সাক্ষাৎকার

মাশুল ছাড়াই ৩২ লাখ মানুষ ভাতা তুলছে

আজকের পত্রিকা: বর্তমানে এ সেবাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? 
জিয়াউল হাসান: বর্তমানে দেশের ২ কোটিরও বেশি গ্রাহক বিশেষায়িত এ ব্যাংকিং সেবা উপভোগ করছেন, যার প্রায় ৬৪ লাখ ব্যাংক এশিয়ার। আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকের ৯২ শতাংশই গ্রামীণ জনগোষ্ঠী এবং ৬৩ শতাংশই নারী। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেশব্যাপী ৩২ লাখ সামাজিক সুরক্ষাভোগীর কাছে আমরা ভাতার টাকা পৌঁছে দিচ্ছি। দেশব্যাপী পাঁচ হাজারের বেশি ব্যক্তিক ও প্রাতিষ্ঠানিক, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, সিটি ডিজিটাল সেন্টার, ডিজিটাল পোস্ট অফিস এজেন্ট ও ৫৮ হাজার নিবন্ধিত মাইক্রো মার্চেন্টের মাধ্যমে আমরা গ্রাহককে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিচ্ছি। বর্তমানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং চ্যানেলে গ্রাহকের ডিপোজিটের পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। 

আজকের পত্রিকা: মাশুলের দিক থেকে এজেন্ট ব্যাংকিং কতটা গ্রাহকবান্ধব? 
জিয়াউল হাসান: মাশুলের দিক থেকে এজেন্ট ব্যাংকিং পুরোপুরি গ্রাহকবান্ধব। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নিম্ন আয়ের মানুষের চাহিদা ও সামর্থ্যের দিকে লক্ষ্য রেখে এখানে মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট চার্জ মুক্ত করা হয়েছে। আমাদের মাধ্যমে ৩২ লাখ মানুষ অ্যাকাউন্ট চার্জ ছাড়াই সরকারি বিভিন্ন ভাতার টাকা গ্রহণ করছে। 

নতুন গ্রাহক খুঁজে বের করে ব্যাংকিং পরিষেবার আওতায় নিয়ে আসছে এজেন্ট ব্যাংকিং। উদ্যোক্তা সৃষ্টি করে কোনো একপর্যায়ে তাদেরকে ব্যবসায়িক উন্নততর স্তরে পৌঁছে দিতে ব্যাংকিংয়ের সেবার আওতায় নিয়ে যাচ্ছে। 

আজকের পত্রিকা: স্থানীয়ভাবে পূর্ণাঙ্গ শাখার বদলে এজেন্ট ব্যাংকিং কতটুকু সেবা দিতে পারছে? 
জিয়াউল হাসান: এখানে গ্রাহকের ধরন ও চাহিদাভেদে বিভিন্ন প্রকার ডিপোজিট, ঋণসেবা ও পণ্য রয়েছে। আমরা এজেন্ট ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় সব সেবাই প্রদান করতে পারছি। পারি না শুধু এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট সেবা প্রদান করতে। 

আজকের পত্রিকা: দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এজেন্ট ব্যাংকিং কী ধরনের ভূমিকা রাখছে? 
জিয়াউল হাসান: ব্যক্তির সঞ্চয়, লেনদেন, ঋণপ্রাপ্তি, সরকারি-বেসরকারি সংস্থা প্রদত্ত সেবা গ্রহণসহ যেকোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও তার আর্থিক নিরাপত্তার বলয় সৃষ্টির প্রাথমিক ধাপ হিসেবে সবার আগে দরকার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। আর এ কাজটিকে এগিয়ে নিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এজেন্ট ব্যাংকিং। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বৈধ চ্যানেলে যে পরিমাণ লেনদেন হচ্ছে, আগে সেটা হতো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ পন্থায়। গ্রামীণ মানুষের সঞ্চয় ও ঋণের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং। 

আজকের পত্রিকা: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সম্প্রসারণ কি মূল ব্যাংকিংয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে? 
জিয়াউল হাসান: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সম্প্রসারণ মূল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা সম্প্রসারণে একটি সহায়ক অনুঘটক, প্রতিপক্ষ নয়। স্থানীয়ভাবে নতুন নতুন গ্রাহক খুঁজে বের করে ব্যাংকিং পরিষেবার আওতায় নিয়ে আসছে এজেন্ট ব্যাংকিং। সামগ্রিক ব্যবসায়িক পারিধি সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখছে। আবার উদ্যোক্তা সৃষ্টি করে কোনো একপর্যায়ে তাদেরকে ব্যবসায়িক উন্নততর স্তরে পৌঁছে দিতে শাখা ব্যাংকিংয়ের সেবার আওতায় নিয়ে যাচ্ছে। 

আজকের পত্রিকা: বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মান কোন পর্যায়ের? 
জিয়াউল হাসান: বাংলাদেশে এজেন্ট ব্যাংকিং অন্য দেশের তুলনায় ভিন্ন উচ্চতায়। এখানে এটাকে ক্ষুদ্রপর্যায়ে প্রায় পূর্ণাঙ্গ একটি ব্যাংকিং ব্যবস্থা বলা যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেটা প্রচলিত রয়েছে, সেটাকে ব্যাংকিং না বলে অনেকাংশে টাকা লেনদেনের মাধ্যম বলা যায়। আমাদের সৃষ্ট মডেলটি অন্যত্র অনুসৃত হওয়ার চেষ্টা চলছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত