অনলাইন ডেস্ক
এপার-ওপারে তল্লাশি চৌকিতে তৎপর দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সোনা ও মাদকের অবৈধ চালান ধরার জন্য তাঁরা গাড়ি ও যাত্রীদের দেহ তল্লাশি করছেন। এসব তল্লাশিতে খাদ্যশস্যও মিলছে। চিনি, শস্য, এমনকি পেঁয়াজের চালানও ধরা পড়ছে। এই চিত্র বাংলাদেশের দক্ষিণের সীমান্ত জেলা যশোরের বেনাপোল আর ওপারে ভারতের পশ্চিবঙ্গের পেট্রাপোল স্থলবন্দরের চিত্র। এই সীমান্ত দিয়ে বিনিময় রূপে কীভাবে পণ্য পাচার হয়, তা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর শিলং ভারতের অন্যতম পর্যটন গন্তব্য। মনোরম এই পাহাড়ি এলাকায় প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক আসেন। আর এই ঘুরে বেড়ানোর আড়ালে চলে অবৈধ পণ্য পাচার। এ জন্য সূক্ষ্ম কৌশল অবলম্বন করেন চৌকস পাচারকারীরা, তবুও তল্লাশিতে অনেকেই ধরা পড়েন।
এমন একটি ঘটনা তুলে ধরে শিলংয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এক কর্মকর্তা বলেন, গত আগস্ট মাসে তাঁরা পাচারকারীদের একটি দলকে আটক করেন। তল্লাশির সময় তাঁদের গাড়িতে চিনি পাওয়া যায়। সেগুলো সুকৌশলে বালির বস্তার নিচে লুকিয়ে পাচার করা হচ্ছিল।
বাংলাদেশের বেশির ভাগ খাদ্যশস্য প্রতিবেশী ভারত থেকে আমদানি করা হয়। এর বাইরে প্রতিবছর সোনার চালানের বিনিময়ে ২০ লাখ টনেরও বেশি খাদ্যশস্য ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার হয় বলে স্থলবন্দরের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে।
ভারতে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ২০২২ সালে গম, চিনি, চাল, পেঁয়াজ ও ডাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির সরকার। এর ফলে বাংলাদেশের খাদ্যের দাম ভারতের দামের চেয়ে দেড় গুণের বেশি বেড়ে যায়। ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে সোনার দাম ৫০ শতাংশেরও বেশি কমে যায়। এতে লাভবান হন পাচারকারীরা, তাঁরা খাদ্যশস্য পাচারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন।
এই প্রেক্ষাপটে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশে অপরিশোধিত চিনি আমদানি ২৫ শতাংশ কমে ১৩ লাখ ৮৬ হাজার টনে নামে। ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের মিষ্টির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এর প্রভাবে ভারত থেকে চিনি পাচার বেড়ে যায়। তখন ৪ লাখ ৫০ হাজার টন চিনি পাচার করা হয়, যার বিনিময় মূল্য পরিশোধে সোনা ব্যবহার করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের এক পাচারকারীর কথা তুলে ধরে এক বিএসএফ কর্মকর্তা বলেন, গত অক্টোবরে আটক এক চোরাকারবারির মোটরসাইকেলের এয়ার ফিল্টারের ভেতর ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের ৪ দশমিক ৭ কেজি সোনা পাওয়া যায়। ওই ব্যক্তিকে মাত্র ১৪ হাজার টাকার বিনিময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার হওয়া খাদ্যসামগ্রীর বিক্রয়মূল্য হিসেবে ১৮টি সোনার বিস্কুট ভারতে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁওয়ের ব্যবসায়ী বলবন্ত হোলকার বলছিলেন, দেশে কৃষিপণ্যের দাম কমাতে সরকার রপ্তানিতে কড়াকড়ি করেছে। কিন্তু সেই পদক্ষেপের পুরো ফায়দা তুলছেন পাচারকারীরা। কিন্তু এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকেরা।
বাংলাদেশের এক ব্যবসায়ী জানান, একদিকে ভারত রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ কখনো কখনো আমদানি শুল্ক বাড়াচ্ছে। এর ফলে সীমান্ত দিয়ে শস্য পাচার ব্যাপক বেড়েছে। দুই দেশের মধ্যে মধ্যে চার হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত সীমানাজুড়ে এই পাচার চলছে।
সোনা ও খাদ্যপণ্যের অবৈধ বিনিময়ের কারণে ভারত ও বাংলাদেশে সম্মিলিত রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ কয়েক শ কোটি ডলার হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। ভারতের রাজস্ব গোয়েন্দারা জানান, ভারতে পাচার হয়ে আসা সোনার প্রায় এক-তৃতীয়াংশই বাংলাদেশ থেকে আসা। এর বেশির ভাগই এসেছে শস্যের দাম হিসেবে। তবে এই পাচারের কারণে গত বছর আনুমানিক ১৬০ কোটি ডলারের কর রাজস্ব হারিয়েছে ভারত।
