সাক্ষাৎকার

মূল ব্যাংকিংয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ নয়

Thumbnail Image

আজকের পত্রিকা: শুরুতে কেমন সাড়া পেয়েছিলেন? কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছিল?
রিয়াজুল করিম: বর্তমানে এজেন্ট ব্যাংকিং যতটা সহজ, শুরুর দিকে তা অনেকটাই কঠিন ছিল। শুরুতে ধারণাটি বাংলাদেশের জন্য নতুন হওয়ায় জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এ ছাড়া গ্রাম পর্যায়ে তখন ইন্টারনেট-ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং সেবা পরিচালনা সম্ভব ছিল না। বর্তমানে এটি সাধারণ জনগণের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

আজকের পত্রিকা: এই অগ্রগতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
রিয়াজুল করিম: দেশজুড়ে ৩১টি বাণিজ্যক ব্যাংক ২১ হাজারের বেশি এজেন্ট আউটলেটের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা দিয়ে আসছে। যেখানে ২ কোটি গ্রাহকের বিপরীতে আমানতের পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। গ্রাহকের দিক বিবেচনায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের বেশির ভাগই গ্রামের এবং শতকরা ৫১ জন গ্রাহকই নারী। এর মাধ্যমে সঞ্চয়ের পাশাপাশি এসএমই ঋণ, কৃষিঋণ, বৈদেশিক রেমিট্যান্সসহ সব ব্যাংকিং সেবাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাহক ভোগ করতে পারছেন। 

আজকের পত্রিকা: চার্জ বা সেবা মাশুলের দিক থেকে এজেন্ট ব্যাংকিং কতটা গ্রাহকবান্ধব?
রিয়াজুল করিম: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মূল উদ্দেশ্য সবার জন্য ব্যাংকিং সেবা। গ্রাম পর্যায়ের জনগণের কথা ভেবে চার্জ বা সেবা মাশুলের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পরিপূর্ণ গ্রাহকবান্ধব। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক থেকে যেসব চার্জ বা সেবা মাশুল গ্রহণ করা হয়, তার বেশির ভাগই এজেন্ট পেয়ে থাকেন। 

গ্রাম পর্যায়ের জনগণের কথা ভেবে চার্জ বা সেবা মাশুলের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পরিপূর্ণ গ্রাহকবান্ধব। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক থেকে যেসব চার্জ বা সেবা মাশুল গ্রহণ করা হয়, তার বেশির ভাগই এজেন্ট পেয়ে থাকেন। 

আজকের পত্রিকা: স্থানীয়ভাবে একটি পূর্ণ ব্যাংকের শাখার বদলে এজেন্ট ব্যাংক কতটা সফলতার সঙ্গে সেবা দিতে পারছে?
রিয়াজুল করিম: একটি শাখা বা উপশাখার মাধ্যমে যেসব সেবা গ্রাহক পেয়ে থাকেন, এজেন্ট আউটলেট থেকেও প্রায় সব সেবাই গ্রাহককে দেওয়া হয়। এ ছাড়া এজেন্ট স্থানীয় ব্যক্তি হওয়ায় গ্রাহকের গ্রহণযোগ্যতার পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে এবং ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রহীতার পরিচয়ের সঠিকতা নিরূপণ সহজ হয়েছে।

আজকের পত্রিকা: আর্থসামাজিক উন্নয়নে এজেন্ট ব্যাংকিং কতটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারছে?
রিয়াজুল করিম: আর্থসামাজিক উন্নয়নে এজেন্ট ব্যাংকিং বিশদ পরিসরে কাজ করছে। এর মাধ্যমে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। পাঁচ কোটির অধিক সুবিধাভোগী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন আর্থিক সেবা গ্রহণ করছেন। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা ভাতাভোগীরা অতি সহজেই তাঁদের ভাতা উত্তোলন করছেন। এ ছাড়া আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের পরিধি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহর ও গ্রামীণ জনপদে বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিক লেনদেনের পদ্ধতি সহজতর হওয়ায় আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে।

আজকের পত্রিকা: এজেন্ট ব্যাংকিং সংস্কৃতির প্রসার মূল ব্যাংকিংয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কি না, এতে কি ঝুঁকি বাড়ছে?
রিয়াজুল করিম: এজেন্ট ও শাখা ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক ভিন্ন। এজেন্ট মূলত প্রান্তিক পর্যায় নিয়ে কাজ করে থাকে। সম্প্রতি সব রিপোর্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত ও গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে মূল ব্যাংকিংয়েও তা ক্রমবর্ধমান রয়েছে। এজেন্ট গ্রাহকদের সঙ্গে শাখার গ্রাহকদের আন্তলেনদেনের কারণে শাখাগুলোয় আমানত বৃদ্ধি হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত