নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘একজন স্বামী পরিত্যক্ত নারী রেনু বেগমকে নির্মমভাবে, মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করে আসামিরা পশু মনোবৃত্তির প্রকাশ ঘটিয়েছেন। একজন মানুষ যখন পশু হয়ে যায় তখন তার জীবন কেড়ে নেওয়াই শ্রেয়। গণপিটুনির নামে মধ্যযুগীয় বর্বরতায় মানুষ হত্যার লাইসেন্স দেওয়া হলে তা এ সমাজের যেকোনো মানুষের জন্য আতঙ্ক ও অনিরাপত্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ২০১৯ সালের ২০ জুলাই তাসলিমা বেগম রেনু নামে একজন দুই সন্তানের মা গণপিটুনিতে নিহতের মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারক এ কথা বলেন।
আজ বুধবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মুর্শেদ আলম এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আদালত বলেন, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হলে এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।
বেলা ১১টা ১০ মিনিটে আদালত চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় পড়া শুরু করেন। শুরুতে বিচারক বলেন, ‘এটা একটা চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। টেলিভিশন, পত্র–পত্রিকায় দেখেছি। ভাগ্যক্রমে আমিই রায় পড়ছি।’
আদালত বলেন, ‘এ মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলামত ভিডিও ফুটেজ। এটা না থাকলে রায়ের দিকে যাওয়া কঠিন হতো। চারটি ভিডিও ক্লিপ আছে। আমি এগুলো দেখাতে চাই।’ পরে আদালত ৫ মিনিট করে দুটি ভিডিও ক্লিপ দেখান। ভিডিও দেখে আদালতে রেনুর বোন নাজমুন নাহার নাজমাকে কাঁদতে দেখা যায়।
এর মাঝে বিচারক বলেন, ‘আবুল কালাম কে?’ তখন হাত তোলেন আসামি আবুল কালাম। বিচারক বলেন, ‘ (ভিডিওতে) দেখছেন আপনাকে?’ আবুল কালাম বলেন, ‘দেখা যায়নি।’ কালামকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘আপনি দেখেন তো কী করছেন!’
কামাল বলেন, ‘আমি সবাইকে বলেছি থামো। দয়া করে থামো। শোনো সে কী বলতে চায়। আমরা শুনতে চাই। কিন্তু কেউ শোনেনি।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘তদন্তে কিছু দুর্বলতা আছে।’
আসামি ইব্রাহিমকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘দেখ তোমাকে চিনতে পারো কি না।’
ভিডিও দেখা শেষ হলে বিচারক বলেন, ‘বেশির ভাগই একজনকে মেরেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে সন্দেহ নেই।’
রায় পড়ার সময় বিচারক তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘কেস ডায়েরি পর্যালোচনা করে দেখা যায় আসামিরা আইন-কানুনের পরোয়া করেননি। আসামি ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লা লাঠি দিয়ে নিহতের দুই হাতে, কাঁধে, বুকে, ঊরু ও পায়েসহ বিভিন্ন জায়গায় নির্দয় ও নিষ্ঠুরভাবে আঘাত করেন এবং মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে আঘাত করতে থাকেন।’
বিচারক বলেন, ‘রেণুকে হত্যা বীভৎস, নারকীয় ও নৃশংস ঘটনা ছিল। যেভাবে গণপিটুনি দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতা এবং সমাজের প্রত্যেক মানুষের জন্য এটি আতঙ্কের।’
ইব্রাহিমের মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রসঙ্গে বিচারক বলেন, ‘আসামি ইব্রাহিম কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া নিষ্ঠুর ও বর্বরভাবে আঘাত করে একজন স্বামী পরিত্যক্তা মহিলাকে হত্যা করেছেন এবং দুই শিশুকে মাতৃহারা করেছেন। নিজের পশু মনোবৃত্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। তাঁর পূর্ব অপরাধ ও শাস্তির রেকর্ড নেই কিন্তু নিহতকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করায় তাকে লঘু শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নেই।’
আদালত আরও বলেন, ‘অপরাধ সংঘটনের সময় তিনি (ইব্রাহিম) যে নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা, উন্মত্ততা ও পৈশাচিকতা প্রদর্শন করেছেন সে ক্ষেত্রে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া সমীচীন হবে না। সংঘটিত অপরাধের মাধ্যমে তিনি নিজেকে সমাজে কলঙ্কিত করেছেন। একজন মানুষ যখন পশু হয়ে যান এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্কে পরিণত হয়ে যান তখন তাঁর জীবন কেড়ে নেওয়াই শ্রেয়।’
উল্লেখ্য, রায়ে ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড এবং রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন ও আসাদুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর আগে আসামি ইব্রাহিমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় এবং অন্যরা জামিনে থেকে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
