বিকাশ অ্যাপে ৭০০ কোটি টাকার ডিজিটাল ঋণ বিতরণ সিটি ব্যাংকের

বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৪, ১৮: ০৭

মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও শীর্ষ বাণিজ্যিক ব্যাংক সিটি ব্যাংকের হাত ধরে ডিজিটাল ঋণের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে এক বছরের পাইলট প্রকল্প শেষে বাণিজ্যিকভাবে চালু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে সিটি ব্যাংক থেকে ৭০০ কোটি টাকার বেশি ‘ন্যানো লোন’ নিয়েছেন বিকাশের গ্রাহকেরা।

ডিজিটাল লেনদেনের ইকোসিস্টেম উন্নয়নের অংশ হিসেবে ২০২১ সালে সিটি ব্যাংক ও বিকাশের যৌথ উদ্যোগে চালু হয় জামানতবিহীন এই ‘ন্যানো লোন’। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি বিকাশ গ্রাহক প্রায় ৭ লাখ বার এই ঋণ নিয়েছেন। এই গ্রাহকদের অনেকেই একাধিকবার নিয়েছেন ঝামেলাহীন, তাৎক্ষণিক এবং সাশ্রয়ী এই ঋণ। এই ‘ডিজিটাল ন্যানো লোন’ চালুর মূল উদ্দ্যেশ্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী এবং গ্রামে বাস করা গ্রাহকদের কাছে ঋণ সুবিধা পৌঁছে দিয়ে দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও ত্বরান্বিত করা। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী এই ঋণের গ্রাহকদের ২৪ শতাংশ নারী এবং ৫৫ শতাংশ গ্রামে বসবাস করেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে বিকাশের যে গ্রাহকরা ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করেছেন এবং বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করছেন শুধুমাত্র তারাই সিটি ব্যাংকের এই ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচ্য হচ্ছেন। বিকাশ অ্যাকাউন্টে গ্রাহকের লেনদেন পর্যালোচনা এবং সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পলিসির উপর ভিত্তি করে স্বয়ংক্রিয় ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে গ্রাহকের ঋণ পাওয়ার উপযুক্ততা এবং ঋণের পরিমাণ নির্ধারিত হচ্ছে।

ঋণ পাওয়ার জন্য বিবেচ্য গ্রাহকেরা বিকাশ অ্যাপের ‘লোন’ আইকনে ট্যাপ করে মাত্র কয়েক ক্লিকেই সিটি ব্যাংক থেকে তাৎক্ষণিক পেয়ে যাচ্ছেন ৫০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ‘ন্যানো লোন’। এজন্য যেতে হচ্ছে না কোনো অফিসে, কোনো নথিতে লাগছে না স্বাক্ষরও, এমনকি প্রয়োজন হচ্ছে না কোনো নমিনি বা জামিনদারের। এই ঋণের মেয়াদ সর্বোচ্চ তিন মাস এবং প্রযুক্তির সহায়তায় দৈনিক হারে সুদ নির্ধারিত হয়।

এই ‘ন্যানো লোন’ কর্মসূচি নিয়ে সিটি ব্যাংক-এর হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং অরূপ হায়দার বলেন, “গতানুগতিক পদ্ধতিতে আমরা যেখানে ১৫ বছরে মাত্র ৩ লাখ বার লোন দিতে পেরেছি, সেখানে ২ বছরেরও কম সময়ে দিতে পেরেছি ৭ লাখ বার, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও গর্বের বিষয়।”

বিকাশের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ বলেন, ‘বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে গ্রহণ ও পরিশোধযোগ্য সিটি ব্যাংকের এই জামানতবিহীন ঋণ দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে বিবেচ্য হচ্ছে একটি যুগান্তকারী সংযোজন হিসেবে। এর ফলে ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা বিশাল এক জনগোষ্ঠী ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা অর্জন করলেন, যা তাদের দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনে এনে দিয়েছে আরও স্বাধীনতা ও সক্ষমতা। এই ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ২০ হাজার টাকা হলেও, ভবিষ্যতে ধারাবাহিক ভাবে এই সীমা বাড়ানোর জন্য কাজ করছি আমরা।’

বিকাশ অ্যাপ দিয়ে সিটি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ এবং পরিশোধের পদ্ধতি:
গ্রাহককে শুরুতেই দেখে নিতে হবে তিনি ঋণ পাওয়ার জন্য উপযুক্ত কিনা। ঋণের জন্য বিবেচ্য গ্রাহক বিকাশ অ্যাপের ‘লোন’ আইকনে ট্যাপ করে কত টাকা ঋণ পাবেন তা দেখতে পারবেন। পরবর্তী ধাপে সিটি ব্যাংক অনুমোদিত সীমার মধ্যে কাঙ্ক্ষিত ঋণের পরিমাণ লিখতে হবে এবং শর্তাবলিতে সম্মতি দিতে হবে। এরপর বিকাশ পিন দিলে সঙ্গে সঙ্গেই বিকাশ অ্যাকাউন্টে ঋণের টাকা পেয়ে যাবেন যা গ্রাহককে তিনটি মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। ঋণ নেওয়ার পর নির্ধারিত তারিখে বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঋণের কিস্তি পরিশোধ হয়ে যাবে। অথবা, ঋণ গ্রহীতা মেয়াদপূর্তির আগেও নিজ থেকে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন এবং সে ক্ষেত্রে তাঁকে শুধুমাত্র সেই কদিনের জন্যই সুদ বহন করতে হবে। অগ্রিম নিষ্পত্তির জন্য দিতে হবে না কোনো বাড়তি খরচ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত