রোকন উদ্দীন, ঢাকা
আজ ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিচ্ছেন। এই শপথের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হচ্ছে, যা ২০২৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, এই সময়ে ট্রাম্প বিশ্বরাজনীতিতেও শক্তিশালী প্রভাব ফেলবেন।
ট্রাম্প এরই মধ্যে কর হ্রাস, বিদেশি পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপ এবং অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা জানিয়েছেন, যা মূলত দেশের অর্থনীতি চাঙা করা এবং জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার উদ্দেশ্যে। বিশেষত, আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এমন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য সম্পর্কের দূরত্ব আরও বাড়াতে পারে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়লে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে, যা বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ হতে পারে।
বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জিং হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে; কারণ, বাংলাদেশ এরই মধ্যে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে মার্কিন বাজারে পণ্য রপ্তানি করছে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি কৃষি, চামড়া, ওষুধ, আসবাবসহ ১০-১১টি খাতে আরও বেশি প্রবেশের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের রপ্তানি আয়কে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে।
সম্ভাবনার প্ল্যাটফর্মে দরকার প্রস্তুতির
তবে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বাড়াতে পারলেই এই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব বলে দাবি করেন খাতসংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, এমনিতেই দেশের শিল্প খাত নানা সংকট ও জটিলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রধান সমস্যা হিসেবে গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘাটতি, দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের অভাব, উৎপাদনে বাধা এবং রাজস্ব নীতির ত্রুটিগুলো উঠে এসেছে। এসবের সঙ্গে রয়েছে দক্ষ জনবলের অভাব। এতে চামড়া, পাট, চা, প্লাস্টিকসহ অনেক খাত টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এমনকি পোশাক খাতও নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে। এর মধ্যে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির চাপ এবং রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোয় পোশাকপণ্যের দাম কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। এই সংকটগুলো কাটিয়ে ওঠা জরুরি, যাতে শিল্প খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারে এবং রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়ানো যায়। এর জন্য সময় থাকতেই সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ দরকার, যাতে সম্ভাবনার এসব খাত বিশ্ববাজারে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা সক্ষমতা বাড়াতে পারলে সামনের দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি চাহিদার পণ্য রপ্তানি করে বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগানো সম্ভব। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের ১ নম্বর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে। একইভাবে অন্যান্য পণ্যও সম্ভাবনা জানান দিতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা পোশাকের প্রায় ২৫ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যায়। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৭ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা ২০১৬ সালের ৫ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট পণ্য রপ্তানি থেকে আয় করেছে ৪৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে পোশাক খাতের অবদান ৮১ দশমিক ২৪ শতাংশ, অর্থাৎ ৩৬ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। এসব পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের শক্তিশালী অবস্থানকে তুলে ধরে।
ট্রেডিং ইকোনমিকসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে চীন ৪৪৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাকের রপ্তানি ছিল ১৭ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার; যা ২০১৭ সালে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার সময় চীনের পোশাক রপ্তানি ছিল ২৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬ সালের পর থেকে চীনের পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমেছে, যা এই খাতে তাদের অবস্থান দুর্বল করেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে পণ্য আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তাহলে ক্রেতারা বাড়তি খরচ এড়িয়ে চীন থেকে পণ্য আমদানি করবেন না। সেই পরিস্থিতিতে তাঁরা বিকল্প বাজার খুঁজে নেবেন।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দীন রুবেল বলেন, ‘যেসব ক্রেতা আগে চীন থেকে পণ্য নিত, তাদের অনেকে এখন আমাদের দেশ থেকে পণ্য নিতে আগ্রহী। কিন্তু আমাদের সামনে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে—জ্বালানি সংকট, ব্যাংকিং সংকট এবং চীনের মানের পণ্য তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাব। এসব সমস্যার কারণে যদিও আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার রয়েছে, আমরা এখনো ৪০ বিলিয়ন ডলারও পার করতে পারছি না।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন তৈরি পোশাক ছাড়াও খেলনা, আসবাব, সবজি, লাইটিং অ্যাকসেসরিস, প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড বিল্ডিং, প্লাস্টিক, যানবাহন, অপটিক্যাল, ফটো, প্রযুক্তিগত, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, লোহা বা ইস্পাত, জুতা, গাইটার, জৈব রাসায়নিক, ফার্মাসিউটিক্যাল, চামড়াসহ মোট ৯৭ ধরনের পণ্য রপ্তানি করে।
বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্ট এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের চাহিদা থাকলেও আমরা তা ধরতে পারছি না। প্রথমত, সরকারি উদ্যোগের অভাবে কোয়ারেন্টাইন সার্টিফিকেট গ্রহণ করা হয় না। দ্বিতীয়ত, প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় অতিরিক্ত ফ্রেইড খরচ এবং বিমানসংকট রয়েছে, বিশেষ করে প্যারিশেবল আইটেমের জন্য। এই সমস্যাগুলোর কারণে আমাদের বাজার ধরে রাখা কঠিন হচ্ছে, আর ইউরোপে চাহিদা অনুযায়ী সবজি রপ্তানিও সম্ভব হচ্ছে না।’
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। এই রপ্তানির তালিকায় পোশাক ছাড়াও মোট ৮৯ ধরনের পণ্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ২০২৩ সালে পোশাকের পর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে হেডগিয়ার (৪০৯ মিলিয়ন), জুতা-গাইটার (২২৫ মিলিয়ন), পাখির পালক-কৃত্রিম ফুল-মানুষের চুল (১২৮ মিলিয়ন), চামড়াজাত পণ্য (৯৬ মিলিয়ন)। এ ছাড়া ভোগ্যপণ্য, ফার্নিচার, প্লাস্টিক পণ্য, ওষুধ সামগ্রী, চা, সবজি, তামাক পণ্য, বিভিন্ন ধরনের তৈরি পণ্য, পেপার বোর্ড, গ্লাস সামগ্রী, ইলেকট্রিক-ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম ও কার্পেট-ফ্লোরম্যাট ইত্যাদি পণ্যও রপ্তানি হয়। এসব খাত থেকে ১০-৮০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
চামড়াশিল্পকে হাজারীবাগ থেকে হেমায়েতপুরে বিসিক শিল্পনগরীতে স্থানান্তর করা হলেও সিইটিপির পরিশোধন ক্ষমতা এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া ট্যানারিগুলোর যথাযথ প্রস্তুতির অভাবে ট্যানারিশিল্প কমপ্লায়েন্ট শিল্প হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এর ফলে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সনদ না থাকায় এই খাত থেকে রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে চামড়াশিল্পের কাঁচামালের পর্যাপ্ত জোগান থাকলেও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বিশ্ববাজারে দেশের অংশীদারি মাত্র ১ শতাংশ। বর্তমানে দেশে শুধু ৬টি কোম্পানির এলডব্লিউজির সনদ রয়েছে।
আজ ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিচ্ছেন। এই শপথের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হচ্ছে, যা ২০২৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, এই সময়ে ট্রাম্প বিশ্বরাজনীতিতেও শক্তিশালী প্রভাব ফেলবেন।
ট্রাম্প এরই মধ্যে কর হ্রাস, বিদেশি পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপ এবং অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা জানিয়েছেন, যা মূলত দেশের অর্থনীতি চাঙা করা এবং জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার উদ্দেশ্যে। বিশেষত, আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এমন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য সম্পর্কের দূরত্ব আরও বাড়াতে পারে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়লে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে, যা বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ হতে পারে।
বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জিং হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে; কারণ, বাংলাদেশ এরই মধ্যে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে মার্কিন বাজারে পণ্য রপ্তানি করছে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি কৃষি, চামড়া, ওষুধ, আসবাবসহ ১০-১১টি খাতে আরও বেশি প্রবেশের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের রপ্তানি আয়কে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে।
সম্ভাবনার প্ল্যাটফর্মে দরকার প্রস্তুতির
তবে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বাড়াতে পারলেই এই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব বলে দাবি করেন খাতসংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, এমনিতেই দেশের শিল্প খাত নানা সংকট ও জটিলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রধান সমস্যা হিসেবে গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘাটতি, দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের অভাব, উৎপাদনে বাধা এবং রাজস্ব নীতির ত্রুটিগুলো উঠে এসেছে। এসবের সঙ্গে রয়েছে দক্ষ জনবলের অভাব। এতে চামড়া, পাট, চা, প্লাস্টিকসহ অনেক খাত টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এমনকি পোশাক খাতও নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে। এর মধ্যে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির চাপ এবং রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোয় পোশাকপণ্যের দাম কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। এই সংকটগুলো কাটিয়ে ওঠা জরুরি, যাতে শিল্প খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারে এবং রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়ানো যায়। এর জন্য সময় থাকতেই সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ দরকার, যাতে সম্ভাবনার এসব খাত বিশ্ববাজারে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা সক্ষমতা বাড়াতে পারলে সামনের দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি চাহিদার পণ্য রপ্তানি করে বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগানো সম্ভব। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের ১ নম্বর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে। একইভাবে অন্যান্য পণ্যও সম্ভাবনা জানান দিতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা পোশাকের প্রায় ২৫ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যায়। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৭ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা ২০১৬ সালের ৫ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট পণ্য রপ্তানি থেকে আয় করেছে ৪৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে পোশাক খাতের অবদান ৮১ দশমিক ২৪ শতাংশ, অর্থাৎ ৩৬ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। এসব পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের শক্তিশালী অবস্থানকে তুলে ধরে।
ট্রেডিং ইকোনমিকসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে চীন ৪৪৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাকের রপ্তানি ছিল ১৭ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার; যা ২০১৭ সালে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার সময় চীনের পোশাক রপ্তানি ছিল ২৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬ সালের পর থেকে চীনের পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমেছে, যা এই খাতে তাদের অবস্থান দুর্বল করেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে পণ্য আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তাহলে ক্রেতারা বাড়তি খরচ এড়িয়ে চীন থেকে পণ্য আমদানি করবেন না। সেই পরিস্থিতিতে তাঁরা বিকল্প বাজার খুঁজে নেবেন।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দীন রুবেল বলেন, ‘যেসব ক্রেতা আগে চীন থেকে পণ্য নিত, তাদের অনেকে এখন আমাদের দেশ থেকে পণ্য নিতে আগ্রহী। কিন্তু আমাদের সামনে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে—জ্বালানি সংকট, ব্যাংকিং সংকট এবং চীনের মানের পণ্য তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাব। এসব সমস্যার কারণে যদিও আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার রয়েছে, আমরা এখনো ৪০ বিলিয়ন ডলারও পার করতে পারছি না।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন তৈরি পোশাক ছাড়াও খেলনা, আসবাব, সবজি, লাইটিং অ্যাকসেসরিস, প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড বিল্ডিং, প্লাস্টিক, যানবাহন, অপটিক্যাল, ফটো, প্রযুক্তিগত, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, লোহা বা ইস্পাত, জুতা, গাইটার, জৈব রাসায়নিক, ফার্মাসিউটিক্যাল, চামড়াসহ মোট ৯৭ ধরনের পণ্য রপ্তানি করে।
বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্ট এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের চাহিদা থাকলেও আমরা তা ধরতে পারছি না। প্রথমত, সরকারি উদ্যোগের অভাবে কোয়ারেন্টাইন সার্টিফিকেট গ্রহণ করা হয় না। দ্বিতীয়ত, প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় অতিরিক্ত ফ্রেইড খরচ এবং বিমানসংকট রয়েছে, বিশেষ করে প্যারিশেবল আইটেমের জন্য। এই সমস্যাগুলোর কারণে আমাদের বাজার ধরে রাখা কঠিন হচ্ছে, আর ইউরোপে চাহিদা অনুযায়ী সবজি রপ্তানিও সম্ভব হচ্ছে না।’
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। এই রপ্তানির তালিকায় পোশাক ছাড়াও মোট ৮৯ ধরনের পণ্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ২০২৩ সালে পোশাকের পর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে হেডগিয়ার (৪০৯ মিলিয়ন), জুতা-গাইটার (২২৫ মিলিয়ন), পাখির পালক-কৃত্রিম ফুল-মানুষের চুল (১২৮ মিলিয়ন), চামড়াজাত পণ্য (৯৬ মিলিয়ন)। এ ছাড়া ভোগ্যপণ্য, ফার্নিচার, প্লাস্টিক পণ্য, ওষুধ সামগ্রী, চা, সবজি, তামাক পণ্য, বিভিন্ন ধরনের তৈরি পণ্য, পেপার বোর্ড, গ্লাস সামগ্রী, ইলেকট্রিক-ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম ও কার্পেট-ফ্লোরম্যাট ইত্যাদি পণ্যও রপ্তানি হয়। এসব খাত থেকে ১০-৮০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
চামড়াশিল্পকে হাজারীবাগ থেকে হেমায়েতপুরে বিসিক শিল্পনগরীতে স্থানান্তর করা হলেও সিইটিপির পরিশোধন ক্ষমতা এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া ট্যানারিগুলোর যথাযথ প্রস্তুতির অভাবে ট্যানারিশিল্প কমপ্লায়েন্ট শিল্প হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এর ফলে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সনদ না থাকায় এই খাত থেকে রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে চামড়াশিল্পের কাঁচামালের পর্যাপ্ত জোগান থাকলেও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বিশ্ববাজারে দেশের অংশীদারি মাত্র ১ শতাংশ। বর্তমানে দেশে শুধু ৬টি কোম্পানির এলডব্লিউজির সনদ রয়েছে।
নানা অনিয়মের ফলে ধুঁকছে দেশের পুঁজিবাজার। ধারাবাহিক দরপতনে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা অসংখ্য বিনিয়োগকারী। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুঁজিবাজারে শৃঙ্খলা ফেরার আশা করেছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণের...
৪ ঘণ্টা আগেসামাজিক চাপে নিজের বেকারত্ব আড়াল করতে অনেকেই এই সেবা বেছে নিচ্ছেন। হ্যাংজাউয়ের এক সাবেক ই-কমার্স কর্মী প্রতিদিন ক্যাফেতে বসে চাকরির আবেদন করতেন, তবে পরিবার জানত তিনি এখনো চাকরি করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁদের দুশ্চিন্তায় ফেলতে চাইনি।’
৫ ঘণ্টা আগেচলতি মৌসুমে ১০ লাখ টন চিনি রপ্তানির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। কৃষকদের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিশ্চিত করতে এবং উদ্বৃত্ত চিনি কমানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি উৎপাদক দেশটি।
৬ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ থেকে শিগগির মৌসুমি ফল আমদানি শুরু করবে চীন। এর মধ্যে চলতি বছরই পেয়ারা ও কাঁঠাল রপ্তানির অনুমতি দিতে পারে বেইজিং। এমনটিই জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত।
৮ ঘণ্টা আগে