অনলাইন ডেস্ক
এশিয়ার কয়েকটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে তরুণদের বেকারত্বের হার দিনদিন বাড়ছে। তবে দেশগুলো বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এসব দেশের তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। বাংলাদেশে এখন তরুণ বেকারদের হার বেড়ে ১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুসারে, অতি দারিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে বেশ সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। গত এক দশকে প্রতিবছর গড়ে সাড়ে ৬ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে যুব বেকারত্বের হার ১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
চীন এবং ভারতেও যুব বেকারত্বের হার একই। আর ইন্দোনেশিয়ায় এটি ১৪ শতাংশ ও মালয়েশিয়ায় সাড়ে ১২ শতাংশ। জনবহুল এসব দেশে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। তাঁরা হন্য হয়ে চাকরি খুঁজলেও কপালে জুটছে না কিছুই। আইএলওর তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী মোট বেকার যুবকদের সংখ্যা সাড়ে ৬ কোটি, এর প্রায় অর্ধেকই এশিয়ায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং জার্মানির মতো ধনী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে এই পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ দেখায়। প্রথম বিশ্বের এসব দেশের তরুণেরা দ্রুতই চাকরি পায়। তবে ধীরে বর্ধনশীল দক্ষিণ ইউরোপীয় দেশ ইতালি এবং স্পেনের চিত্র সন্তোষজনক নয়, এসব দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশ তরুণ কাজ পাচ্ছে না।
যেসব এশীয় দেশে চীনের বড় কোনো কারখানা নেই, উচ্চ বেকারত্বের সেসব দেশ উন্নয়ন ও ব্যর্থতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই যুব বেকারত্বের সর্বশেষ বিস্ফোরণ ঘটেছে বাংলাদেশে। ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ১৫ বছরের শক্ত স্বৈরতন্ত্র ফেলে দেশ ছাড়তে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। ভারতের অর্থনীতি গত বছর ৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল এ বছরের নির্বাচনে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের যুব বেকারত্ব কমলেও বিশ্বব্যাপী গড়ের ওপরে রয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, মোদির বিপর্যয়ের প্রধান কারণ এই যুব বেকারত্ব।
চীনে রেকর্ড এক পঞ্চমাংশেরও বেশি যুবক কাজ পাচ্ছে না। এর ফলে দেশটির সরকার গত বছর যুব বেকারত্বের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি। ইন্দোনেশিয়ার ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আসছে বড় অংশে খনন এবং খনিজ প্রক্রিয়াকরণ থেকে। এসব খাতে প্রচুর ভারী মেশিন কাজ করে, মানুষ নয়।
অনেক দেশে ২০ বছর বয়সীরা ভালো কাজ পাচ্ছে না। গত বছর দক্ষিণ এশিয়ায় ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী কর্মীদের ৭১ শতাংশ অনিরাপদ কাজ নিযুক্ত। দুই দশক আগে এটি রেকর্ড ৭৭ শতাংশ ছিল, সেদিক থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে এই হার কমেনি।
বিশ্বব্যাপী তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার মোট শ্রমশক্তির তুলনায় বাড়ছেই। চীনের হাত ধরে উন্নয়নের মইয়ে পা দেওয়া উন্নয়নশীল এশিয়ার বিভিন্ন অংশজুড়ে এই চিত্র আরও ভয়াবহ। এমন পরিস্থিতে প্রশ্ন উঠছে, উন্নয়নের সেই মই কি তবে ভেঙে গেছে?
