কামরুল হাসান

পুরোনো পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মুহাম্মদ আবদুল হান্নানের প্রতি আমার বিশেষ টান ছিল। কাজের ফাঁকে সময়-সুযোগ পেলেই তাঁর কাছে ছুটে যেতাম গল্প শুনতে। একনিষ্ঠ শ্রোতা পেয়ে তিনিও বৈঠকি ঢঙে গল্প চালিয়ে যেতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁর গল্পগুলো সাধারণ কোনো গল্প ছিল না, ছিল হিরের কুচির মতো, যার পরতে পরতে ছড়ানো থাকত খবরের উপাদান। সংবাদকর্মী হিসেবে সেই গল্প আমাকে আঠার মতো বেঁধে রাখত।
আবদুল হান্নান পান খেতেন কড়া জর্দা দিয়ে। গালে পান না থাকলে তাঁর আলাপই জমত না। আমি সামনে গেলে ‘বও মিয়া’ বলেই একটা পান এমনভাবে মুখে গুঁজে দিতেন, যেন এর চেয়ে সুখ আর কোনো কিছুতে নেই। তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বললে মনে হতো, হুমায়ূন আহমেদের নাটকের চরিত্র সামনে বসা।
প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসা বিএনপি আমলের শেষের দিকে (১৯৯৬) তিনি ছিলেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার। এরপর আসেন এসবিতে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তাঁর পোস্টিং হয় ডিবিতে, ডিসি ডিবি হিসেবে। ডিবিতে তখন একজনই ডিসি ছিলেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় বিএনপি ক্ষমতায় এসে প্রথম যে ১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়, তিনি ছিলেন সেই তালিকায়। যেদিন অবসরে গেলেন, সেদিনও মুখে একটা পান পুরে হাসতে হাসতে অফিস ছাড়লেন।
একদিন তিনি আমাকে একটি অস্ত্রের চালানের গল্প বললেন। তাঁর কাছে তখন কোনো কাগজপত্র ছিল না, স্মৃতিতে যতটুকু ছিল। সেই গল্প শোনার পর লেগে পড়লাম ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে। দিন দশেকের মধ্যে সব তথ্য মোটাতাজা হয়ে গেল। ফিরে এসে তাঁকে যখন সবকিছু খুলে বললাম, শুনে খুব খুশি হলেন। কিন্তু কী কারণে যেন পত্রিকায় সেই রিপোর্টটা ছাপা হলো না। বছর পাঁচেক পর (১৮ মে ২০০৫, প্রথম আলো) সেই রিপোর্ট ছাপা হলো নতুন কর্মস্থলে। আজ ‘আষাঢ়ে নয়’-এ সেই ঘটনা বলি।
১৯৯৬ সালের ২৪ মার্চ। কক্সবাজারে পরিবেশ হঠাৎ গুমোট। বড় একটি অস্ত্রের চালান আসছে এমন একটি আলোচনা চলছে ভেতরে-ভেতরে, কিন্তু পরিষ্কার করে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। পুলিশ ও গোয়েন্দারা নানা দিক থেকে ভাসা ভাসা তথ্য পাচ্ছেন, কিন্তু কিনারা করতে পারছেন না। হঠাৎ স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান ফোন করলেন পুলিশ সুপারের অফিসের নম্বরে। বললেন, চোফলদণ্ডি ইউনিয়নের জেটিঘাটে গভীর রাতে একটি অস্ত্রভর্তি জাহাজ ভিড়ছে। ট্রলার থেকে সেই অস্ত্র ট্রাকে তোলা হবে। এ খবর পেয়েই পুলিশ সুপার যোগাযোগ করেন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে। শুরু করেন অভিযানের প্রস্তুতি।
আবদুল হান্নান আমাকে বলেছিলেন, ঘটনাস্থল ছিল কক্সবাজার শহর থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তরে, মহেশখালীর পূর্ব পাশে। রাত দেড়টার দিকে ঘাটে ভেড়ে অস্ত্রভর্তি দুটি ট্রলার। এর একটু পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। একটি ট্রাক আগে থেকেই সেখানে রাখা ছিল। ট্রলার দুটি ঘাটে ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গে একদল অস্ত্রধারী চারদিকে দাঁড়িয়ে অস্ত্র খালাস শুরু করে। হঠাৎ চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলা হয়। উপায় না দেখে আত্মসমর্পণ করেন ১৩ যুবক, এঁরা কেউ বাংলা জানেন না। জিজ্ঞাসাবাদে বললেন, তাঁরা সবাই নাগাল্যান্ডের বাসিন্দা।
আবদুল হান্নানের সূত্র ধরে কক্সবাজারে গিয়ে সেই ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীকে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম। তাঁরা আমাকে বলেছিলেন, অস্ত্র পরিবহনের জন্য আনা আটক ট্রাক দুটির মালিক ছিলেন বাবুল ও কবির কোম্পানি নামের দুই ভাই। তখনকার স্থানীয় বড়শি বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল কাদের এবং জিপ-মাইক্রো শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মো. কামাল বান্দরবানে চালের বস্তা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ট্রাক দুটি ঈদগাহ এলাকা থেকে ভাড়া করেছিলেন। সে সময় কাদের ও কামালের মধ্যস্থতায় জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসের জন্য ভাড়া করা হয় মাছ ধরার ট্রলার। আর সামনে থেকে অস্ত্রের চালান খালাসের কাজ তদারক করছিলেন ভারতের নাগাল্যান্ডের বিদ্রোহী নেতা সম্বুয়েং। অস্ত্রের চালান ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্বুয়েং পালিয়ে যান। সে সময় অনেকে আমাকে বলেছিলেন, অস্ত্রের চালান আটকের ৮-৯ মাস আগে থেকে তিনি কক্সবাজারের রাখাইনপাড়ায় বসবাস শুরু করেন। সেখানে বিয়েও করেন। পরে ২০০৩ সালে নাগাল্যান্ড পুলিশের গুলিতে সম্বুয়েং মারা যান বলে শুনেছিলাম।
এই অভিযানে থাকা অনেকে আমাকে বলেছিলেন, আটক হওয়া যুবকেরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছিলেন, তাঁরা সবাই নাগাল্যান্ডের উগ্রপন্থী গ্রুপের সদস্য। পুরো টিমের নেতৃত্বে ছিলেন গ্রুপের ব্রিগেডিয়ার পদবিধারী জেমস। নাগাল্যান্ডের উখায় তাঁর বাড়ি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও ১২ জন, যাঁরা নাগা ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা জানতেন না।
তখন আটক উগ্রপন্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছিল যে তাঁরা এই অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন কম্বোডিয়ার খেমাররুজ বিদ্রোহী গ্রুপের কাছ থেকে। এরপর অস্ত্রভর্তি জাহাজটি গভীর সমুদ্রবন্দরে নোঙর করা হয়। এটি তখন পর্যন্ত ছিল দেশের ইতিহাসে প্রথম বড় অস্ত্রের চালান। অস্ত্রভর্তি জাহাজটি থাইল্যান্ডের একটি বন্দর থেকে এসেছিল।
উদ্ধার করা অস্ত্র প্রথমে নিয়ে আসা হয় কক্সবাজার জেলা পুলিশ লাইনসে। সেই চালানে ছিল এসএমজি ৩১২টি, রাইফেল ১১২টি, এলএমজি ৪৮টি, পিস্তল ১৬৮টি, ম্যাগাজিন ৩ হাজার ৫১৫টি, আরআর চায়নিজ ২০টি, মর্টার-৯টি, মর্টার সাইট ৯টি, এলএমজি ড্রাম ম্যাগাজিন ২৪০টি, এসএমজি ম্যাগাজিন ১৭৯টি, এএমজি ৩ হাজার ৯৩৪টি, অস্ত্রের যন্ত্রাংশ ২ বস্তা, এলএমজি-এসএমজি অ্যাম্যুনেশন ৭৬ বস্তা, এসএমজি ম্যাগাজিন ১১ বস্তা, আরআর গোলা ৬৯ বস্তা, হ্যান্ডগ্রেনেড ১৩ বস্তা এবং ৮ বস্তা বিস্ফোরক।
অস্ত্র উদ্ধারের পর চট্টগ্রামের তৎকালীন জিওসি মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দেখে উপস্থিত সবার সামনে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি তখন উপস্থিত পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, এসব অস্ত্র দিয়ে সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড সাজানো সম্ভব। ওই চালান আটকের সময় উপস্থিত একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, অস্ত্র খালাসের সময় ১৩ জন উগ্রপন্থীকে আটক করা হয়েছিল। তাঁদের হাতে তখন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াকিটকি ছিল।
অনুসন্ধানের সময় কক্সবাজার আদালতের সাবেক এপিপি নূরুল ইসলাম আমাকে বলেন, ১৩ জন নাগা বিদ্রোহীকে তখন ৫৪ ধারায় কক্সবাজার আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মেজর জেনারেল (অব.) এম আজিজুর রহমান ২০০৫ সালে আমাকে বলেছিলেন, চোফলদণ্ডির আগে আরও একটি চালান ধরা পড়েছিল। তবে সেটা তত বড় নয়।
অস্ত্রের চালান আটকের পর ১৯৯৬ সালের ২৬ মার্চ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কক্সবাজার শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বিএনপি সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন, কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর এ নিয়ে আর ঘাঁটাঘাঁটি করেননি। এরপর ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম থেকে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান ধরা পড়ে।
১০ ট্রাক অস্ত্রের চালানের তদন্তে বেরিয়ে আসে, সেই চালানের অর্থ জুগিয়েছিল পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। আর তাদের হয়ে চালানের টাকা অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিকে পরিশোধ করেছিলেন দুবাইয়ের এআরওয়াই টিভির মালিক আবদুর রাজ্জাক ইউসুফ। আমার ধারণা, এই চালানের সঙ্গেও তারা থাকতে পারে।
আবদুল হান্নানের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছিল বছরখানেক আগে। কথায় কথায় তাঁকে বলেছিলাম, আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু জেনেছি, শিখেছিও। তিনি হাসতে হাসতে বললেন, শুধু পান খাওয়াটা শিখলেন না।
আরও পড়ুন:

পুরোনো পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মুহাম্মদ আবদুল হান্নানের প্রতি আমার বিশেষ টান ছিল। কাজের ফাঁকে সময়-সুযোগ পেলেই তাঁর কাছে ছুটে যেতাম গল্প শুনতে। একনিষ্ঠ শ্রোতা পেয়ে তিনিও বৈঠকি ঢঙে গল্প চালিয়ে যেতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁর গল্পগুলো সাধারণ কোনো গল্প ছিল না, ছিল হিরের কুচির মতো, যার পরতে পরতে ছড়ানো থাকত খবরের উপাদান। সংবাদকর্মী হিসেবে সেই গল্প আমাকে আঠার মতো বেঁধে রাখত।
আবদুল হান্নান পান খেতেন কড়া জর্দা দিয়ে। গালে পান না থাকলে তাঁর আলাপই জমত না। আমি সামনে গেলে ‘বও মিয়া’ বলেই একটা পান এমনভাবে মুখে গুঁজে দিতেন, যেন এর চেয়ে সুখ আর কোনো কিছুতে নেই। তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বললে মনে হতো, হুমায়ূন আহমেদের নাটকের চরিত্র সামনে বসা।
প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসা বিএনপি আমলের শেষের দিকে (১৯৯৬) তিনি ছিলেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার। এরপর আসেন এসবিতে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তাঁর পোস্টিং হয় ডিবিতে, ডিসি ডিবি হিসেবে। ডিবিতে তখন একজনই ডিসি ছিলেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় বিএনপি ক্ষমতায় এসে প্রথম যে ১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়, তিনি ছিলেন সেই তালিকায়। যেদিন অবসরে গেলেন, সেদিনও মুখে একটা পান পুরে হাসতে হাসতে অফিস ছাড়লেন।
একদিন তিনি আমাকে একটি অস্ত্রের চালানের গল্প বললেন। তাঁর কাছে তখন কোনো কাগজপত্র ছিল না, স্মৃতিতে যতটুকু ছিল। সেই গল্প শোনার পর লেগে পড়লাম ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে। দিন দশেকের মধ্যে সব তথ্য মোটাতাজা হয়ে গেল। ফিরে এসে তাঁকে যখন সবকিছু খুলে বললাম, শুনে খুব খুশি হলেন। কিন্তু কী কারণে যেন পত্রিকায় সেই রিপোর্টটা ছাপা হলো না। বছর পাঁচেক পর (১৮ মে ২০০৫, প্রথম আলো) সেই রিপোর্ট ছাপা হলো নতুন কর্মস্থলে। আজ ‘আষাঢ়ে নয়’-এ সেই ঘটনা বলি।
১৯৯৬ সালের ২৪ মার্চ। কক্সবাজারে পরিবেশ হঠাৎ গুমোট। বড় একটি অস্ত্রের চালান আসছে এমন একটি আলোচনা চলছে ভেতরে-ভেতরে, কিন্তু পরিষ্কার করে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। পুলিশ ও গোয়েন্দারা নানা দিক থেকে ভাসা ভাসা তথ্য পাচ্ছেন, কিন্তু কিনারা করতে পারছেন না। হঠাৎ স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান ফোন করলেন পুলিশ সুপারের অফিসের নম্বরে। বললেন, চোফলদণ্ডি ইউনিয়নের জেটিঘাটে গভীর রাতে একটি অস্ত্রভর্তি জাহাজ ভিড়ছে। ট্রলার থেকে সেই অস্ত্র ট্রাকে তোলা হবে। এ খবর পেয়েই পুলিশ সুপার যোগাযোগ করেন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে। শুরু করেন অভিযানের প্রস্তুতি।
আবদুল হান্নান আমাকে বলেছিলেন, ঘটনাস্থল ছিল কক্সবাজার শহর থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তরে, মহেশখালীর পূর্ব পাশে। রাত দেড়টার দিকে ঘাটে ভেড়ে অস্ত্রভর্তি দুটি ট্রলার। এর একটু পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। একটি ট্রাক আগে থেকেই সেখানে রাখা ছিল। ট্রলার দুটি ঘাটে ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গে একদল অস্ত্রধারী চারদিকে দাঁড়িয়ে অস্ত্র খালাস শুরু করে। হঠাৎ চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলা হয়। উপায় না দেখে আত্মসমর্পণ করেন ১৩ যুবক, এঁরা কেউ বাংলা জানেন না। জিজ্ঞাসাবাদে বললেন, তাঁরা সবাই নাগাল্যান্ডের বাসিন্দা।
আবদুল হান্নানের সূত্র ধরে কক্সবাজারে গিয়ে সেই ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীকে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম। তাঁরা আমাকে বলেছিলেন, অস্ত্র পরিবহনের জন্য আনা আটক ট্রাক দুটির মালিক ছিলেন বাবুল ও কবির কোম্পানি নামের দুই ভাই। তখনকার স্থানীয় বড়শি বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল কাদের এবং জিপ-মাইক্রো শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মো. কামাল বান্দরবানে চালের বস্তা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ট্রাক দুটি ঈদগাহ এলাকা থেকে ভাড়া করেছিলেন। সে সময় কাদের ও কামালের মধ্যস্থতায় জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসের জন্য ভাড়া করা হয় মাছ ধরার ট্রলার। আর সামনে থেকে অস্ত্রের চালান খালাসের কাজ তদারক করছিলেন ভারতের নাগাল্যান্ডের বিদ্রোহী নেতা সম্বুয়েং। অস্ত্রের চালান ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্বুয়েং পালিয়ে যান। সে সময় অনেকে আমাকে বলেছিলেন, অস্ত্রের চালান আটকের ৮-৯ মাস আগে থেকে তিনি কক্সবাজারের রাখাইনপাড়ায় বসবাস শুরু করেন। সেখানে বিয়েও করেন। পরে ২০০৩ সালে নাগাল্যান্ড পুলিশের গুলিতে সম্বুয়েং মারা যান বলে শুনেছিলাম।
এই অভিযানে থাকা অনেকে আমাকে বলেছিলেন, আটক হওয়া যুবকেরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছিলেন, তাঁরা সবাই নাগাল্যান্ডের উগ্রপন্থী গ্রুপের সদস্য। পুরো টিমের নেতৃত্বে ছিলেন গ্রুপের ব্রিগেডিয়ার পদবিধারী জেমস। নাগাল্যান্ডের উখায় তাঁর বাড়ি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও ১২ জন, যাঁরা নাগা ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা জানতেন না।
তখন আটক উগ্রপন্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছিল যে তাঁরা এই অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন কম্বোডিয়ার খেমাররুজ বিদ্রোহী গ্রুপের কাছ থেকে। এরপর অস্ত্রভর্তি জাহাজটি গভীর সমুদ্রবন্দরে নোঙর করা হয়। এটি তখন পর্যন্ত ছিল দেশের ইতিহাসে প্রথম বড় অস্ত্রের চালান। অস্ত্রভর্তি জাহাজটি থাইল্যান্ডের একটি বন্দর থেকে এসেছিল।
উদ্ধার করা অস্ত্র প্রথমে নিয়ে আসা হয় কক্সবাজার জেলা পুলিশ লাইনসে। সেই চালানে ছিল এসএমজি ৩১২টি, রাইফেল ১১২টি, এলএমজি ৪৮টি, পিস্তল ১৬৮টি, ম্যাগাজিন ৩ হাজার ৫১৫টি, আরআর চায়নিজ ২০টি, মর্টার-৯টি, মর্টার সাইট ৯টি, এলএমজি ড্রাম ম্যাগাজিন ২৪০টি, এসএমজি ম্যাগাজিন ১৭৯টি, এএমজি ৩ হাজার ৯৩৪টি, অস্ত্রের যন্ত্রাংশ ২ বস্তা, এলএমজি-এসএমজি অ্যাম্যুনেশন ৭৬ বস্তা, এসএমজি ম্যাগাজিন ১১ বস্তা, আরআর গোলা ৬৯ বস্তা, হ্যান্ডগ্রেনেড ১৩ বস্তা এবং ৮ বস্তা বিস্ফোরক।
অস্ত্র উদ্ধারের পর চট্টগ্রামের তৎকালীন জিওসি মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দেখে উপস্থিত সবার সামনে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি তখন উপস্থিত পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, এসব অস্ত্র দিয়ে সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড সাজানো সম্ভব। ওই চালান আটকের সময় উপস্থিত একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, অস্ত্র খালাসের সময় ১৩ জন উগ্রপন্থীকে আটক করা হয়েছিল। তাঁদের হাতে তখন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াকিটকি ছিল।
অনুসন্ধানের সময় কক্সবাজার আদালতের সাবেক এপিপি নূরুল ইসলাম আমাকে বলেন, ১৩ জন নাগা বিদ্রোহীকে তখন ৫৪ ধারায় কক্সবাজার আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মেজর জেনারেল (অব.) এম আজিজুর রহমান ২০০৫ সালে আমাকে বলেছিলেন, চোফলদণ্ডির আগে আরও একটি চালান ধরা পড়েছিল। তবে সেটা তত বড় নয়।
অস্ত্রের চালান আটকের পর ১৯৯৬ সালের ২৬ মার্চ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কক্সবাজার শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বিএনপি সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন, কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর এ নিয়ে আর ঘাঁটাঘাঁটি করেননি। এরপর ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম থেকে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান ধরা পড়ে।
১০ ট্রাক অস্ত্রের চালানের তদন্তে বেরিয়ে আসে, সেই চালানের অর্থ জুগিয়েছিল পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। আর তাদের হয়ে চালানের টাকা অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিকে পরিশোধ করেছিলেন দুবাইয়ের এআরওয়াই টিভির মালিক আবদুর রাজ্জাক ইউসুফ। আমার ধারণা, এই চালানের সঙ্গেও তারা থাকতে পারে।
আবদুল হান্নানের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছিল বছরখানেক আগে। কথায় কথায় তাঁকে বলেছিলাম, আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু জেনেছি, শিখেছিও। তিনি হাসতে হাসতে বললেন, শুধু পান খাওয়াটা শিখলেন না।
আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৭ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

পুরোনো পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মুহাম্মদ আবদুল হান্নানের প্রতি আমার বিশেষ টান ছিল। কাজের ফাঁকে সময়-সুযোগ পেলেই তাঁর কাছে ছুটে যেতাম গল্প শুনতে। একনিষ্ঠ শ্রোতা পেয়ে তিনিও বৈঠকি ঢঙে গল্প চালিয়ে যেতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁর গল্পগুলো সাধারণ কোনো গল্প ছিল না, ছিল হিরের কুচির মতো, যার পরতে পরতে ছড়ানো থাকত
২৮ মে ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

পুরোনো পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মুহাম্মদ আবদুল হান্নানের প্রতি আমার বিশেষ টান ছিল। কাজের ফাঁকে সময়-সুযোগ পেলেই তাঁর কাছে ছুটে যেতাম গল্প শুনতে। একনিষ্ঠ শ্রোতা পেয়ে তিনিও বৈঠকি ঢঙে গল্প চালিয়ে যেতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁর গল্পগুলো সাধারণ কোনো গল্প ছিল না, ছিল হিরের কুচির মতো, যার পরতে পরতে ছড়ানো থাকত
২৮ মে ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৭ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

পুরোনো পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মুহাম্মদ আবদুল হান্নানের প্রতি আমার বিশেষ টান ছিল। কাজের ফাঁকে সময়-সুযোগ পেলেই তাঁর কাছে ছুটে যেতাম গল্প শুনতে। একনিষ্ঠ শ্রোতা পেয়ে তিনিও বৈঠকি ঢঙে গল্প চালিয়ে যেতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁর গল্পগুলো সাধারণ কোনো গল্প ছিল না, ছিল হিরের কুচির মতো, যার পরতে পরতে ছড়ানো থাকত
২৮ মে ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৭ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১১ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

পুরোনো পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মুহাম্মদ আবদুল হান্নানের প্রতি আমার বিশেষ টান ছিল। কাজের ফাঁকে সময়-সুযোগ পেলেই তাঁর কাছে ছুটে যেতাম গল্প শুনতে। একনিষ্ঠ শ্রোতা পেয়ে তিনিও বৈঠকি ঢঙে গল্প চালিয়ে যেতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁর গল্পগুলো সাধারণ কোনো গল্প ছিল না, ছিল হিরের কুচির মতো, যার পরতে পরতে ছড়ানো থাকত
২৮ মে ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৭ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