ডিজিটাল হাটে গরু কিনতে পারবেন প্রবাসী ক্রেতারাও 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৩, ১৩: ৫৫
Thumbnail image

প্রবাসী ক্রেতাদের কোরবানির পশু কেনার সুযোগ থাকছে এ বছরের ডিজিটাল হাটে। করোনাকালে ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো চালু হওয়া অনলাইন কোরবানির হাট (ডিজিটাল হাট) এবারও অনলাইনে পশু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইক্যাব)-এর ব্যবস্থাপনায় এবং সরকারের এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রকল্পের একশপের কারিগরি সহায়তায় ইতিমধ্যে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও স্থানীয় পর্যায়ের হাটগুলো যুক্ত রয়েছে এবারের ডিজিটাল হাটের সঙ্গে। সেই সঙ্গে এবার ডিজিটাল হাটে যুক্ত হয়েছে প্রবাসী ক্রেতাদের জন্য অনলাইনে পেমেন্টের মাধ্যমে গরু কেনার সুবিধা। সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন। বিগত ২০ জুন থেকে শুরু হয়েছে এই প্ল্যাটফর্মে পশু বিক্রি। প্রবাসী ক্রেতাদের জন্য বিশেষ ঘোষণাটি এসেছে আজ ২৪ জুন।

ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারির মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আমরা বিগত তিন বছরে প্রায় ১০ হাজার খামারিকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছি। বিভিন্নভাবে তারা অনলাইনে পশু বিক্রয় করেছেন এবং অনেকে প্রত্যক্ষভাবেও এর সুফল পেয়েছেন। খামারি, অনলাইন উদ্যোক্তা ও কোরবানির পশুর ক্রেতা সবার কথা চিন্তা করেই আমরা এই উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছি।

বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি বা চলাচল সংক্রান্ত কোনো সরকারি নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ না থাকলেও ক্রেতাদের আগ্রহের কারণে এবারও ডিজিটাল হাটের মাধ্যমে কোরবানি পশু বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। digitalhaat.gov.bd ছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় ক্যাটল বিক্রয়ের প্ল্যাটফর্মগুলো এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। আরও যুক্ত রয়েছে জেলা পর্যায়ের ফেসবুক ও ওয়েবভিত্তিক পশু বিক্রয়ের প্ল্যাটফর্মগুলো।  এই তথ্য জানিয়েছেন একশপের টিম লিডার এবং এটুআইয়ের কমার্শিয়াল স্ট্র্যাটেজি বিভাগের প্রধান জনাব রেজওয়ানুল হক জামি।

২০২০ সালে ডিজিটাল হাটের প্রথম বছরেই এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ২৭ হাজার পশু বিক্রয় হয়েছিল। পরবর্তী বছরে অর্থাৎ, ২০২১ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার কোরবানির পশু বিক্রির মাধ্যমে এক অনন্য রেকর্ড স্থাপন করে এই ডিজিটাল হাট প্ল্যাটফর্ম, যার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২১ সালে এই প্ল্যাটফর্ম ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কারে ভূষিত হয়। গত বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে করোনার প্রকোপ একেবারেই কম থাকার পরেও এই প্ল্যাটফর্মে প্রায় ৬০ হাজার পশু বিক্রি হয়েছিল। আয়োজকেরা অনুমান করছেন, এ বছর ডিজিটাল হাটে অন্তত ৫০ হাজার পশু বিক্রি হবে। গতবারের চেয়ে এবারে কম বিক্রি হওয়ার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তাঁরা ধারণা করছেন যে, করোনা-পরবর্তী এই সময়ে এবার দেশে অবাধ চলাচল এবং পশুর দামের কারণে গতবারের চেয়ে ২০ শতাংশ কম পশু অনলাইনে বিক্রি পারে।

ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক আসিফ আহনাফ বলেন, এবারের ডিজিটাল হাটের বিশেষ সংযোজন, আমরা এ বছর প্রবাসী ক্রেতাদের জন্যও অনলাইনে পশু কেনার সুযোগ রেখেছি। তবে সেটা শুধু মূল প্ল্যাটফর্ম digitalhaat.gov.bd থেকে কেনার জন্য প্রযোজ্য হবে এবং ক্রেতা যে জেলার জন্য কিনবেন, সে জেলায় পশুর অবস্থান হতে হবে। 

ডিজিটাল হাটের মাঠ পর্যায়ের সমন্বয়ক ই-ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, ডিজিটাল হাটে পেমেন্টের প্রক্রিয়া হবে এরকম—পশু পছন্দ ও দাম নির্ধারণের পরে কর্তৃপক্ষ ক্রেতা ও বিক্রেতাকে ভেরিফাই করে একটি অনলাইন পেমেন্ট লিংক ক্রেতার জন্য পাঠাবেন। সেই লিংকে ক্রেতা পেমেন্ট প্রদান করবেন। বিক্রেতা তার ঠিকানা অনুযায়ী পশু ডেলিভারি করবেন। পুরো বিষয়টি ডিজিটাল হাট ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তদারক করবেন। এবারও স্লটারিং সেবার সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এটা সম্ভব হবে স্লটারিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান খালি থাকা সাপেক্ষে এবং আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে। আশা করা যাচ্ছে, এবারও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীসহ অনেকে ডিজিটাল হাট থেকে পছন্দের পশু কিনবেন।

এবার ডিজিটাল হাট স্পনসর হিসেবে রয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মার্কেটপ্লেস দারাজ এবং গেটওয়ে পার্টনার হিসেবে রয়েছে ওয়ালেটমিক্স।

সরকারের নির্ধারিত বিধি মোতাবেক ডিজিটাল হাট পরিচালনা করা হবে। কোরবানি পশুসংক্রান্ত শরিয়তের বিধান ও অন্যান্য বিষয় তদারকির মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া এসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ডিজিটাল হাটের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত