মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা
বর্তমান বাজারে হস্তশিল্পীদের তৈরি ব্যাগ, ঝুড়ি, মৃৎপাত্র, নকশি কাঁথাসহ বিভিন্ন পণ্যের কদর ধীরে ধীরে বাড়ছে। এ খাতে বিনিয়োগেও তাই এগিয়ে আসছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। এমনই একজন সুরাইয়া ইয়াসমিন, যাঁর উদ্যোগের নাম—সুকন্যা।
যশোরের মেয়ে হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই সুরাইয়া ইয়াসমিন দেখেছেন সুইয়ের একেকটি ফোঁড়ে কী করে একটু একটু করে আকার পায় একেকটি নকশিকাঁথা। সেই থেকে সুই-সুতার প্রতি আগ্রহ; সখ্যও গড়ে ওঠে দ্রুত। শৈশবেই সুই-সুতার খেলায় নিবিষ্ট হওয়ায় মোটামুটি সব ধরনের সেলাই পারেন সুরাইয়া। তাই সুযোগ পাওয়ামাত্র শুরু করেন উদ্যোক্তা জীবন, যার একমাত্র না হলেও মূল জ্বালানি কারুশিল্প। নিজের এই উদ্যোগের নাম দেন—সুকন্যা।
সুরাইয়ার বেড়ে ওঠা যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা গ্রামে। যশোরের শেখ আকিজউদ্দীন হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি পাস করেন যশোরের ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে। আর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স পাস করে একই বিভাগে তিনি স্নাতকোত্তর পর্যায়ে রয়েছেন।
স্বাধীনভাবে নিজেকে দাঁড় করানোর লক্ষ্য থেকেই সুকন্যার যাত্রা। চারু ও কারুশিল্পের প্রতি ভালোবাসা ছিল সুরাইয়ার সব সময়ই। বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে এসে কিছু একটা করার ইচ্ছা প্রবল হয় সুরাইয়ার। কারুশিল্পের প্রতি ভালো লাগা থেকে অনলাইনে কেনাকাটার মাধ্যম ‘সুকন্যা’-এর যাত্রা শুরু করেন। শুরুর দিকে ‘সুকন্যা’ শুরু হয়েছিল হাতে আঁকা টিপ দিয়ে। এর পর ধীরে ধীরে হাতে তৈরি গয়না, হাতে আঁকা পোশাকের পরিধি দিনকে দিন বাড়তে থাকে।
২০১৮ সালের ১ আগস্ট অল্প কিছু টাকা নিয়ে শুরু হয় ‘সুকন্যা’-এর যাত্রা। যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা গ্রামের নারীদের হাতে ‘সুকন্যা’-এর পণ্য তৈরি হয়। বর্তমানে সুকন্যার সঙ্গে ৩০ জন কর্মী যুক্ত। তাঁরা মূলত সূচিশিল্প নিয়ে কাজ করেন। গাছপালা, লতা-পাতা, ফুল-ফল প্রভৃতি সুই-সুতার মাধ্যমে সেলাইয়ে ফুটিয়ে তোলেন তাঁরা। বলা যায় প্রকৃতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করেন ‘সুকন্যা’-এর কর্মীরা। বর্তমানে এই কর্মীদের বেতন পরিশোধের পর ‘সুকন্যা’ থেকে সুরাইয়ার মাসে ১২-১৫ হাজার টাকা লাভ হয়।
‘সুকন্যা’-এর শুরুর গল্প তো জানা গেল। জানা গেল এর বিস্তার সম্পর্কেও। কিন্তু এত কিছু থাকতে উদ্যোক্তার মতো একটা চ্যালেঞ্জিং জীবনের দিকে কেন গেলেন সুরাইয়া—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নেতৃত্ব বিষয়টা আমি পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকে ক্লাসে নেতৃত্ব দেওয়া বা মঞ্চে কাজ করতে ভালো লাগত। উদ্যোক্তার জীবনটাকে আমার কাছে এক ধরনের প্রতিযোগিতার জীবন মনে হয়। চ্যালেঞ্জ নিতে আমি পছন্দ করি। এ ছাড়া নানা রকম শিল্পকর্ম নিয়ে কাজ করতে আমার বেশ ভালো লাগে। আর এমনিতেই ভালো লাগার জায়গা থেকে আমি দেশীয় হস্তশিল্পের পণ্য সংরক্ষণ করতে চাই।’
‘সুকন্যা’ কী তৈরি করে? এক কথায় অনেক কিছু। আগেই বলা হয়েছে হাতে আঁকা টিপ দিয়ে যাত্রা শুরু। এখন পণ্যের ধরন ও বৈচিত্র্যে এ তালিকা বেশ দীর্ঘ। এতে আছে শাড়ি, থ্রিপিস, রেডি কুর্তি, পাঞ্জাবি ইত্যাদি। আর গয়না তো আছেই। এখানকার বেশির ভাগ পোশাক সুতি কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। এ ছাড়া ‘সুকন্যা’-এর কর্মীরা ঘর সাজানোর সামগ্রী, যেমন নকশিকাঁথা, কুশন, ওয়ালমেট, পাটের ওপর সূচিকর্মের বিভিন্ন কার্পেট, ইয়োগা ম্যাট, পাপোশ তৈরি করেন। আরেকটি কাজ সুকন্যা করছে—২০-২৫ বছরের পুরোনো নকশিকাঁথা পুনরায় তৈরি করছে তারা।
সুকন্যাতে যারা কাজ করছেন, তাঁরা সবাই গ্রামীণ নারী অথবা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। এদের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের। এখান থেকে হওয়া উপার্জন দিয়ে চলে তাঁদের সংসার। আবার এখানকার শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার খরচ চালান সেলাইয়ের টাকা দিয়ে। নিজের পণ্য-সমাহার নিয়ে সুরাইয়া বলেন, ‘মূলত সূচিশিল্পের পণ্য তৈরি করি আমরা। রাজশাহী সিল্কের ওপর হাতের সেলাই দিয়ে নকশিকাঁথা শাড়ি, থ্রিপিস তৈরি করি। এ ছাড়া হাতে বোনা তাঁতের কাপড়ের ওপর সেলাইয়ের মাধ্যমে লোকশিল্পের নানা মোটিফ তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমরা মূলত পোশাক-পণ্য তৈরি করি। পাশাপাশি শাড়ি, থ্রিপিস, কুর্তি, পাঞ্জাবি, ঘর সাজানোর সামগ্রীও তৈরি করি। এ ছাড়া যশোরের নকশিকাঁথা পরিচিতি বাড়াতে চাই আমরা।’
উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়ে কারও সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সুরাইয়া বলেন, ‘আমার মা সব সময় আমার পাশে ছিলেন। প্রাথমিকভাবে গ্রামের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ, খোঁজ-খবর নেওয়া—সবই মা করতেন। আর্থিকভাবে সহযোগিতাও করেছেন মা। মা ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মারা যান। এখন ছোট বোন সব সময় ছায়ার মতো আমার পাশে আছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষীরা সার্বিকভাবে আমাকে সহযোগিতা করছেন।’
উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন কি-না জানতে চাইলে সুরাইয়া বলেন, ‘চলার পথে প্রায় সময় বিদ্রূপ ও অসম্মানের মুখোমুখি হচ্ছি। অনলাইন উদ্যোক্তা হওয়ার কারণে সাইবার বুলিং এবং নানা ধরনের হয়রানির স্বীকার হতে হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য, বার্তা আসে, যা শুধু নারী উদ্যোক্তা হওয়ার সুবাদে পেতে হয়। বর্তমানে দেশীয় পণ্যের মূল্যায়ন করা হয় কম। একটা হাতের কাজের পণ্য তৈরি করতে যে শ্রম আর উৎপাদন খরচ হয়, তার সঠিক মূল্যায়ন হয় না। অনেকের মধ্যে একটা বদ্ধমূল ধারণা আছে যে, হাতে তৈরি পণ্যের দাম হবে খুবই কম। এ বিষয়টা মাঝেমধ্যে কষ্টের কারণ হয়।’
কিন্তু এসব বাধাবিপত্তিকে অবশ্য পাশ কাটিয়ে চলতে জানেন সুরাইয়া। তাঁর মতে, নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষত এসব মাথায় রেখেই কাজে নামতে হবে। সাহস আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে পথে নামতে হবে। সে পথই গন্তব্যে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমিও এই যাত্রা মাত্র শুরু করেছি। আমাদের সমাজ নারী উদ্যোক্তাদের বড় ব্যবসায়ী হিসেবে গ্রহণ করতে পুরোপুরি প্রস্তুত না। সমাজ, পরিবারের নিয়মের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। সাহস করে উদ্যোগ নিলে কর্তব্যে দৃঢ় থাকলে নারীরা পারে না এমন কিছু নেই।’
স্বপ্ন দেখতে কে না ভালোবাসে। সুকন্যার একটা স্টুডিও করার স্বপ্ন আছে সুরাইয়ার। ‘সুকন্যা’-এর লক্ষ্য গ্রামের প্রান্তিক নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তাদের মজুরির সঠিক মূল্যায়ন করা। গ্রামের নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া অনেক বড় একটা বিষয়। এতে পারিবারিক নির্যাতন কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই গ্রামীণ নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর সুরাইয়া ইয়াসমিন।
বর্তমান বাজারে হস্তশিল্পীদের তৈরি ব্যাগ, ঝুড়ি, মৃৎপাত্র, নকশি কাঁথাসহ বিভিন্ন পণ্যের কদর ধীরে ধীরে বাড়ছে। এ খাতে বিনিয়োগেও তাই এগিয়ে আসছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। এমনই একজন সুরাইয়া ইয়াসমিন, যাঁর উদ্যোগের নাম—সুকন্যা।
যশোরের মেয়ে হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই সুরাইয়া ইয়াসমিন দেখেছেন সুইয়ের একেকটি ফোঁড়ে কী করে একটু একটু করে আকার পায় একেকটি নকশিকাঁথা। সেই থেকে সুই-সুতার প্রতি আগ্রহ; সখ্যও গড়ে ওঠে দ্রুত। শৈশবেই সুই-সুতার খেলায় নিবিষ্ট হওয়ায় মোটামুটি সব ধরনের সেলাই পারেন সুরাইয়া। তাই সুযোগ পাওয়ামাত্র শুরু করেন উদ্যোক্তা জীবন, যার একমাত্র না হলেও মূল জ্বালানি কারুশিল্প। নিজের এই উদ্যোগের নাম দেন—সুকন্যা।
সুরাইয়ার বেড়ে ওঠা যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা গ্রামে। যশোরের শেখ আকিজউদ্দীন হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি পাস করেন যশোরের ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে। আর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স পাস করে একই বিভাগে তিনি স্নাতকোত্তর পর্যায়ে রয়েছেন।
স্বাধীনভাবে নিজেকে দাঁড় করানোর লক্ষ্য থেকেই সুকন্যার যাত্রা। চারু ও কারুশিল্পের প্রতি ভালোবাসা ছিল সুরাইয়ার সব সময়ই। বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে এসে কিছু একটা করার ইচ্ছা প্রবল হয় সুরাইয়ার। কারুশিল্পের প্রতি ভালো লাগা থেকে অনলাইনে কেনাকাটার মাধ্যম ‘সুকন্যা’-এর যাত্রা শুরু করেন। শুরুর দিকে ‘সুকন্যা’ শুরু হয়েছিল হাতে আঁকা টিপ দিয়ে। এর পর ধীরে ধীরে হাতে তৈরি গয়না, হাতে আঁকা পোশাকের পরিধি দিনকে দিন বাড়তে থাকে।
২০১৮ সালের ১ আগস্ট অল্প কিছু টাকা নিয়ে শুরু হয় ‘সুকন্যা’-এর যাত্রা। যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা গ্রামের নারীদের হাতে ‘সুকন্যা’-এর পণ্য তৈরি হয়। বর্তমানে সুকন্যার সঙ্গে ৩০ জন কর্মী যুক্ত। তাঁরা মূলত সূচিশিল্প নিয়ে কাজ করেন। গাছপালা, লতা-পাতা, ফুল-ফল প্রভৃতি সুই-সুতার মাধ্যমে সেলাইয়ে ফুটিয়ে তোলেন তাঁরা। বলা যায় প্রকৃতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করেন ‘সুকন্যা’-এর কর্মীরা। বর্তমানে এই কর্মীদের বেতন পরিশোধের পর ‘সুকন্যা’ থেকে সুরাইয়ার মাসে ১২-১৫ হাজার টাকা লাভ হয়।
‘সুকন্যা’-এর শুরুর গল্প তো জানা গেল। জানা গেল এর বিস্তার সম্পর্কেও। কিন্তু এত কিছু থাকতে উদ্যোক্তার মতো একটা চ্যালেঞ্জিং জীবনের দিকে কেন গেলেন সুরাইয়া—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নেতৃত্ব বিষয়টা আমি পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকে ক্লাসে নেতৃত্ব দেওয়া বা মঞ্চে কাজ করতে ভালো লাগত। উদ্যোক্তার জীবনটাকে আমার কাছে এক ধরনের প্রতিযোগিতার জীবন মনে হয়। চ্যালেঞ্জ নিতে আমি পছন্দ করি। এ ছাড়া নানা রকম শিল্পকর্ম নিয়ে কাজ করতে আমার বেশ ভালো লাগে। আর এমনিতেই ভালো লাগার জায়গা থেকে আমি দেশীয় হস্তশিল্পের পণ্য সংরক্ষণ করতে চাই।’
‘সুকন্যা’ কী তৈরি করে? এক কথায় অনেক কিছু। আগেই বলা হয়েছে হাতে আঁকা টিপ দিয়ে যাত্রা শুরু। এখন পণ্যের ধরন ও বৈচিত্র্যে এ তালিকা বেশ দীর্ঘ। এতে আছে শাড়ি, থ্রিপিস, রেডি কুর্তি, পাঞ্জাবি ইত্যাদি। আর গয়না তো আছেই। এখানকার বেশির ভাগ পোশাক সুতি কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। এ ছাড়া ‘সুকন্যা’-এর কর্মীরা ঘর সাজানোর সামগ্রী, যেমন নকশিকাঁথা, কুশন, ওয়ালমেট, পাটের ওপর সূচিকর্মের বিভিন্ন কার্পেট, ইয়োগা ম্যাট, পাপোশ তৈরি করেন। আরেকটি কাজ সুকন্যা করছে—২০-২৫ বছরের পুরোনো নকশিকাঁথা পুনরায় তৈরি করছে তারা।
সুকন্যাতে যারা কাজ করছেন, তাঁরা সবাই গ্রামীণ নারী অথবা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। এদের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের। এখান থেকে হওয়া উপার্জন দিয়ে চলে তাঁদের সংসার। আবার এখানকার শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার খরচ চালান সেলাইয়ের টাকা দিয়ে। নিজের পণ্য-সমাহার নিয়ে সুরাইয়া বলেন, ‘মূলত সূচিশিল্পের পণ্য তৈরি করি আমরা। রাজশাহী সিল্কের ওপর হাতের সেলাই দিয়ে নকশিকাঁথা শাড়ি, থ্রিপিস তৈরি করি। এ ছাড়া হাতে বোনা তাঁতের কাপড়ের ওপর সেলাইয়ের মাধ্যমে লোকশিল্পের নানা মোটিফ তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমরা মূলত পোশাক-পণ্য তৈরি করি। পাশাপাশি শাড়ি, থ্রিপিস, কুর্তি, পাঞ্জাবি, ঘর সাজানোর সামগ্রীও তৈরি করি। এ ছাড়া যশোরের নকশিকাঁথা পরিচিতি বাড়াতে চাই আমরা।’
উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়ে কারও সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সুরাইয়া বলেন, ‘আমার মা সব সময় আমার পাশে ছিলেন। প্রাথমিকভাবে গ্রামের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ, খোঁজ-খবর নেওয়া—সবই মা করতেন। আর্থিকভাবে সহযোগিতাও করেছেন মা। মা ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মারা যান। এখন ছোট বোন সব সময় ছায়ার মতো আমার পাশে আছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষীরা সার্বিকভাবে আমাকে সহযোগিতা করছেন।’
উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন কি-না জানতে চাইলে সুরাইয়া বলেন, ‘চলার পথে প্রায় সময় বিদ্রূপ ও অসম্মানের মুখোমুখি হচ্ছি। অনলাইন উদ্যোক্তা হওয়ার কারণে সাইবার বুলিং এবং নানা ধরনের হয়রানির স্বীকার হতে হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য, বার্তা আসে, যা শুধু নারী উদ্যোক্তা হওয়ার সুবাদে পেতে হয়। বর্তমানে দেশীয় পণ্যের মূল্যায়ন করা হয় কম। একটা হাতের কাজের পণ্য তৈরি করতে যে শ্রম আর উৎপাদন খরচ হয়, তার সঠিক মূল্যায়ন হয় না। অনেকের মধ্যে একটা বদ্ধমূল ধারণা আছে যে, হাতে তৈরি পণ্যের দাম হবে খুবই কম। এ বিষয়টা মাঝেমধ্যে কষ্টের কারণ হয়।’
কিন্তু এসব বাধাবিপত্তিকে অবশ্য পাশ কাটিয়ে চলতে জানেন সুরাইয়া। তাঁর মতে, নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষত এসব মাথায় রেখেই কাজে নামতে হবে। সাহস আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে পথে নামতে হবে। সে পথই গন্তব্যে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমিও এই যাত্রা মাত্র শুরু করেছি। আমাদের সমাজ নারী উদ্যোক্তাদের বড় ব্যবসায়ী হিসেবে গ্রহণ করতে পুরোপুরি প্রস্তুত না। সমাজ, পরিবারের নিয়মের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। সাহস করে উদ্যোগ নিলে কর্তব্যে দৃঢ় থাকলে নারীরা পারে না এমন কিছু নেই।’
স্বপ্ন দেখতে কে না ভালোবাসে। সুকন্যার একটা স্টুডিও করার স্বপ্ন আছে সুরাইয়ার। ‘সুকন্যা’-এর লক্ষ্য গ্রামের প্রান্তিক নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তাদের মজুরির সঠিক মূল্যায়ন করা। গ্রামের নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া অনেক বড় একটা বিষয়। এতে পারিবারিক নির্যাতন কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই গ্রামীণ নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর সুরাইয়া ইয়াসমিন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি খাতের জীবনবিমা কোম্পানি প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্স দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে পারছে না। তবে সম্প্রতি কোম্পানিটির শেয়ারের দাম হঠাৎ দ্রুতগতিতে বেড়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম না থাকায় কৃষকেরা জমির ইজারার খরচও ওঠাতে পারছেন না। এমনকি অনেক কৃষক আলু সংরক্ষণ করতে চাইলেও হিমাগারে জায়গার সংকট রয়েছে। অনেক কৃষক বুকিং দেওয়ার পরও হিমাগারে আলু রাখতে পারছেন না।
৫ ঘণ্টা আগেদেশের কোথাও চালের সংকট নেই। কিন্তু বাজারে মিনিকেট, নাজিরশাইলসহ বিভিন্ন ধরনের চালের দাম বাড়ছেই। তিন মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম জাতভেদে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
৫ ঘণ্টা আগেচলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাস (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) শেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা কম হয়েছে। যদিও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সামান্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
৬ ঘণ্টা আগে