মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনে ভাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৩, ০০: ৫৭

খরচ বেশি হওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় (এমএফএস) আগ্রহ কমছে গ্রাহকের। যার প্রভাব পড়েছে লেনদেনে। শুধু গত মে মাসেই তার আগের মাসের (এপ্রিল) তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। তার পরে লেনদেন অনেক কমেছে। অর্থাৎ গত মে মাসে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে লেনদেন কম হয়েছে ১৬ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে লেনদেন কমের পরিমাণ ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ছে। খরচ কমাতে অনেক গ্রাহক ব্যাংকের দিকে ঝুঁকছেন। এতে এমএফএসের প্রতি আগ্রহ কমছে। এ ছাড়া ঈদ বা অন্য কোনো উৎসব থাকলে লেনদেন বেড়ে যায়। এখানে প্রবাসী আয়ও আসে। পাশাপাশি শহর থেকে গ্রামে কেনাকাটায় অনেকে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় টাকা পাঠিয়ে থাকেন। তবে উৎসবের পর কিছুটা কমে আসে। পরে আবার বেড়ে যায়। এপ্রিল মাসের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল বলে জানান তাঁরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বর্তমানে ১৩টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ, ডাচ্‌-বাংলার রকেট, ইউসিবির ইউক্যাশ, নগদ, মাইক্যাশ, শিওর ক্যাশ ইত্যাদি। এসব সেবা প্রদানকারী সংস্থার মাধ্যমে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় নিবন্ধিত হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার। এটি তার আগের মাস এপ্রিলে ছিল ২০ কোটি ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২১০টি।

জানা গেছে, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর হিসাবধারী রয়েছেন সাড়ে ৬ কোটির বেশি। এ হিসাব যোগ করলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত হিসাবের সংখ্যা সাড়ে ২৬ কোটি। তবে একই ব্যক্তি একাধিক সিম ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হিসাব খুলতে পারেন। লেনদেনের সুবিধার্থে একাধিক সিমে একাধিক হিসাব খোলায় হিসাবধারীর সংখ্যা বাড়ছে।

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে শুধু লেনদেন নয়, নতুন নতুন সেবাও যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো (রেমিট্যান্স) ইত্যাদি। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতনও এখন দেওয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট, নগদের মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছিল ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। আগস্ট মাসে কিছুটা কমে লেনদেন হয়েছিল ৮৭ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে ৮৭ হাজার ৬৩৫ কোটি, অক্টোবরে ৯৩ হাজার ১৩, নভেম্বরে ৯২ হাজার ১২৫ কোটি এবং ডিসেম্বরে লেনদেন হয়েছিল ৯৬ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। আর জানুয়ারি মাসে ১ লাখ ৬৯৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে কিছুটা কমে লেনদেন হয় ৯৭ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। আর সর্বশেষ মার্চে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত