সাক্ষাৎকার

বৈধ পথে রেমিট্যান্সই অগ্রাধিকার

আজকের পত্রিকা: কেন জনপ্রিয় হচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিং?
মহিবুর রহমান: এজেন্ট আউটলেটগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশই গ্রামে বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে সাধারণত ব্যাংকের শাখা বা উপশাখা নেই। আবার শহরে অবস্থিত এজেন্ট পয়েন্টগুলোও অলিগলিকেন্দ্রিক। ২০২০ সালে করোনার সময় লকডাউন চলাকালে যখন দেশের প্রায় সব ব্যাংকের শাখা বন্ধ ছিল, তখন এজেন্ট ব্যাংকিং বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সরকারপ্রদত্ত ভাতা ও সুবিধাদি পৌঁছে দিতে দারুণ ভূমিকা পালন করে। 

আজকের পত্রিকা: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আপনার ব্যাংকের ভূমিকা কী? 
মহিবুর রহমান: সিটি ব্যাংকে ২০১৭ সালে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব খোলার মাধ্যমে আমানত সংগ্রহ করেছি ৮০০ কোটি টাকা এবং প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছি। অর্থাৎ এজেন্ট ব্যাংকিং থেকে আমাদের সংগৃহীত আমানতের চেয়ে প্রদত্ত ঋণের পরিমাণ প্রায় তিন গুণ। আমরাই দেশের একমাত্র বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে রেমিট্যান্স সুবিধাভোগীদের রেমিট্যান্স লোন দিচ্ছি। এর ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। 

আজকের পত্রিকা: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের বিদ্যমান সেবায় গ্রাহকেরা কী বলছেন? গ্রাহক ও আপনারা সন্তুষ্ট কি? 
মহিবুর রহমান: এজেন্ট ব্যাংকিং আছে বলেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের সিংহভাগ গ্রাহক, যাঁরা ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন, তাঁরা আজ ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় এসে নানা রকম সুবিধা পেয়ে আসছেন। দূরবর্তী ব্যাংক শাখায় না গিয়ে ঝামেলা ছাড়াই সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা বাড়ির পাশে অবস্থিত এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্ট থেকে নিতে পারছেন। এজেন্ট ব্যাংকিং একটি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও গ্রাহকবান্ধব ব্যাংকিং সেবা, যেখানে একজন গ্রাহক তাঁর বায়মেট্রিক বা হাতের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে নিরাপদে হিসাব পরিচালনা ও সব লেনদেন করতে পারছেন। 

আজকের পত্রিকা: গ্রাহক ভোগান্তির অভিযোগ বা নিষ্পত্তি হালনাগাদ বিষয়ে বলুন।
মহিবুর রহমান: সারা দেশে আমাদের দক্ষ আঞ্চলিক কর্মকর্তারা প্রতিটি এজেন্ট পয়েন্ট সার্বক্ষণিক তদারকিতে রাখছেন। আমরা নিয়মিত কাস্টমার এনগেজমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে গ্রাহকদের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে শুনে তা নিষ্পত্তি করছি। এজেন্ট এবং এজেন্ট নিয়োজিত কর্মীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। তা ছাড়া গ্রাহকেরা আমাদের কল সেন্টারে ২৪/৭ অভিযোগ জানাতে পারছেন।

সারা দেশে আমাদের দক্ষ আঞ্চলিক কর্মকর্তারা প্রতিটি এজেন্ট পয়েন্ট সার্বক্ষণিক তদারকিতে রাখছেন। আমরা নিয়মিত কাস্টমার এনগেজমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে গ্রাহকদের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে শুনে তা নিষ্পত্তি করছি। 

আজকের পত্রিকা: নতুন গ্রাহক আকর্ষণে ইনোভেশন নিয়ে কী ভাবছেন?
মহিবুর রহমান: টাকা জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে  স্বয়ংক্রিয় ভাউচার বের হয়ে আসে, সেই সঙ্গে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমেও গ্রাহককে নিশ্চিত করা হয়। ঠিক তেমনি টাকা উত্তোলনেও কোনো চেক বা স্বাক্ষর প্রয়োজন হয় না। গ্রাহকের আমানতের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন অর্থাৎ গ্রাহকের আঙুলের ছাপের পাশাপাশি মোবাইলে টোকেন নাম্বার প্রদানের মাধ্যমে গ্রাহকের লেনদেনকে নিরাপদ করেছি। গ্রাহকদের সচেতন করতে, ভয়েস কলের মাধ্যমে গ্রাহকের হিসাবের স্থিতি ও এজেন্ট পয়েন্টে লেনদেনে সতর্কতা হিসেবে সিস্টেম প্রদত্ত লেনদেন রসিদ গ্রহণ এবং মোবাইলে এসএমএস পরীক্ষা করার পর এজেন্ট পয়েন্ট ত্যাগ করার জন্য অবগত করছি। 

আজকের পত্রিকা: কনভেনশনাল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে অন্তরায় কি না?
মহিবুর রহমান: দেশের বিভিন্ন সেগমেন্টের কাস্টমারদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কনভেনশনাল অর্থাৎ শাখা-উপশাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা, ডিজিটাল অর্থাৎ ইন্টারনেটের সহায়তায় ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা, যা সম্প্রতি অনুমোদিতে হয়েছে এবং এজেন্ট ব্যাংকিং যা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে ইতিমধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে। এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালনায় তেমন কোনো পরিচালনা ব্যয় ছাড়াই প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেভাবে পৌঁছে গেছে, কনভেনশনাল ব্যাংকের মাধ্যমে তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং অসম্ভব। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত