জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশেষ গোষ্ঠীকে ঋণ বিতরণে বেশ উদারতা দেখিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। একক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ বিতরণের সীমা ভেঙে আগ্রাসী অর্থায়ন করেছে ব্যাংকটি। বেক্সিমকো, এস আলম, এননটেক্সসহ ২৩টি গ্রুপ ও প্রতিষ্ঠানে জনতা ব্যাংকের দেওয়া ঋণ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ৭৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণ ছিল ৯১ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। এই সময়ে বহুল আলোচিত বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ২০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
বেক্সিমকোর পরেই জনতা ব্যাংকের ঋণের একক বড় গ্রাহক চট্টগ্রামভিত্তিক আলোচিত ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলম। গ্রুপটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে জনতা ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ৭ হাজার ৮৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ১ হাজার ২১৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
ব্যাংক খাতের ঋণ কেলেঙ্কারির আরেক আলোচিত নাম এননটেক্স। এই গ্রুপও জনতা ব্যাংক থেকে ৭ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের প্রায় শতভাগই খেলাপির খাতায় চলে গেছে। এননটেক্সে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭ হাজার ৭০৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গত জানুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদে জানান, দেশে শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। শীর্ষ খেলাপির এই তালিকায় ছিল এননটেক্স গ্রুপ, ক্রিসেন্ট গ্রুপ, রতনপুর গ্রুপ, রিম্যাক্স ফুটওয়্যার, লেক্সকো লিমিটেড ও বিআর স্পিনিংয়ের নাম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জনতা ব্যাংক থেকে রিম্যাক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের নেওয়া ১ হাজার ৭৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা ফান্ডেড ঋণের পুরোটাই খেলাপি হয়ে পড়েছে। আর ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ ২ হাজার ৮৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ঋণের মধ্যে ১ হাজার ৮০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকাই খেলাপি। রতনপুর গ্রুপে জনতার ঋণ ১ হাজার ২২৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যার পুরোটাই খেলাপি হয়ে পড়েছে।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাঙ্কা গ্রুপে ১ হাজার ৭১৯ কোটি ৯ লাখ টাকা, ওরিয়ন গ্রুপে ২ হাজার ৮৫৪ কোটি ৪২ লাখ, থার্মেক্স গ্রুপে ১ হাজার ৯৪৪ কোটি ৭৭ লাখ, সিকদার গ্রুপে ৮২৯ কোটি, জনকণ্ঠ গ্রুপে ৭৮৭ কোটি ৪৮ লাখ, মেঘনা সিমেন্টে ৬৭৪ কোটি ৭২ লাখ, লেক্সো লিমিটেডে ৬৫৫ কোটি ৪৭ লাখ, হাবিব হোটেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডে ৬৩৫ কোটি ৪৫ লাখ, আনন্দ শিপইয়ার্ডে ৬১৪ কোটি ৫৪ লাখ এবং বিআর স্পিনিং লিমিটেডে ৫৭৪ কোটি ২২ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। এ ছাড়া চৌধুরী গ্রুপকে ব্যাংকটির দেওয়া ৬৫৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ঋণের মধ্যে ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকাই খেলাপি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঋণ বিতরণের ঐশ্বরিক হাত রয়েছে। মূলত রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি এবং অনিয়মের কারণে নোংরাভাবে ঋণ ছাড় করা হয়। এসব চোখের সামনে ঘটে। যারা অবৈধ সুবিধায় জড়িত, তাদের বিচার করা দরকার। ব্যাংক খাত ঢেলে সাজালে দুর্নীতিমুক্ত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনতা ব্যাংকের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্টের (বিএডিসি) ঋণ ৪ হাজার ৩৭৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ঋণ ৩ হাজার ৬২৩ কোটি ৭৫৭ লাখ টাকা। পাশাপাশি বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ঋণ ২ হাজার ৯২১ কোটি ৩ লাখ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সুগার অ্যান্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের ঋণ ১ হাজার ৬৯১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার বলেন, ‘ব্যাংকটির কিছু পুরোনো ঋণ রয়েছে। সেই ঋণের বোঝা টানতে হচ্ছে। তখন যাঁরা ঋণ দিয়েছেন, সেটা তাঁদের দায়। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকটির বড় ঋণ আদায় অব্যাহত রয়েছে। সামনে একটা অগ্রগতি দেখা যাবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ঋণের তো সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবু কিছু ব্যাংক আগ্রাসী ঋণ দেয়। এটা রীতিমতো আইনের লঙ্ঘন। বাংলাদেশ ব্যাংক অনিয়মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাস করে। কোনো অপরাধী পার পাবে না। আইনের আওতায় এনে ব্যাংক লুটেরাদের বিচার করা হবে।
আরও খবর পড়ুন:
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশেষ গোষ্ঠীকে ঋণ বিতরণে বেশ উদারতা দেখিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। একক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ বিতরণের সীমা ভেঙে আগ্রাসী অর্থায়ন করেছে ব্যাংকটি। বেক্সিমকো, এস আলম, এননটেক্সসহ ২৩টি গ্রুপ ও প্রতিষ্ঠানে জনতা ব্যাংকের দেওয়া ঋণ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ৭৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণ ছিল ৯১ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। এই সময়ে বহুল আলোচিত বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ২০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
বেক্সিমকোর পরেই জনতা ব্যাংকের ঋণের একক বড় গ্রাহক চট্টগ্রামভিত্তিক আলোচিত ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলম। গ্রুপটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে জনতা ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ৭ হাজার ৮৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ১ হাজার ২১৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
ব্যাংক খাতের ঋণ কেলেঙ্কারির আরেক আলোচিত নাম এননটেক্স। এই গ্রুপও জনতা ব্যাংক থেকে ৭ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের প্রায় শতভাগই খেলাপির খাতায় চলে গেছে। এননটেক্সে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭ হাজার ৭০৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গত জানুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদে জানান, দেশে শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। শীর্ষ খেলাপির এই তালিকায় ছিল এননটেক্স গ্রুপ, ক্রিসেন্ট গ্রুপ, রতনপুর গ্রুপ, রিম্যাক্স ফুটওয়্যার, লেক্সকো লিমিটেড ও বিআর স্পিনিংয়ের নাম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জনতা ব্যাংক থেকে রিম্যাক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের নেওয়া ১ হাজার ৭৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা ফান্ডেড ঋণের পুরোটাই খেলাপি হয়ে পড়েছে। আর ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ ২ হাজার ৮৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ঋণের মধ্যে ১ হাজার ৮০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকাই খেলাপি। রতনপুর গ্রুপে জনতার ঋণ ১ হাজার ২২৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যার পুরোটাই খেলাপি হয়ে পড়েছে।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাঙ্কা গ্রুপে ১ হাজার ৭১৯ কোটি ৯ লাখ টাকা, ওরিয়ন গ্রুপে ২ হাজার ৮৫৪ কোটি ৪২ লাখ, থার্মেক্স গ্রুপে ১ হাজার ৯৪৪ কোটি ৭৭ লাখ, সিকদার গ্রুপে ৮২৯ কোটি, জনকণ্ঠ গ্রুপে ৭৮৭ কোটি ৪৮ লাখ, মেঘনা সিমেন্টে ৬৭৪ কোটি ৭২ লাখ, লেক্সো লিমিটেডে ৬৫৫ কোটি ৪৭ লাখ, হাবিব হোটেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডে ৬৩৫ কোটি ৪৫ লাখ, আনন্দ শিপইয়ার্ডে ৬১৪ কোটি ৫৪ লাখ এবং বিআর স্পিনিং লিমিটেডে ৫৭৪ কোটি ২২ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। এ ছাড়া চৌধুরী গ্রুপকে ব্যাংকটির দেওয়া ৬৫৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ঋণের মধ্যে ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকাই খেলাপি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঋণ বিতরণের ঐশ্বরিক হাত রয়েছে। মূলত রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি এবং অনিয়মের কারণে নোংরাভাবে ঋণ ছাড় করা হয়। এসব চোখের সামনে ঘটে। যারা অবৈধ সুবিধায় জড়িত, তাদের বিচার করা দরকার। ব্যাংক খাত ঢেলে সাজালে দুর্নীতিমুক্ত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনতা ব্যাংকের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্টের (বিএডিসি) ঋণ ৪ হাজার ৩৭৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ঋণ ৩ হাজার ৬২৩ কোটি ৭৫৭ লাখ টাকা। পাশাপাশি বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ঋণ ২ হাজার ৯২১ কোটি ৩ লাখ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সুগার অ্যান্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের ঋণ ১ হাজার ৬৯১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার বলেন, ‘ব্যাংকটির কিছু পুরোনো ঋণ রয়েছে। সেই ঋণের বোঝা টানতে হচ্ছে। তখন যাঁরা ঋণ দিয়েছেন, সেটা তাঁদের দায়। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকটির বড় ঋণ আদায় অব্যাহত রয়েছে। সামনে একটা অগ্রগতি দেখা যাবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ঋণের তো সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবু কিছু ব্যাংক আগ্রাসী ঋণ দেয়। এটা রীতিমতো আইনের লঙ্ঘন। বাংলাদেশ ব্যাংক অনিয়মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাস করে। কোনো অপরাধী পার পাবে না। আইনের আওতায় এনে ব্যাংক লুটেরাদের বিচার করা হবে।
আরও খবর পড়ুন:
আসন্ন পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। পাশাপাশি রোজার ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ এই পণ্যের ওপর থাকা অগ্রিম করও পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। তবে খেজুর আমদানির অযৌক্তিক ট্যারিফ ভ্যালু...
৮ ঘণ্টা আগেদেশের বাজারে ফের সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ২২ ক্যারেট সোনার ভরির নতুন দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। দাম বৃদ্ধির কারণ ও বিস্তারিত জানতে পড়ুন।
৮ ঘণ্টা আগেপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন জুতা প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক তিন কোম্পানির কাছে প্রস্তুতকৃত চামড়া বিক্রি করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এপেক্স ট্যানারি লিমিটেড। এ লক্ষ্যে শিগগিরই হবে চুক্তি। চুক্তির আওতায় বছরে ১৬ কোটি টাকার চামড়া বিক্রি করবে এপেক্স ট্যানারি।
৮ ঘণ্টা আগেফলজাত পণ্য রপ্তানির জন্য বিশেষ সুবিধা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফলজাত পাল্প থেকে প্রস্তুত করা জুস ও ড্রিংকস রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানিকারকেরা এখন মোট রপ্তানি আয়ের ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পাবেন। আজ বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ
৮ ঘণ্টা আগে