মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
২০২৪ সাল বাংলাদেশের জন্য ছিল বিনিয়োগ স্থবিরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি চ্যালেঞ্জিং বছর। বিদায় হতে যাওয়া বছরটিতে প্রকাশিত হয়, শেখ হাসিনা সরকার গত ১৫ বছরে উন্নয়নের ব্যানারে দুর্নীতি ও অনিয়মের গভীর ছাপ রেখে গেছেন। সরকারি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ঘিরে ন্যূনতম ২৮ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে হয় অপচয় ও অর্থ লোপাট। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রতিবছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে, যা দেশের পাঁচটি জাতীয় বাজেটের সমান।
গত ২৮ আগস্ট দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার। এই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আর ২ ডিসেম্বর একনে সম্মেলন কক্ষে শ্বেতপত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
শ্বেতপত্র প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত লোপাট করা এই অর্থের মধ্যে গত ১৫ বছরে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। বিগত সরকারের আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের রাঘববোয়াল, আমলা ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এই অর্থ পাচার করেছে।
মেগা প্রকল্পে লোপাট
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উন্নয়নের নামে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ব্যয় ছাড়াও পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দেশের সাতটি মেগা প্রকল্পের ৮০ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এই সাতটি প্রকল্পের কোনো কোনোটির ব্যয় প্রায় ৯০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে অর্থ লোপাট করা হয়েছে।
‘ব্ল্যাকহোলে’ ব্যাংকিং খাত
কৃষকদের ফসল উৎপাদনে উৎসাহ দিতে স্বল্প সুদ ও সহজ শর্তে ঋণ দেয় সরকার। ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে কৃষকদের ঘুষ দিতে হয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া সড়ক, সেতু, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজের জন্য রাজনৈতিক নেতা, আমলা ও তাঁদের সহযোগীদের ঘুষ দিতে হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, জালিয়াতি এবং নানা আর্থিক কেলেঙ্কারিতে দেশের ব্যাংকিং খাত ‘ব্ল্যাকহোলে’ পরিণত হয়েছে। এ খাতে লুটপাট হয়েছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অনাদায়ি ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা দিয়ে সাড়ে ১৩টি মেট্রোরেল কিংবা সাড়ে ২২টি পদ্মা সেতু করা যেত। ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, ১০টি ব্যাংকই প্রযুক্তিগতভাবে দেউলিয়া এবং অকার্যকর।
পুঁজিবাজারে ২০৫ প্রভাবশালীর নেটওয়ার্ক
অর্থনীতির অন্যতম বড় খাত পুঁজিবাজার। পুঁজিবাজারে ২০৫ প্রভাবশালী উদ্যোক্তা গোষ্ঠী, ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষক ও বিনিয়োগকারীর মধ্যে কারসাজির একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। নামে-বেনামে প্রতারণা, প্লেসমেন্ট-বাণিজ্য এবং শেয়ার কারসাজি করে বাজার ধ্বংস করেছে এই চক্র। এসবের মাধ্যমে জনগণের ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
বিদ্যুৎ খাতের বোঝা ক্যাপাসিটি চার্জ
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে বিদ্যুৎ খাতে মোট ব্যয় হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। একই সময়ে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জের নামেই লুটপাট হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও বড় পরিসরে দুর্নীতির হয়েছে। এ খাতের ২২টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা ২৫ হাজার কোটি টাকার বড় অংশ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, শ্বেতপত্রে দুর্নীতির পুরো চিত্র তুলে ধরা সম্ভব হয়নি, বড় বড় দুর্নীতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। বাস্তবে দেশের প্রতিটি পর্যায়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম রয়েছে। অনিয়মের কারণে ধনী মানুষ আরও সম্পদশালী হচ্ছে আর মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপে অসহনীয় কষ্টে দিন পার করছে।
২০২৪ সাল বাংলাদেশের জন্য ছিল বিনিয়োগ স্থবিরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি চ্যালেঞ্জিং বছর। বিদায় হতে যাওয়া বছরটিতে প্রকাশিত হয়, শেখ হাসিনা সরকার গত ১৫ বছরে উন্নয়নের ব্যানারে দুর্নীতি ও অনিয়মের গভীর ছাপ রেখে গেছেন। সরকারি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ঘিরে ন্যূনতম ২৮ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে হয় অপচয় ও অর্থ লোপাট। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রতিবছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে, যা দেশের পাঁচটি জাতীয় বাজেটের সমান।
গত ২৮ আগস্ট দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার। এই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আর ২ ডিসেম্বর একনে সম্মেলন কক্ষে শ্বেতপত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
শ্বেতপত্র প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত লোপাট করা এই অর্থের মধ্যে গত ১৫ বছরে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। বিগত সরকারের আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের রাঘববোয়াল, আমলা ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এই অর্থ পাচার করেছে।
মেগা প্রকল্পে লোপাট
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উন্নয়নের নামে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ব্যয় ছাড়াও পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দেশের সাতটি মেগা প্রকল্পের ৮০ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এই সাতটি প্রকল্পের কোনো কোনোটির ব্যয় প্রায় ৯০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে অর্থ লোপাট করা হয়েছে।
‘ব্ল্যাকহোলে’ ব্যাংকিং খাত
কৃষকদের ফসল উৎপাদনে উৎসাহ দিতে স্বল্প সুদ ও সহজ শর্তে ঋণ দেয় সরকার। ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে কৃষকদের ঘুষ দিতে হয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া সড়ক, সেতু, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজের জন্য রাজনৈতিক নেতা, আমলা ও তাঁদের সহযোগীদের ঘুষ দিতে হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, জালিয়াতি এবং নানা আর্থিক কেলেঙ্কারিতে দেশের ব্যাংকিং খাত ‘ব্ল্যাকহোলে’ পরিণত হয়েছে। এ খাতে লুটপাট হয়েছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অনাদায়ি ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা দিয়ে সাড়ে ১৩টি মেট্রোরেল কিংবা সাড়ে ২২টি পদ্মা সেতু করা যেত। ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, ১০টি ব্যাংকই প্রযুক্তিগতভাবে দেউলিয়া এবং অকার্যকর।
পুঁজিবাজারে ২০৫ প্রভাবশালীর নেটওয়ার্ক
অর্থনীতির অন্যতম বড় খাত পুঁজিবাজার। পুঁজিবাজারে ২০৫ প্রভাবশালী উদ্যোক্তা গোষ্ঠী, ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষক ও বিনিয়োগকারীর মধ্যে কারসাজির একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। নামে-বেনামে প্রতারণা, প্লেসমেন্ট-বাণিজ্য এবং শেয়ার কারসাজি করে বাজার ধ্বংস করেছে এই চক্র। এসবের মাধ্যমে জনগণের ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
বিদ্যুৎ খাতের বোঝা ক্যাপাসিটি চার্জ
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে বিদ্যুৎ খাতে মোট ব্যয় হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। একই সময়ে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জের নামেই লুটপাট হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও বড় পরিসরে দুর্নীতির হয়েছে। এ খাতের ২২টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা ২৫ হাজার কোটি টাকার বড় অংশ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, শ্বেতপত্রে দুর্নীতির পুরো চিত্র তুলে ধরা সম্ভব হয়নি, বড় বড় দুর্নীতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। বাস্তবে দেশের প্রতিটি পর্যায়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম রয়েছে। অনিয়মের কারণে ধনী মানুষ আরও সম্পদশালী হচ্ছে আর মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপে অসহনীয় কষ্টে দিন পার করছে।
লালমনিরহাটের বড় কমলাবাড়ির চাষি আসাদ মিয়া ঋণ করে এবার ২৭ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছে। আশা ছিল, ফুলকপি বিক্রি করে ঋণের টাকা শোধ করবেন। মুনাফার একটা অংশ দিয়ে সংসারের খরচ, আরেক অংশ দিয়ে পরবর্তী ফসল চাষের খরচ মেটাবেন। কিন্তু তাঁর সেই হিসাব ওলটপালট হয়ে গেছে। এবার ফুলকপির দাম ৫ থেকে ৬
৩ ঘণ্টা আগেরাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকার অর্থবছরের মাঝামাঝি এসে ভ্যাটের (মূল্য সংযোজন কর) ওপর ভর করার যে পথটি বেছে নিয়েছে, তা প্রতিকূল ফলাফল নিয়ে আসতে পারে বলে অর্থনীতিবিদেরা আশঙ্কা করছেন। ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের মাধ্যমে সরকার সম্পদশালীদের ওপর সরাসরি বাড়তি কর আরোপের পরিবর্তে
৩ ঘণ্টা আগেফেব্রুয়ারির পর ব্যবসা-বাণিজ্যের ১৯ বিভাগের সব লাইসেন্স আবেদন বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে করতে হবে। তা না হলে ওই বিভাগের বরাদ্দ বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
৩ ঘণ্টা আগেগাড়ি আমদানির ঋণপত্রে (এলসি) শতভাগ আগাম জমা বা নগদ মার্জিনের শর্ত শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড মোটরকার আমদানিতে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এবং অন্যান্য মোটরকারের আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে