Ajker Patrika

ডিমের সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণসহ ৬ প্রস্তাব বিপিআইসিসির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ডিমের দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন প্রান্তিক খামারিরা। এমন পরিস্থিতিতে ডিমের সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণসহ ছয়টি প্রস্তাব জানিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবগুলো জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করে বিপিআইসিসি ও ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি)।

বিপিআইসিসির ছয় প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে, সরকারিভাবে ডিম-মুরগির ‘সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য’ নির্ধারণের পাশাপাশি ‘সর্বনিম্ন মূল্য’ নির্ধারণ করতে হবে; কোল্ডস্টোরেজে ডিম সংরক্ষণের সরকারি বাধা প্রত্যাহার করতে হবে; অফ-সিজনে তৃণমূল খামারিদের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে; ফিডের দাম কমাতে হবে; ডিম-মুরগির উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণনবিষয়ক কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে হবে এবং স্বল্প সুদে ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।

ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিম ১০ থেকে সাড়ে ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ঢাকা, ময়মনসিংহসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় খামার পর্যায়ে প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছে গড়ে ৮.৫০ টাকায়; অন্যদিকে টাঙ্গাইল, নরসিংদীসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রি হয়েছে গড়ে প্রায় ৮ টাকায়।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতিটি ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে খামার পর্যায়ে ১০.৫৮ টাকা, পাইকারিতে ১১.০১ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ১১.৮৭ টাকা (সংযুক্তি)। প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ১০.১৯ টাকা। সে হিসাবে প্রতিটি ডিম বিক্রি করে খামারির লোকসান হচ্ছে গড়ে প্রায় ১.৬৯ থেকে ২.১৯ টাকা। ডিমের দৈনিক উৎপাদন সাড়ে ৪ কোটি পিস ধরলে বিগত ২১ দিনে খামারিদের লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৯ থেকে ২০৬ কোটি টাকা। লোকসান সামাল দিতে না পেরে অনেক খামারি মুরগি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন, যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। কারণ, রমজান শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত খুললে চাহিদা বাড়বে, তখন সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হলে দাম বাড়বে।

মসিউর আরও বলেন, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিমের দাম কম। পার্শ্ববর্তী দেশে ডিমের দাম কম বলা হলেও প্রকৃত বিচারে কম নয়, কারণ, তাদের ডিমের দাম ১০% কম হলে ডিমের ওজনও ১৩% কম। তা ছাড়া তারা যে মানের ফিড খাইয়ে ডিম উৎপাদন করে, সে তুলনায় বাংলাদেশের ফিডের মান অনেক ভালো।

ওয়াপসা-বিবির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার প্রামাণিক বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় বাংলাদেশে উৎপাদিত ডিম অনেক নিরাপদ। কারণ, তাদের ফিডে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার ও মিট অ্যান্ড বোনমিল ব্যবহার করা হয়, কিন্তু আমাদের দেশে এগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ।’ ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ফিআব) সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশে খামার থেকে ভোক্তার হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে দামের ব্যবধান থাকে মাত্র ১ টাকা; সেখানে আমাদের দেশে ৩ থেকে ৪ টাকা। তাই ডিমের দাম কমাতে হলে মধ্যস্বত্বভোগীর সংখ্যা কমাতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন অ্যানিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আহকাব) সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলম, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সাধারণ সম্পাদক শাহ্ ফাহাদ হাবীব, গাজীপুর মাওনার খামারি তোফাজ্জল হোসেন, ডায়মন্ড এগ্সের সিইও কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান মেজবাহ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত