতে ৬টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ৩২ কনটেইনারসহ মোট ৭৮ কনটেইনার মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির ঘোষণা দিয়েছিল।

জানতে চাইলে সিআইআইডির মহাপরিচালক মোহাম্মদ ফখরুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেসার্স অ্যাগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপি এবং মেসার্স হেনান আনহুই অ্যাগ্রো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কারখানার মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির কথা বলে কোকেন, মদ ও এলইডি টেলিভিশন আমদানি করা হয়। আবার কনটেইনার লাপাত্তা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলাও হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে বিভিন্ন আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।

আইএফআইসি ব্যাংকের নয়াপল্টন শাখার ব্যবস্থাপক আমির হোসেন বলেন, ‘আমাদের শাখা এডি (অথরাইজড ডিলার) শাখা না হওয়ায় এলসি খোলার জন্য গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব তাদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ফেডারেশন শাখায় স্থানান্তর করা হয়েছিল।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও শাহ আলম সারওয়ারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করে এবং খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত