ফাইভার আয়ের বহুল প্রচলিত অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এই প্ল্যাটফর্মে আঁকাআঁকির কাজ করেন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ। এরই মধ্যে তিনি পেয়েছেন হাজারতম রিভিউ। ৯৯৭টি কাজেই ক্লায়েন্ট পজিটিভ রিভিউ দিয়েছেন। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নাদিম মজিদ।
নাদিম মজিদ
প্রশ্ন: ফাইভারে আপনার জার্নি শুরুর গল্পটা...।
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: ফ্রিল্যান্সিংয়ে আসার আগে একটি কনটেইনার ডিপোতে কাজ করতাম। সেখানে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হতো। কাজেরও ভীষণ চাপ ছিল। এর ওপর ছুটি নেই, বেতন কম—এসব তো ছিলই। এসব কারণে দুবার চাকরি ছেড়েছি। উপায় না পেয়ে আবার যোগ দিয়েছি। ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেকের সফলতার গল্প পড়েছি পত্রিকায়। ইউটিউবে সাক্ষাৎকার দেখেছি। অনেক সফল ফ্রিল্যান্সারের ব্যাপারে জেনেছি, যাঁরা শূন্য থেকে উঠে এসেছেন। তাঁদের দেখেই ঝুঁকি নিয়েছি। এক-দেড় বছরের একটি ব্যাকআপ ম্যানেজ করে কনটেইনার ডিপোর চাকরিটা ছেড়ে দিই। প্রথম দুই মাস ওয়েব ডিজাইন শিখি। আগে থেকেই আমার ছবি আঁকার চর্চা ছিল। এটিকে পেশায় রূপান্তর করতে পুরোদমে শুরু করি আঁকাআঁকি। দিনে ২-৩ ঘণ্টা সময় দেওয়া হতো ইংরেজি শেখার পেছনে। শেখার এই প্রক্রিয়ার মধ্যে বেশ আনন্দই লাগত। আবার মাঝেমধ্যে একটু হতাশও হতাম এই ভেবে, আসলেই কি আমার দ্বারা সম্ভব? আবার ঘুরে দাঁড়াতাম। টি-শার্ট ডিজাইন ইলাস্ট্রেশন শিখি এবং জলরঙের চর্চাও করি। পাশাপাশি ফাইভার সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে মাস দুয়েক সময় দিই। ইউটিউবে ফাইভার কোর্স করি।
এরপর যখন মনে হলো, শুরু করতে পারি। ফাইভারে প্রোফাইল খুলে ঠিকঠাকমতো সাজিয়ে দুটি গিগ সাবমিট করি। একটি টি-শার্ট ডিজাইন ইলাস্ট্রেশন নিয়ে এবং অন্যটি জলরঙের ইলাস্ট্রেশন নিয়ে। গিগ সাবমিট করার অল্প কিছুদিনের মাথায় জলরঙের গিগে প্রথম কাজ পাই। ১২০ ডলারের কাজটি অর্ডার পেয়েছিলাম স্পেন থেকে। ৬টি ছবি এঁকে দিতে হবে। বিষয় ছিল সুচো (জাপানের একধরনের ঐতিহ্যবাহী পানীয়)। ক্লায়েন্ট সুচো নিয়ে বই লিখবেন। তাঁর বইয়ের জন্য ছবিগুলো এঁকে দিতে হবে। অবশ্য দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর কাজটি পাই। কাজ ডেলিভারির সময় নিয়েছিলাম এক সপ্তাহ। ঠিক এর পরদিন অন্য গিগেও অর্ডার পাই, একটি টি-শার্ট ডিজাইন। ক্লায়েন্টকে কাজটি ১২ ঘণ্টার মধ্যে করে দিতে হবে। কাজটি ঠিকঠাকভাবে করে দিলে ক্লায়েন্ট খুশি হয়ে বকশিশ দেয় এবং ফাইভ স্টার রেটিংয়ের সঙ্গে সুন্দর একটি রিভিও দেয়। ওই দিনই টি-শার্ট ডিজাইনের গিগে আরও দুটি কাজ পাই। প্রতিদিনই অর্ডার আসতে থাকে এবং এভাবে চলতে থাকে দুটি গিগে দুটি ভিন্ন ক্যাটাগরির কাজকর্ম।
প্রশ্ন: হাজার রিভিওর মধ্যে ৯৯৭টিতে ক্লায়েন্ট পজিটিভ রিভিউ দিয়েছে। এ দীর্ঘ যাত্রায় কীভাবে কাজের মান ধরে রেখেছেন?
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: ভালো কাজ পাওয়ার পাশাপাশি নিজের অবস্থান ধরে রাখতে ভালো রিভিওর কোনো বিকল্প নেই। সব সময় চেষ্টা করেছি ক্লায়েন্টকে বোঝার, তাদের রিকয়ারমেন্টগুলো ভালোভাবে পড়ার। ক্লায়েন্টরা ঠিক কী চাচ্ছেন, তা বোঝাটা সবচেয়ে বেশি দরকার।
প্রশ্ন: এখন নতুনদের ফাইভারে কাজ পাওয়া অনেক চ্যালেঞ্জিং। তাদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: গত কয়েক বছরে কম্পিটিটর অনেক বেড়েছে। কাজ পাওয়াটা প্রথম দিকে সহজ থাকলেও বর্তমানে অনেক চ্যালেঞ্জিং। মার্কেটপ্লেসগুলোর নিয়মকানুনের জটিলতা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। আজকাল অনেক প্রোফাইলই বাতিল হচ্ছে, অনেক যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়েই ফাইভার প্রোফাইল অ্যাপ্রুভ করছে। কোনো
কোনো ক্যাটাগরিতে কাজ করতে গেলে ইংরেজি দক্ষতার প্রমাণ করতে হয়। উত্তীর্ণ না হলে কাজ করার সুযোগ থাকছে না। পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ারও একটি নির্দিষ্ট সময় দেয়। এত সব জটিলতায় কাজ করাটা চ্যালেঞ্জিং তো বটেই।
নতুনদের বলব, মার্কেটপ্লেসে আসার আগে ভালোভাবে কাজ শিখতে হবে, কমিউনিকেশন স্কিল বাড়াতে হবে এবং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। সেই সঙ্গে ধৈর্যশীল হতে হবে। ইউটিউবে মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ফ্রি কোর্স পাওয়া যায়। একটু সময় দিয়ে কোর্সগুলো করলে মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পাওয়া যাবে।
প্রশ্ন: আপনার পড়াশোনা সম্পর্কে বলুন। এর সঙ্গে কীভাবে ব্যালেন্স রেখে আপওয়ার্কে কাজ করছেন?
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: খুবই সাধারণ পরিবারে জন্মেছি। আমার বয়স যখন সাড়ে তিন বছর, তখন বাবা হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। আমরা তিন ভাই। মায়ের কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের বড় হওয়া। মা প্রচুর কাজ করতেন। যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি, তখন মায়ের কোমরে সমস্যা হয়। এরপর থেকে মা আর কাজ করতে পারতেন না। অভাব-অনটনে দিনকাল যাচ্ছিল। সে সময় পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শিপইয়ার্ডে কাজ করা শুরু করি। বয়স কম বলে দিনে নিত না, যেহেতু শিশুশ্রম নিষিদ্ধ। দিনে চেক করার লোক আসে। তাই রাতে লুকিয়ে কাজ করতাম।
এর দুই বছর পর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা করতাম। সেখান থেকে মাধ্যমিক শেষ করার পর আর ভর্তি হইনি। বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে কাজ করেছি। ১২ ঘণ্টা কঠোর পরিশ্রম করে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয়নি। পরে অনেক বছর বিরতির পর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় ভর্তি হয়ে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করি। তারপর ভাবলাম, যেহেতু আঁকাআঁকি নিয়ে কিছু করতে চাই, কাজের পর যে সময়গুলো হাতে থাকে, সে সময়গুলোতে আঁকাআঁকির চর্চা করা উচিত। এক বন্ধুর অনুরোধে শিল্পকলায় ভর্তি পরীক্ষা দিই এবং ভর্তির সুযোগ পাই। ওখান থেকে চারুকলায় তিন বছরের একটি কোর্স শেষ করি। এর পরপরই ফ্রিল্যান্সিংয়ে আসা। আপাতত ডিজিটাল ইলাস্ট্রেশন এবং ইংলিশ স্পিকিং স্কিল বাড়ানোর পেছনে সময় দিচ্ছি। ডিজিটাল ইলাস্ট্রেশন নিয়ে আমাজনে কাজ করার ইচ্ছা আছে।
প্রশ্ন: ফাইভারের বাইরেও অনেক প্রতিযোগিতাপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। বর্তমান সময়ে ভালো করা কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের কথা বলুন।
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: নতুনদের জন্য ফাইভার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলেও কাজ পাওয়া চ্যালেঞ্জিং। ঠিক একইভাবে অন্যান্য মার্কেটপ্লেসেও তাই। নিজেকে ভালোভাবে তৈরি করে সুন্দর একটি পোর্টফোলিও দাঁড় করাতে পারলে কাজ পাওয়াটা অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়।
ফাইভারের বাইরে আপওয়ার্ক অনেক ভালো মার্কেটপ্লেস। আপওয়ার্কের নিয়মকানুন ভিন্ন। ফাইভারে গিগ খুললে ক্লায়েন্ট নিজেই খুঁজে বের করে হায়ার করে। আপওয়ার্কে ক্লায়েন্টরা জব পোস্ট করে, সেসব পোস্টে সেলাররা কানেক্ট খরচ করে কাজের জন্য আবেদন করতে হয়। একই কাজে অনেকে আবেদন করে। তাদের মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে কাজ দেওয়া হয়। আপওয়ার্ক প্রতি মাসে ১০ কানেক্ট করে ফ্রিতে দেয়। তা দিয়ে বড়জোর দুটি কাজের জন্য আবেদন করা যায়। এর বেশি আবেদন করতে কানেক্ট কিনতে হয়।
অনেক বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সার এই মার্কেটপ্লেসে কাজ করছেন। তারপর ফ্রিল্যান্সার ডট কমও বেশ চমৎকার মার্কেটপ্লেস। তবে নতুনদের জন্য ফাইভার বা আপওয়ার্কই ভালো মাধ্যম হতে পারে। মার্কেটপ্লেসের বাইরেও অনেকে কাজ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে নিজের সব কাজ ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারলে কাজ পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন বেশ ভালো মাধ্যম। টুইটার ও ফেসবুকের মাধ্যমেও অনেকে ক্লায়েন্ট হান্ট করে থাকে। বেশ সফলতার সঙ্গে তারা কাজ করে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রেও ভালো মার্কেটিং জানাটা বেশি জরুরি।
প্রশ্ন: ফাইভারে আপনার জার্নি শুরুর গল্পটা...।
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: ফ্রিল্যান্সিংয়ে আসার আগে একটি কনটেইনার ডিপোতে কাজ করতাম। সেখানে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হতো। কাজেরও ভীষণ চাপ ছিল। এর ওপর ছুটি নেই, বেতন কম—এসব তো ছিলই। এসব কারণে দুবার চাকরি ছেড়েছি। উপায় না পেয়ে আবার যোগ দিয়েছি। ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেকের সফলতার গল্প পড়েছি পত্রিকায়। ইউটিউবে সাক্ষাৎকার দেখেছি। অনেক সফল ফ্রিল্যান্সারের ব্যাপারে জেনেছি, যাঁরা শূন্য থেকে উঠে এসেছেন। তাঁদের দেখেই ঝুঁকি নিয়েছি। এক-দেড় বছরের একটি ব্যাকআপ ম্যানেজ করে কনটেইনার ডিপোর চাকরিটা ছেড়ে দিই। প্রথম দুই মাস ওয়েব ডিজাইন শিখি। আগে থেকেই আমার ছবি আঁকার চর্চা ছিল। এটিকে পেশায় রূপান্তর করতে পুরোদমে শুরু করি আঁকাআঁকি। দিনে ২-৩ ঘণ্টা সময় দেওয়া হতো ইংরেজি শেখার পেছনে। শেখার এই প্রক্রিয়ার মধ্যে বেশ আনন্দই লাগত। আবার মাঝেমধ্যে একটু হতাশও হতাম এই ভেবে, আসলেই কি আমার দ্বারা সম্ভব? আবার ঘুরে দাঁড়াতাম। টি-শার্ট ডিজাইন ইলাস্ট্রেশন শিখি এবং জলরঙের চর্চাও করি। পাশাপাশি ফাইভার সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে মাস দুয়েক সময় দিই। ইউটিউবে ফাইভার কোর্স করি।
এরপর যখন মনে হলো, শুরু করতে পারি। ফাইভারে প্রোফাইল খুলে ঠিকঠাকমতো সাজিয়ে দুটি গিগ সাবমিট করি। একটি টি-শার্ট ডিজাইন ইলাস্ট্রেশন নিয়ে এবং অন্যটি জলরঙের ইলাস্ট্রেশন নিয়ে। গিগ সাবমিট করার অল্প কিছুদিনের মাথায় জলরঙের গিগে প্রথম কাজ পাই। ১২০ ডলারের কাজটি অর্ডার পেয়েছিলাম স্পেন থেকে। ৬টি ছবি এঁকে দিতে হবে। বিষয় ছিল সুচো (জাপানের একধরনের ঐতিহ্যবাহী পানীয়)। ক্লায়েন্ট সুচো নিয়ে বই লিখবেন। তাঁর বইয়ের জন্য ছবিগুলো এঁকে দিতে হবে। অবশ্য দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর কাজটি পাই। কাজ ডেলিভারির সময় নিয়েছিলাম এক সপ্তাহ। ঠিক এর পরদিন অন্য গিগেও অর্ডার পাই, একটি টি-শার্ট ডিজাইন। ক্লায়েন্টকে কাজটি ১২ ঘণ্টার মধ্যে করে দিতে হবে। কাজটি ঠিকঠাকভাবে করে দিলে ক্লায়েন্ট খুশি হয়ে বকশিশ দেয় এবং ফাইভ স্টার রেটিংয়ের সঙ্গে সুন্দর একটি রিভিও দেয়। ওই দিনই টি-শার্ট ডিজাইনের গিগে আরও দুটি কাজ পাই। প্রতিদিনই অর্ডার আসতে থাকে এবং এভাবে চলতে থাকে দুটি গিগে দুটি ভিন্ন ক্যাটাগরির কাজকর্ম।
প্রশ্ন: হাজার রিভিওর মধ্যে ৯৯৭টিতে ক্লায়েন্ট পজিটিভ রিভিউ দিয়েছে। এ দীর্ঘ যাত্রায় কীভাবে কাজের মান ধরে রেখেছেন?
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: ভালো কাজ পাওয়ার পাশাপাশি নিজের অবস্থান ধরে রাখতে ভালো রিভিওর কোনো বিকল্প নেই। সব সময় চেষ্টা করেছি ক্লায়েন্টকে বোঝার, তাদের রিকয়ারমেন্টগুলো ভালোভাবে পড়ার। ক্লায়েন্টরা ঠিক কী চাচ্ছেন, তা বোঝাটা সবচেয়ে বেশি দরকার।
প্রশ্ন: এখন নতুনদের ফাইভারে কাজ পাওয়া অনেক চ্যালেঞ্জিং। তাদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: গত কয়েক বছরে কম্পিটিটর অনেক বেড়েছে। কাজ পাওয়াটা প্রথম দিকে সহজ থাকলেও বর্তমানে অনেক চ্যালেঞ্জিং। মার্কেটপ্লেসগুলোর নিয়মকানুনের জটিলতা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। আজকাল অনেক প্রোফাইলই বাতিল হচ্ছে, অনেক যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়েই ফাইভার প্রোফাইল অ্যাপ্রুভ করছে। কোনো
কোনো ক্যাটাগরিতে কাজ করতে গেলে ইংরেজি দক্ষতার প্রমাণ করতে হয়। উত্তীর্ণ না হলে কাজ করার সুযোগ থাকছে না। পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ারও একটি নির্দিষ্ট সময় দেয়। এত সব জটিলতায় কাজ করাটা চ্যালেঞ্জিং তো বটেই।
নতুনদের বলব, মার্কেটপ্লেসে আসার আগে ভালোভাবে কাজ শিখতে হবে, কমিউনিকেশন স্কিল বাড়াতে হবে এবং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। সেই সঙ্গে ধৈর্যশীল হতে হবে। ইউটিউবে মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ফ্রি কোর্স পাওয়া যায়। একটু সময় দিয়ে কোর্সগুলো করলে মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পাওয়া যাবে।
প্রশ্ন: আপনার পড়াশোনা সম্পর্কে বলুন। এর সঙ্গে কীভাবে ব্যালেন্স রেখে আপওয়ার্কে কাজ করছেন?
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: খুবই সাধারণ পরিবারে জন্মেছি। আমার বয়স যখন সাড়ে তিন বছর, তখন বাবা হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। আমরা তিন ভাই। মায়ের কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের বড় হওয়া। মা প্রচুর কাজ করতেন। যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি, তখন মায়ের কোমরে সমস্যা হয়। এরপর থেকে মা আর কাজ করতে পারতেন না। অভাব-অনটনে দিনকাল যাচ্ছিল। সে সময় পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শিপইয়ার্ডে কাজ করা শুরু করি। বয়স কম বলে দিনে নিত না, যেহেতু শিশুশ্রম নিষিদ্ধ। দিনে চেক করার লোক আসে। তাই রাতে লুকিয়ে কাজ করতাম।
এর দুই বছর পর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা করতাম। সেখান থেকে মাধ্যমিক শেষ করার পর আর ভর্তি হইনি। বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে কাজ করেছি। ১২ ঘণ্টা কঠোর পরিশ্রম করে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয়নি। পরে অনেক বছর বিরতির পর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় ভর্তি হয়ে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করি। তারপর ভাবলাম, যেহেতু আঁকাআঁকি নিয়ে কিছু করতে চাই, কাজের পর যে সময়গুলো হাতে থাকে, সে সময়গুলোতে আঁকাআঁকির চর্চা করা উচিত। এক বন্ধুর অনুরোধে শিল্পকলায় ভর্তি পরীক্ষা দিই এবং ভর্তির সুযোগ পাই। ওখান থেকে চারুকলায় তিন বছরের একটি কোর্স শেষ করি। এর পরপরই ফ্রিল্যান্সিংয়ে আসা। আপাতত ডিজিটাল ইলাস্ট্রেশন এবং ইংলিশ স্পিকিং স্কিল বাড়ানোর পেছনে সময় দিচ্ছি। ডিজিটাল ইলাস্ট্রেশন নিয়ে আমাজনে কাজ করার ইচ্ছা আছে।
প্রশ্ন: ফাইভারের বাইরেও অনেক প্রতিযোগিতাপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। বর্তমান সময়ে ভালো করা কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের কথা বলুন।
মোহাম্মদ ইমতিয়াজ: নতুনদের জন্য ফাইভার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলেও কাজ পাওয়া চ্যালেঞ্জিং। ঠিক একইভাবে অন্যান্য মার্কেটপ্লেসেও তাই। নিজেকে ভালোভাবে তৈরি করে সুন্দর একটি পোর্টফোলিও দাঁড় করাতে পারলে কাজ পাওয়াটা অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়।
ফাইভারের বাইরে আপওয়ার্ক অনেক ভালো মার্কেটপ্লেস। আপওয়ার্কের নিয়মকানুন ভিন্ন। ফাইভারে গিগ খুললে ক্লায়েন্ট নিজেই খুঁজে বের করে হায়ার করে। আপওয়ার্কে ক্লায়েন্টরা জব পোস্ট করে, সেসব পোস্টে সেলাররা কানেক্ট খরচ করে কাজের জন্য আবেদন করতে হয়। একই কাজে অনেকে আবেদন করে। তাদের মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে কাজ দেওয়া হয়। আপওয়ার্ক প্রতি মাসে ১০ কানেক্ট করে ফ্রিতে দেয়। তা দিয়ে বড়জোর দুটি কাজের জন্য আবেদন করা যায়। এর বেশি আবেদন করতে কানেক্ট কিনতে হয়।
অনেক বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সার এই মার্কেটপ্লেসে কাজ করছেন। তারপর ফ্রিল্যান্সার ডট কমও বেশ চমৎকার মার্কেটপ্লেস। তবে নতুনদের জন্য ফাইভার বা আপওয়ার্কই ভালো মাধ্যম হতে পারে। মার্কেটপ্লেসের বাইরেও অনেকে কাজ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে নিজের সব কাজ ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারলে কাজ পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন বেশ ভালো মাধ্যম। টুইটার ও ফেসবুকের মাধ্যমেও অনেকে ক্লায়েন্ট হান্ট করে থাকে। বেশ সফলতার সঙ্গে তারা কাজ করে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রেও ভালো মার্কেটিং জানাটা বেশি জরুরি।
সাইমন সিনেক বিখ্যাত মোটিভেশনাল বক্তা, লেখক ও নেতৃত্ব বিশেষজ্ঞ। যিনি তাঁর বিখ্যাত বই ‘স্টার্ট উইথ হোয়াই’-এর জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। তাঁর বিখ্যাত টেড টক ‘হাউ গ্রেট লিডারস ইন্সপায়ার অ্যাকশন’ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দেখা টেড টকগুলোর একটি। এ লেখায় তাঁর বিখ্যাত কয়েকটি বক্তৃতার সংকলন তুলে ধরা হলো।
১০ দিন আগেছাত্রজীবনে টাকা আয় করার অন্যতম মাধ্যম হলো টিউশন। অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যাঁরা ভালো পড়াতে পারেন, কিন্তু নানা কারণে টিউশনি খুঁজে পান না। টিউশনি পাওয়ার কার্যকর উপায়গুলো...
১৩ দিন আগেচাকরিদাতার কাছে চাকরিপ্রার্থীর প্রথম পরিচয় ঘটে সিভি বা জীবনবৃত্তান্তের মাধ্যমে। সঠিকভাবে লেখা সিভি একজন প্রার্থীকে চাকরির দৌড়ে এগিয়ে রাখে। প্রাসঙ্গিক সিভি প্রস্তুত করতে নিচের কৌশলগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
২০ দিন আগেবর্তমানে শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কর্মসংস্থানের মধ্যে পার্থক্য কমে এসেছে। একসময় যেখানে ভালো চাকরি সফলতার মাপকাঠি ছিল, সেখানে এখন তরুণেরা উদ্যোগী হয়ে নিজে ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী।
২০ দিন আগে