ভারতের সোনা পরিশোধনকারীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব গোল্ড রিফাইনারিজ অ্যান্ড মিন্টসের সেক্রেটারি জেমস জোসে বলেন, গত জুলাইতে সোনা আমদানির শুল্ক ৯ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়ে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামানো হয়। তবু চোরাচালান বাড়ছে।
কলকাতার পাইকারি বিক্রেতা জে জে গোল্ড হাউসের হর্ষদ আজমেরা রয়টার্সকে বলেন, ভারতে সোনা পরিশোধনে লাভ খুব কম। কিন্তু সোনা পাচারে বিপুল লাভ। কারণ, এ ক্ষেত্রে কোনো করই দিতে হয় না। ফলে পাচারকারীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টেকা সম্ভব নয়।
ভারতীয় পণ্যের বিনিময়মূল্য হিসেবে সোনা বহন করার জন্য নতুন চক্রের জন্ম হয়েছে। তারা নগদ অর্থের বিনিময়ে কলকাতায় সোনা আদান-প্রদান করছে।
সীমান্তবর্তী এক ভারতীয় বাহক বললেন, কয়েক বছর ধরে কাজের কোনো অভাব হয়নি। ফলে তাঁর উপার্জনেও কখনো টান পড়েনি।
রয়টার্স থেকে অনুবাদ করেছেন ফারহানা জিয়াসমিন
এপার-ওপারে তল্লাশি চৌকিতে তৎপর দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সোনা ও মাদকের অবৈধ চালান ধরার জন্য তাঁরা গাড়ি ও যাত্রীদের দেহ তল্লাশি করছেন। এসব তল্লাশিতে খাদ্যশস্যও মিলছে। চিনি, শস্য, এমনকি পেঁয়াজের চালানও ধরা পড়ছে। এই চিত্র বাংলাদেশের দক্ষিণের সীমান্ত জেলা যশোরের বেনাপোল আর ওপারে ভারতের পশ্চিবঙ্গের পেট্রাপোল স্থলবন্দরের চিত্র। এই সীমান্ত দিয়ে বিনিময় রূপে কীভাবে পণ্য পাচার হয়, তা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর শিলং ভারতের অন্যতম পর্যটন গন্তব্য। মনোরম এই পাহাড়ি এলাকায় প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক আসেন। আর এই ঘুরে বেড়ানোর আড়ালে চলে অবৈধ পণ্য পাচার। এ জন্য সূক্ষ্ম কৌশল অবলম্বন করেন চৌকস পাচারকারীরা, তবুও তল্লাশিতে অনেকেই ধরা পড়েন।
এমন একটি ঘটনা তুলে ধরে শিলংয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এক কর্মকর্তা বলেন, গত আগস্ট মাসে তাঁরা পাচারকারীদের একটি দলকে আটক করেন। তল্লাশির সময় তাঁদের গাড়িতে চিনি পাওয়া যায়। সেগুলো সুকৌশলে বালির বস্তার নিচে লুকিয়ে পাচার করা হচ্ছিল।
বাংলাদেশের বেশির ভাগ খাদ্যশস্য প্রতিবেশী ভারত থেকে আমদানি করা হয়। এর বাইরে প্রতিবছর সোনার চালানের বিনিময়ে ২০ লাখ টনেরও বেশি খাদ্যশস্য ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার হয় বলে স্থলবন্দরের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে।
ভারতে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ২০২২ সালে গম, চিনি, চাল, পেঁয়াজ ও ডাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির সরকার। এর ফলে বাংলাদেশের খাদ্যের দাম ভারতের দামের চেয়ে দেড় গুণের বেশি বেড়ে যায়। ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে সোনার দাম ৫০ শতাংশেরও বেশি কমে যায়। এতে লাভবান হন পাচারকারীরা, তাঁরা খাদ্যশস্য পাচারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন।
এই প্রেক্ষাপটে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশে অপরিশোধিত চিনি আমদানি ২৫ শতাংশ কমে ১৩ লাখ ৮৬ হাজার টনে নামে। ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের মিষ্টির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এর প্রভাবে ভারত থেকে চিনি পাচার বেড়ে যায়। তখন ৪ লাখ ৫০ হাজার টন চিনি পাচার করা হয়, যার বিনিময় মূল্য পরিশোধে সোনা ব্যবহার করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের এক পাচারকারীর কথা তুলে ধরে এক বিএসএফ কর্মকর্তা বলেন, গত অক্টোবরে আটক এক চোরাকারবারির মোটরসাইকেলের এয়ার ফিল্টারের ভেতর ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের ৪ দশমিক ৭ কেজি সোনা পাওয়া যায়। ওই ব্যক্তিকে মাত্র ১৪ হাজার টাকার বিনিময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার হওয়া খাদ্যসামগ্রীর বিক্রয়মূল্য হিসেবে ১৮টি সোনার বিস্কুট ভারতে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁওয়ের ব্যবসায়ী বলবন্ত হোলকার বলছিলেন, দেশে কৃষিপণ্যের দাম কমাতে সরকার রপ্তানিতে কড়াকড়ি করেছে। কিন্তু সেই পদক্ষেপের পুরো ফায়দা তুলছেন পাচারকারীরা। কিন্তু এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকেরা।
বাংলাদেশের এক ব্যবসায়ী জানান, একদিকে ভারত রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ কখনো কখনো আমদানি শুল্ক বাড়াচ্ছে। এর ফলে সীমান্ত দিয়ে শস্য পাচার ব্যাপক বেড়েছে। দুই দেশের মধ্যে মধ্যে চার হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত সীমানাজুড়ে এই পাচার চলছে।
সোনা ও খাদ্যপণ্যের অবৈধ বিনিময়ের কারণে ভারত ও বাংলাদেশে সম্মিলিত রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ কয়েক শ কোটি ডলার হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। ভারতের রাজস্ব গোয়েন্দারা জানান, ভারতে পাচার হয়ে আসা সোনার প্রায় এক-তৃতীয়াংশই বাংলাদেশ থেকে আসা। এর বেশির ভাগই এসেছে শস্যের দাম হিসেবে। তবে এই পাচারের কারণে গত বছর আনুমানিক ১৬০ কোটি ডলারের কর রাজস্ব হারিয়েছে ভারত।
ভারতের সোনা পরিশোধনকারীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব গোল্ড রিফাইনারিজ অ্যান্ড মিন্টসের সেক্রেটারি জেমস জোসে বলেন, গত জুলাইতে সোনা আমদানির শুল্ক ৯ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়ে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামানো হয়। তবু চোরাচালান বাড়ছে।
কলকাতার পাইকারি বিক্রেতা জে জে গোল্ড হাউসের হর্ষদ আজমেরা রয়টার্সকে বলেন, ভারতে সোনা পরিশোধনে লাভ খুব কম। কিন্তু সোনা পাচারে বিপুল লাভ। কারণ, এ ক্ষেত্রে কোনো করই দিতে হয় না। ফলে পাচারকারীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টেকা সম্ভব নয়।
ভারতীয় পণ্যের বিনিময়মূল্য হিসেবে সোনা বহন করার জন্য নতুন চক্রের জন্ম হয়েছে। তারা নগদ অর্থের বিনিময়ে কলকাতায় সোনা আদান-প্রদান করছে।
সীমান্তবর্তী এক ভারতীয় বাহক বললেন, কয়েক বছর ধরে কাজের কোনো অভাব হয়নি। ফলে তাঁর উপার্জনেও কখনো টান পড়েনি।
রয়টার্স থেকে অনুবাদ করেছেন ফারহানা জিয়াসমিন
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় কেনাকাটায় গ্রাহকদের স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে এবারও থাকছে বিকাশের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট সুবিধা। মেলা থেকে পছন্দের পণ্য ও সেবা নিয়ে বিকাশ অ্যাপ থেকে কিউআর স্ক্যান করে, পেমেন্ট গেটওয়ে বা অ্যাপে...
১ ঘণ্টা আগেমাসরুর আরেফিন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও পদে পুনর্নিয়োগ পেয়েছেন। সম্প্রতি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের পরে বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী তিন বছরের জন্য তাঁর পুনর্নিয়োগে অনুমতি দিয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেপরিবর্তিত বাস্তবতায়ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা ধরে রেখেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তারা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করেছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা বেশি। এ ছাড়া পরবর্তী দুই অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের প্রক্ষেপণও করা হয়েছ
৫ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা কার্যক্রম মূল্যায়নের জন্য ইন্টারন্যাশনাল শিপ অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটির (আইএসপিএস) একটি প্রতিনিধিদল চট্টগ্রামে আসছে। ২১-২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চার সদস্যের প্রতিনিধিদলটি চট্টগ্রামে অবস্থান করবে। এ সময়ে তাঁরা বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা, নিরাপত্তা কার্যক্রম এবং সং
৬ ঘণ্টা আগে