বিশ্বের তৈরি পোশাকশিল্পের কেন্দ্র হয়ে বাংলাদেশ অতি দারিদ্র্য থেকে বেরিয়েছে। বড় বড় পশ্চিমা ব্র্যান্ডের জিন্স, শার্ট এবং সোয়েটার তৈরি করেছে। লাখ লাখ শ্রমিক কৃষি ছেড়ে কারখানায় কাজ শুরু করেছে। এরপর হঠাৎ থমকে গেছে বাংলাদেশ। ইলেকট্রনিকস, ভারী যন্ত্রপাতি বা সেমিকন্ডাক্টরের মতো জটিল কিন্তু উচ্চমূল্যের উৎপাদন ব্যবস্থায় যেতে পারেনি, যেসব সেক্টর উচ্চ দক্ষ কর্মী ও ভালো বেতনের চাকরি সৃষ্টি করে। এসব উৎপাদন ব্যবস্থা সৃষ্টি করেই জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীন অর্থনৈতিক সাফল্য পেয়েছে। এখন সেই প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হয়েছে।
যেসব দেশ এখন সেমিকন্ডাক্টরের মতো পণ্য তৈরি করতে চায়, তাঁদের অবশ্যই সুদক্ষ চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত অর্থনীতির দেশও সেমিকন্ডাক্টরের মতো নতুন উৎপাদন ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে চাইছে। প্রকৃতপক্ষে, উৎপাদন ব্যবস্থায় অটোমেশনই যুবকদের বেকার করছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পও শ্রমশক্তির চেয়ে মেশিনের দিকে ঝুঁকছে। গত এক দশকে বাংলাদেশের গার্মেন্টস রপ্তানি দ্বিগুণ হয়েছে, তবে এই সময়ে এ খাতে সামগ্রিক কর্মসংস্থান অনেক ধীর গতিতে বেড়েছে।
এরপরই রয়েছে যোগ্যতা অনুসারে কাজ না পাওয়া। এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতি বছর অনেক যুবক উচ্চশিক্ষা এবং কলেজ ডিগ্রি অর্জন করছে। শিক্ষাজীবন শেষে তাঁরা নকশা, বিপণন, প্রযুক্তি এবং অর্থনীতির মতো ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির (হোয়াইট-কলার) চাকরি খোঁজেন। কিন্তু তাঁদের দেশে এমন কাজের সেক্টর খুবই স্বল্প।
উদাহরণস্বরূপ, ভারত তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গড়ে তুলেছে, তবে খাতের কাজও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কবজায় যেতে বসেছে। বেঙ্গালুরুর আজিম প্রেমজি ইউনিভার্সিটির ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের ২৫ বছরের কম বয়সী স্নাতকদের ৪০ শতাংশেরও বেশি বেকার। একই বয়সীদের ১১ শতাংশ শিক্ষিত কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করেনি।
ফিনল্যান্ডের ইউনাইটেড ন্যাশনস ইউনিভার্সিটি ওয়ার্ল্ড ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস রিসার্চের ডিরেক্টর কুনাল সেন বলেন, এখন যুবকেরা শিক্ষিত হয়েছে, যেখানে তাঁদের মা-বাবা ছিলেন না। এসব যুবক তাঁদের মা-বাবার মতো চাকরিতে আটকে থাকতে চান না। আমি মনে করি, এই সমস্যা রাজনীতিকেরা বুঝতে পারেননি।
২০২২ সালের সরকারি জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশে যাদের কলেজ ডিগ্রিধারীদের বেকারত্বের হার মোট সংখ্যার তিনগুণ। দেশের প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে বসে বেকাররা বই নিয়ে পীড়াপীড়ি করেন। তাঁরা প্রথম, দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয়বারের চেষ্টায় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস করতে মরিয়া। তাঁদের অনেকে এখনো বাবা-মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলে।
২৮ বছর বয়সী আকতারুজ্জামান ফিরোজ, ২০২১ সালে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি ৫০টি পদের জন্য আবেদন করা সত্ত্বেও কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না। তিনি এ বছর একটি সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়েছেন, যেখানে দুটি পদের জন্য ৫০০ জন আবেদনকারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত গেলেও চাকরি পাননি।
কোনোমতে চলার জন্য ফিরোজ তাঁর বাবার কাছ থেকে টাকা নেন। তাঁর নিম্নস্তরের সরকারি কর্মচারী বাবার সম্প্রতি ওপেন-হার্ট সার্জারি করতে হয়েছে। বিয়ে এখন তাঁর কাছে উচ্চাকাঙ্ক্ষা, তাই সেই আশা তিনি ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি যদি নিজের খরচ চালাতে না পারি, পরিবারের দায়িত্ব নিতে না পারি, তবে কীভাবে বিয়ে করব?’
বেশির ভাগ বাংলাদেশি যুবক সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহী, কারণ দেশটির অনুন্নত বেসরকারি খাতে মর্যাদাপূর্ণ (হোয়াইট-কলার) চাকরি পাওয়া যায় না। সেই সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযুদ্ধ কোটা রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ২৬ বছর বয়সী ছাত্রনেতা আসিফ মাহমুদ এখন সরকারের যুব ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। তিনি ওয়াল স্ট্রিটকে বলেন, ‘এই বিক্ষোভের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল চাকরির সংকট।’ স্নাতক পাস করা বেকার হ্রাস করতে স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিল্পের সঙ্গে কাজ করতে সক্ষম করা তাঁর লক্ষ্য।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘জনসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য মোট কাজের সুযোগ যথেষ্ট নয়।’
এশিয়ার কয়েকটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে তরুণদের বেকারত্বের হার দিনদিন বাড়ছে। তবে দেশগুলো বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এসব দেশের তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। বাংলাদেশে এখন তরুণ বেকারদের হার বেড়ে ১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুসারে, অতি দারিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে বেশ সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। গত এক দশকে প্রতিবছর গড়ে সাড়ে ৬ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে যুব বেকারত্বের হার ১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
চীন এবং ভারতেও যুব বেকারত্বের হার একই। আর ইন্দোনেশিয়ায় এটি ১৪ শতাংশ ও মালয়েশিয়ায় সাড়ে ১২ শতাংশ। জনবহুল এসব দেশে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। তাঁরা হন্য হয়ে চাকরি খুঁজলেও কপালে জুটছে না কিছুই। আইএলওর তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী মোট বেকার যুবকদের সংখ্যা সাড়ে ৬ কোটি, এর প্রায় অর্ধেকই এশিয়ায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং জার্মানির মতো ধনী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে এই পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ দেখায়। প্রথম বিশ্বের এসব দেশের তরুণেরা দ্রুতই চাকরি পায়। তবে ধীরে বর্ধনশীল দক্ষিণ ইউরোপীয় দেশ ইতালি এবং স্পেনের চিত্র সন্তোষজনক নয়, এসব দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশ তরুণ কাজ পাচ্ছে না।
যেসব এশীয় দেশে চীনের বড় কোনো কারখানা নেই, উচ্চ বেকারত্বের সেসব দেশ উন্নয়ন ও ব্যর্থতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই যুব বেকারত্বের সর্বশেষ বিস্ফোরণ ঘটেছে বাংলাদেশে। ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ১৫ বছরের শক্ত স্বৈরতন্ত্র ফেলে দেশ ছাড়তে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। ভারতের অর্থনীতি গত বছর ৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল এ বছরের নির্বাচনে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের যুব বেকারত্ব কমলেও বিশ্বব্যাপী গড়ের ওপরে রয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, মোদির বিপর্যয়ের প্রধান কারণ এই যুব বেকারত্ব।
চীনে রেকর্ড এক পঞ্চমাংশেরও বেশি যুবক কাজ পাচ্ছে না। এর ফলে দেশটির সরকার গত বছর যুব বেকারত্বের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি। ইন্দোনেশিয়ার ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আসছে বড় অংশে খনন এবং খনিজ প্রক্রিয়াকরণ থেকে। এসব খাতে প্রচুর ভারী মেশিন কাজ করে, মানুষ নয়।
অনেক দেশে ২০ বছর বয়সীরা ভালো কাজ পাচ্ছে না। গত বছর দক্ষিণ এশিয়ায় ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী কর্মীদের ৭১ শতাংশ অনিরাপদ কাজ নিযুক্ত। দুই দশক আগে এটি রেকর্ড ৭৭ শতাংশ ছিল, সেদিক থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে এই হার কমেনি।
বিশ্বব্যাপী তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার মোট শ্রমশক্তির তুলনায় বাড়ছেই। চীনের হাত ধরে উন্নয়নের মইয়ে পা দেওয়া উন্নয়নশীল এশিয়ার বিভিন্ন অংশজুড়ে এই চিত্র আরও ভয়াবহ। এমন পরিস্থিতে প্রশ্ন উঠছে, উন্নয়নের সেই মই কি তবে ভেঙে গেছে?
বিশ্বের তৈরি পোশাকশিল্পের কেন্দ্র হয়ে বাংলাদেশ অতি দারিদ্র্য থেকে বেরিয়েছে। বড় বড় পশ্চিমা ব্র্যান্ডের জিন্স, শার্ট এবং সোয়েটার তৈরি করেছে। লাখ লাখ শ্রমিক কৃষি ছেড়ে কারখানায় কাজ শুরু করেছে। এরপর হঠাৎ থমকে গেছে বাংলাদেশ। ইলেকট্রনিকস, ভারী যন্ত্রপাতি বা সেমিকন্ডাক্টরের মতো জটিল কিন্তু উচ্চমূল্যের উৎপাদন ব্যবস্থায় যেতে পারেনি, যেসব সেক্টর উচ্চ দক্ষ কর্মী ও ভালো বেতনের চাকরি সৃষ্টি করে। এসব উৎপাদন ব্যবস্থা সৃষ্টি করেই জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীন অর্থনৈতিক সাফল্য পেয়েছে। এখন সেই প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হয়েছে।
যেসব দেশ এখন সেমিকন্ডাক্টরের মতো পণ্য তৈরি করতে চায়, তাঁদের অবশ্যই সুদক্ষ চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত অর্থনীতির দেশও সেমিকন্ডাক্টরের মতো নতুন উৎপাদন ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে চাইছে। প্রকৃতপক্ষে, উৎপাদন ব্যবস্থায় অটোমেশনই যুবকদের বেকার করছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পও শ্রমশক্তির চেয়ে মেশিনের দিকে ঝুঁকছে। গত এক দশকে বাংলাদেশের গার্মেন্টস রপ্তানি দ্বিগুণ হয়েছে, তবে এই সময়ে এ খাতে সামগ্রিক কর্মসংস্থান অনেক ধীর গতিতে বেড়েছে।
এরপরই রয়েছে যোগ্যতা অনুসারে কাজ না পাওয়া। এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতি বছর অনেক যুবক উচ্চশিক্ষা এবং কলেজ ডিগ্রি অর্জন করছে। শিক্ষাজীবন শেষে তাঁরা নকশা, বিপণন, প্রযুক্তি এবং অর্থনীতির মতো ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির (হোয়াইট-কলার) চাকরি খোঁজেন। কিন্তু তাঁদের দেশে এমন কাজের সেক্টর খুবই স্বল্প।
উদাহরণস্বরূপ, ভারত তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গড়ে তুলেছে, তবে খাতের কাজও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কবজায় যেতে বসেছে। বেঙ্গালুরুর আজিম প্রেমজি ইউনিভার্সিটির ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের ২৫ বছরের কম বয়সী স্নাতকদের ৪০ শতাংশেরও বেশি বেকার। একই বয়সীদের ১১ শতাংশ শিক্ষিত কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করেনি।
ফিনল্যান্ডের ইউনাইটেড ন্যাশনস ইউনিভার্সিটি ওয়ার্ল্ড ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস রিসার্চের ডিরেক্টর কুনাল সেন বলেন, এখন যুবকেরা শিক্ষিত হয়েছে, যেখানে তাঁদের মা-বাবা ছিলেন না। এসব যুবক তাঁদের মা-বাবার মতো চাকরিতে আটকে থাকতে চান না। আমি মনে করি, এই সমস্যা রাজনীতিকেরা বুঝতে পারেননি।
২০২২ সালের সরকারি জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশে যাদের কলেজ ডিগ্রিধারীদের বেকারত্বের হার মোট সংখ্যার তিনগুণ। দেশের প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে বসে বেকাররা বই নিয়ে পীড়াপীড়ি করেন। তাঁরা প্রথম, দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয়বারের চেষ্টায় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস করতে মরিয়া। তাঁদের অনেকে এখনো বাবা-মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলে।
২৮ বছর বয়সী আকতারুজ্জামান ফিরোজ, ২০২১ সালে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি ৫০টি পদের জন্য আবেদন করা সত্ত্বেও কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না। তিনি এ বছর একটি সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়েছেন, যেখানে দুটি পদের জন্য ৫০০ জন আবেদনকারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত গেলেও চাকরি পাননি।
কোনোমতে চলার জন্য ফিরোজ তাঁর বাবার কাছ থেকে টাকা নেন। তাঁর নিম্নস্তরের সরকারি কর্মচারী বাবার সম্প্রতি ওপেন-হার্ট সার্জারি করতে হয়েছে। বিয়ে এখন তাঁর কাছে উচ্চাকাঙ্ক্ষা, তাই সেই আশা তিনি ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি যদি নিজের খরচ চালাতে না পারি, পরিবারের দায়িত্ব নিতে না পারি, তবে কীভাবে বিয়ে করব?’
বেশির ভাগ বাংলাদেশি যুবক সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহী, কারণ দেশটির অনুন্নত বেসরকারি খাতে মর্যাদাপূর্ণ (হোয়াইট-কলার) চাকরি পাওয়া যায় না। সেই সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযুদ্ধ কোটা রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ২৬ বছর বয়সী ছাত্রনেতা আসিফ মাহমুদ এখন সরকারের যুব ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। তিনি ওয়াল স্ট্রিটকে বলেন, ‘এই বিক্ষোভের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল চাকরির সংকট।’ স্নাতক পাস করা বেকার হ্রাস করতে স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিল্পের সঙ্গে কাজ করতে সক্ষম করা তাঁর লক্ষ্য।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘জনসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য মোট কাজের সুযোগ যথেষ্ট নয়।’
আসন্ন পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। পাশাপাশি রোজার ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ এই পণ্যের ওপর থাকা অগ্রিম করও পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। তবে খেজুর আমদানির অযৌক্তিক ট্যারিফ ভ্যালু...
৫ ঘণ্টা আগেদেশের বাজারে ফের সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ২২ ক্যারেট সোনার ভরির নতুন দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। দাম বৃদ্ধির কারণ ও বিস্তারিত জানতে পড়ুন।
৫ ঘণ্টা আগেপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন জুতা প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক তিন কোম্পানির কাছে প্রস্তুতকৃত চামড়া বিক্রি করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এপেক্স ট্যানারি লিমিটেড। এ লক্ষ্যে শিগগিরই হবে চুক্তি। চুক্তির আওতায় বছরে ১৬ কোটি টাকার চামড়া বিক্রি করবে এপেক্স ট্যানারি।
৫ ঘণ্টা আগেফলজাত পণ্য রপ্তানির জন্য বিশেষ সুবিধা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফলজাত পাল্প থেকে প্রস্তুত করা জুস ও ড্রিংকস রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানিকারকেরা এখন মোট রপ্তানি আয়ের ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পাবেন। আজ বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ
৬ ঘণ্টা আগে