‘একজন স্বামী পরিত্যক্ত নারী রেনু বেগমকে নির্মমভাবে, মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করে আসামিরা পশু মনোবৃত্তির প্রকাশ ঘটিয়েছেন। একজন মানুষ যখন পশু হয়ে যায় তখন তার জীবন কেড়ে নেওয়াই শ্রেয়। গণপিটুনির নামে মধ্যযুগীয় বর্বরতায় মানুষ হত্যার লাইসেন্স দেওয়া হলে তা এ সমাজের যেকোনো মানুষের জন্য আতঙ্ক ও অনিরাপত্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ২০১৯ সালের ২০ জুলাই তাসলিমা বেগম রেনু নামে একজন দুই সন্তানের মা গণপিটুনিতে নিহতের মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারক এ কথা বলেন।
আজ বুধবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মুর্শেদ আলম এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আদালত বলেন, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হলে এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।
বেলা ১১টা ১০ মিনিটে আদালত চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় পড়া শুরু করেন। শুরুতে বিচারক বলেন, ‘এটা একটা চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। টেলিভিশন, পত্র–পত্রিকায় দেখেছি। ভাগ্যক্রমে আমিই রায় পড়ছি।’
আদালত বলেন, ‘এ মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলামত ভিডিও ফুটেজ। এটা না থাকলে রায়ের দিকে যাওয়া কঠিন হতো। চারটি ভিডিও ক্লিপ আছে। আমি এগুলো দেখাতে চাই।’ পরে আদালত ৫ মিনিট করে দুটি ভিডিও ক্লিপ দেখান। ভিডিও দেখে আদালতে রেনুর বোন নাজমুন নাহার নাজমাকে কাঁদতে দেখা যায়।
এর মাঝে বিচারক বলেন, ‘আবুল কালাম কে?’ তখন হাত তোলেন আসামি আবুল কালাম। বিচারক বলেন, ‘ (ভিডিওতে) দেখছেন আপনাকে?’ আবুল কালাম বলেন, ‘দেখা যায়নি।’ কালামকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘আপনি দেখেন তো কী করছেন!’
কামাল বলেন, ‘আমি সবাইকে বলেছি থামো। দয়া করে থামো। শোনো সে কী বলতে চায়। আমরা শুনতে চাই। কিন্তু কেউ শোনেনি।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘তদন্তে কিছু দুর্বলতা আছে।’
আসামি ইব্রাহিমকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘দেখ তোমাকে চিনতে পারো কি না।’
ভিডিও দেখা শেষ হলে বিচারক বলেন, ‘বেশির ভাগই একজনকে মেরেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে সন্দেহ নেই।’
রায় পড়ার সময় বিচারক তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘কেস ডায়েরি পর্যালোচনা করে দেখা যায় আসামিরা আইন-কানুনের পরোয়া করেননি। আসামি ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লা লাঠি দিয়ে নিহতের দুই হাতে, কাঁধে, বুকে, ঊরু ও পায়েসহ বিভিন্ন জায়গায় নির্দয় ও নিষ্ঠুরভাবে আঘাত করেন এবং মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে আঘাত করতে থাকেন।’
বিচারক বলেন, ‘রেণুকে হত্যা বীভৎস, নারকীয় ও নৃশংস ঘটনা ছিল। যেভাবে গণপিটুনি দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতা এবং সমাজের প্রত্যেক মানুষের জন্য এটি আতঙ্কের।’
ইব্রাহিমের মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রসঙ্গে বিচারক বলেন, ‘আসামি ইব্রাহিম কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া নিষ্ঠুর ও বর্বরভাবে আঘাত করে একজন স্বামী পরিত্যক্তা মহিলাকে হত্যা করেছেন এবং দুই শিশুকে মাতৃহারা করেছেন। নিজের পশু মনোবৃত্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। তাঁর পূর্ব অপরাধ ও শাস্তির রেকর্ড নেই কিন্তু নিহতকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করায় তাকে লঘু শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নেই।’
আদালত আরও বলেন, ‘অপরাধ সংঘটনের সময় তিনি (ইব্রাহিম) যে নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা, উন্মত্ততা ও পৈশাচিকতা প্রদর্শন করেছেন সে ক্ষেত্রে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া সমীচীন হবে না। সংঘটিত অপরাধের মাধ্যমে তিনি নিজেকে সমাজে কলঙ্কিত করেছেন। একজন মানুষ যখন পশু হয়ে যান এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্কে পরিণত হয়ে যান তখন তাঁর জীবন কেড়ে নেওয়াই শ্রেয়।’
উল্লেখ্য, রায়ে ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড এবং রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন ও আসাদুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর আগে আসামি ইব্রাহিমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় এবং অন্যরা জামিনে থেকে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
১৫ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
১৫ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
১৫ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১৯ দিন আগে