Ajker Patrika

আর্জেন্টিনার মুদ্রাস্ফীতি এ বছর ২৫০ শতাংশে দাঁড়াবে: ওইসিডি

আর্জেন্টিনার মুদ্রাস্ফীতি এ বছর ২৫০ শতাংশে দাঁড়াবে: ওইসিডি

আর্জেন্টিনার মুদ্রাস্ফীতির হার এই বছর ২৫০.৬ শতাংশে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজ সোমবার দ্য অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এ পূর্বাভাস দিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে বলেছে, এর আগের পূর্বাভাসে বলা ১৫৭.১ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির চেয়েও এই হার অনেকটা বেশি।

প্যারিস-ভিত্তিক সংস্থা ওইসিডি ২০২৪ সালের জন্য আর্জেন্টিনার অর্থনৈতিক সংকোচনের পূর্বাভাস দিয়েছে। লাতিন আমেরিকার দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই গত ডিসেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সংস্কার শুরু করেছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরেই আর্জেন্টিনার বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি ছাড়িয়েছে ২১১ শতাংশ। সরকারি তথ্য মতে, ১৯৯০-এর দশকের পর থেকে সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি। এর পেছনে নতুন প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইয়ের কঠোর কৃচ্ছ্রসাধনের নীতিকে দায়ী করা হচ্ছে।

হাভিয়ের মিলেই গত ১০ ডিসেম্বর ক্ষমতা গ্রহণের পর মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার কিছু কৌশল নেন। এতে দেশটির মুদ্রা পেসোর চরম অবমূল্যায়ন ঘটেছে। ফলে নতুন রেকর্ড করেছে মুদ্রাস্ফীতি।

আর্জেন্টিনার মাসিক মুদ্রাস্ফীতি গত ডিসেম্বরে ছুঁয়েছিল ২৫.৫ শতাংশ—যা পূর্বাভাসের চেয়ে সামান্য কম। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে দীর্ঘ মুদ্রাস্ফীতির দেশ বলা হয় ভেনেজুয়েলাকে। মুদ্রাস্ফীতির হার অনুযায়ী আর্জেন্টিনা এবার ভেনেজুয়েলাকেও ছাড়িয়ে গেছে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই রাজনৈতিকভাবে বহিরাগত। তিনি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে বক্তব্য দিয়ে ভোটারদের আকৃষ্ট করেছেন। এ কৌশল তাকে নির্বাচনে বিজয়ী করেছে। এখন মুদ্রাস্ফীতি ও ব্যাপক রাজস্ব ঘাটতি কমাতে ও সরকারের রিজার্ভ পুনর্গঠনের জন্য কঠোর নীতিমালা নিতে চাইছেন।

নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি হিসেবে তিনি দ্রব্যমূল্য কমানো, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিলোপ ও মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভর থেকে বেরিয়ে আর্জেন্টিনার মুদ্রা পেসোকে প্রতিস্থাপনের কথা বলেছেন।

মুদ্রা ব্যবস্থায় স্বায়ত্তশাসন ছিল আর্জেন্টিনার মতো দেশের জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় ও ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ, এর ফলে আর্থিক বিষয়াদির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বহুলাংশে কমে যাবে এবং মিলেই মূলত এ নিয়েই কাজ করার কথা জানিয়েছিলেন। আগের সরকার যথেষ্ট চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ায় জনগণ মনে করেছিল, মিলেইয়ের এই উদ্যোগ অন্তত ভুল ব্যবস্থাপনার চেয়ে ভালো ফলাফল বয়ে আনবে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি আর্জেন্টিনার অর্থনীতিকে বছরের পর বছর ধরে একই স্থানে আটকে রেখেছে। ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে শুরু করে, যা এখন সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে। দেশটিতে দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে খাদ্যের দাম।

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে বলে জনগণকে সতর্ক করেছেন হাভিয়ের মিলেই। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আগে আরও খারাপ হতে পারে। অনেক আর্জেন্টাইন তাদের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন। দেশটির দুই-পঞ্চমাংশ মানুষ বর্তমানে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত