রপ্তানিতে প্রণোদনা আর নয়, অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৪, ১৪: ৪৩

ডলারের দর একলাফে ৭ টাকা বাড়ানোর ফলে বিশেষ সুবিধা পাবেন রপ্তানিকারকেরা। তাই এখন তাঁদের আর প্রণোদনা দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই। এ ব্যাপারে সরকার বিবেচনা করতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান–বিআইডিএস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেছেন তাঁরা। বিআইডিএসের মহাপরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।

বিনায়ক সেন বলেন, ‘বিআইডিএসের পক্ষ থেকে সম্প্রতি দেশের সব জেলা থেকে তথ্য নিয়েছি। এরপর একটি পদ্ধতিতে মূল্যস্ফীতি হিসাব করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে মাছের দাম। গত এক বছরে মাছের দাম ২০ শতাংশের ওপর বেড়েছে। এরপর রয়েছে পোলট্রি মুরগির দাম।’

ডলারের দর একলাফে ৭ টাকা বাড়ানো প্রসঙ্গে ড. বিনায়ক সেন বলেন, ডলারের দাম বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করা হয়েছে। এখন আর রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার কোনো মানে হয় না। দেশের এ দুর্যোগ মুহূর্তে সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানো প্রয়োজন। ফলে রপ্তানিতে প্রণোদনা বন্ধ করা হলে সেই অর্থ সামাজিক সুরক্ষাসহ বিভিন্ন অত্যাবশ্যক খাতে ব্যবহার করা যাবে।

ড. মসিউর রহমান বলেন, রপ্তানিতে প্রণোদনা বন্ধ করা হবে কি না, সেটা সরকার ভেবে দেখতে পারে। যদি এ প্রণোদনা বহাল রাখা হয়, সে ক্ষেত্রে রপ্তানি খাতে ওই পণ্যের অবদান (পারফরম্যান্স) যাচাইয়ের ভিত্তিতে তা দেওয়া যেতে পারে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত চিহ্নিত করে, তারপর এ প্রণোদনা দেওয়া উচিত।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা আরও বলেন, দীর্ঘ সময় মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক না করায় এ ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন এটিকে বাজারভিত্তিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এখন থেকে বাজারের সঙ্গে মিল রেখে নিয়মিতভাবে মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয় হওয়া প্রয়োজন।

বিআইডিএসের ‘বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদেরা উপস্থিত ছিলেন। বইটি লিখেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান ড. সাদিক আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এম এ মান্নান এমপি।

বই নিয়ে আলোচনা করেন গবেষণা ও নীতিসহায়ক সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক ও বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. মোস্তফা কে মুজেরী, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) চেয়ারম্যান ও পিআরআই পরিচালক ড. বজলুল হক খন্দকার, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত