রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পেছাচ্ছে এক বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ২১: ২৯

রূপপুরে নির্মিত দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ছয় মাস থেকে এক বছর দেরি হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজের শুরুতে সরকারের পরিকল্পনা ছিল দুই ইউনিট বিশিষ্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আনা।

আজ বৃহস্পতিবার রূপপুরে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী জানান ২০২৪ সালের শেষ দিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট বাণিজ্যিক উৎপাদন আসতে পারে।

নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে না আসার কারণ ব্যাখ্যা করে নসরুল হামিদ বলেন, করোনা মহামারির কারণে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ কিছুটা পিছিয়ে গেছে। ফলে কাজ সময়মতো শেষ করা যায়নি। এ ছাড়াও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের কাজও শুরু করতে দেরি হয়েছে। এই সব কারণে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন একটু দেরিতে হবে।

এর আগে গত অক্টোবরে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি উদ্বোধনের দিনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেছিলেন, আগামী বছরের মধ্যেই রূপপুরের প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে তার প্রভাব পড়েছে রাশিয়ার কারিগরি সহায়তায় নির্মিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। যার কারণে কাজ মাঝখানে অনেকটা গতি হারায়। পরে সরকার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেনদরবার করে কাজ শুরু করতে সক্ষম হয়।

বাণিজ্যিক উৎপাদন দেরিতে আসলেও নসরুল হামিদ সামগ্রিক কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘ এই দেরির কারণে কোনো অসুবিধা হবে না। প্রথম ইউনিটের কাজ ৮৭ শতাংশ শেষ হয়েছে।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে রূপপুরের কাজে দেরি হচ্ছে কি না জানতে চাইলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সব কাজ ঠিকমতো হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সমন্বয় করেই কাজ চলছে।’

রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি নিয়ে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট এলেক্সান্দার দেইরি। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণেই জার্মান কোম্পানি সিমেন্স এজি রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

রাশিয়ার জাহাজ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যন্ত্রপাতি এনেও খালাস করতে না পারার কারণ জানতে চাইলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক মো. শওকত আকবর বলেন ‘এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তারা এটা দেখছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে।’

১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নির্মাণ করছে রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট। খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ আছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত