শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

রাজধানীর রমনা পার্কে মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন কাপল ব্লগ করা এক দম্পতি। ফোনসেটে ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ছিল। তাতেই হলো বিপদ। তিন ধাপে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় (ভাইরাল) এক দুর্বৃত্ত। এতে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা।
মোবাইল ফোনসেট হারানোয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং ভিডিও-ছবি ভাইরাল ও টাকা আদায়ের ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টারে অভিযোগ করেন। কিন্তু দুই মাসেও ফোনসেট উদ্ধার হয়নি এবং ওই দুর্বৃত্তও ধরা পড়েনি। মোবাইল খোয়া যাওয়ায় এমন বিপদে আরও অনেকে পড়ছেন। তবে বেশির ভাগই পুলিশ পর্যন্ত যান না। আবার অনেকের মোবাইলে থাকে গুরুত্বপূর্ণ নথি। মোবাইল হারালে তাঁরাও পড়েন বিপদে।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্য, রাজধানীতে প্রতি মাসে গড়ে ১১ হাজারের বেশি মোবাইল ফোন চুরি হয়, ছিনতাই হয় বা হারায়। অর্ধেকের বেশি ভুক্তভোগীই এ নিয়ে থানায় আসেন না। যাঁরা জিডি করেন তাঁদের মোবাইল উদ্ধারের সংখ্যাও নামমাত্র। অন্য ব্যস্ততা থাকায় মোবাইল উদ্ধারে পুলিশের সময়ও কম। পুলিশ বলছে, খোয়া যাওয়া দামি মোবাইলের অর্ধেকের বেশি চলে যাচ্ছে বিদেশে। তাই এগুলোর হদিস পাওয়া যায় না। কম দামি মোবাইল আইএমইআই বদলে দেশেই বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। চুরি ও ছিনতাই হওয়া ফোনসেট উদ্ধার করতে না পারা নিয়ে গত সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরে অপরাধ পর্যালোচনা সভায়ও আলোচনা হয়। সভায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম হারানো মোবাইল উদ্ধারে অভিযান জোরদার করতে এবং মোবাইল ছিনতাই/চুরি প্রতিরোধে টহল বাড়াতে পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন।
খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনসংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে কাজ করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। জানতে চাইলে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মাদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মোবাইল হারানো অর্ধেকের বেশি মানুষই থানায় জিডি করেন না। যাঁরা আসেন, তাঁদের মোবাইল ছিনতাই বা চুরি হলেও হারিয়ে গেছে দাবি করে জিডি করেন। জিডি করার কারণে গুরুত্ব কম থাকায় মোবাইল উদ্ধার হয় না। তিনি বলেন, মামলার সংখ্যা কমানোর জন্য থানার পুলিশ জিডি করতে উৎসাহ দিলেও মোবাইল ছিনতাই হলে মামলা করতে হবে। গত বছর সিআইডির কাছে প্রায় দেড় হাজার অভিযোগ আসে। এর মধ্যে ৪৭১টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তিনি যাচাই ছাড়া পুরোনো মোবাইল না কেনারও পরামর্শ দিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীতে মোবাইল ফোন ছিনতাই ও চুরির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ৯ মার্চ ডিএমপির ৫০টি থানায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ৮ মার্চ (শুক্রবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেই মোবাইল ফোন হারানো নিয়ে এসব থানায় ৩৭১টি জিডি হয়। এ হিসাবে প্রতি মাসে মোবাইল খোয়া যাওয়ার সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ হাজার ১৩০টি। আর বছরে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৬০টি। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কর্মব্যস্ত দিনে মোবাইল হারানোর জিডি হয় আরও বেশি। ভুক্তভোগীদের অর্ধেকের বেশি জিডি না করায় মোবাইল খোয়া যাওয়ার প্রকৃত সংখ্যা জিডির দ্বিগুণের বেশি।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনসেটটি যদি অন্য কেউ ব্যবহার করে, তবেই সহজে সেটি উদ্ধার করা সম্ভব, না হলে নয়।
পুলিশ বলছে, মোবাইল ছিনতাই, চুরি বা হারানো গেলে সেই মোবাইলে থাকা সবকিছু চলে যায় অপরাধীর হাতে, যা দিয়ে দুর্বৃত্তরা ভুক্তভোগীকে ব্ল্যাকমেল করে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে মোবাইল হারিয়ে এমন ঘটনারই শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের এক শিক্ষার্থী। শাহবাগ থানায় জিডি করেন। কিন্তু মোবাইলে থাকা ব্যক্তিগত ছবি দিয়ে তাঁকে ভয় দেখিয়ে টাকা চায় এক দুর্বৃত্ত। তিনি শাহবাগ থানায় হয়রানির মামলা করেন। কিন্তু ফল হয়নি। উল্টো ছবি ভাইরাল করার হুমকি পাচ্ছেন এখনো।
এমন চক্রের ২০ জনকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, কুমিল্লা থেকে রাজিব নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছেন তাঁরা। রাজিবের কাজই হলো চোরাই মোবাইল কিনে সেখানে থাকা ছবি দিয়ে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করা। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কোনো ছবি, ভিডিও বা ডকুমেন্ট মোবাইলে সংরক্ষণ না করাই ভালো। এতে মোবাইল হারালেও বাড়তি বিপদের ঝুঁকি থাকে না। তারপরও এমন কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে।
৮ মার্চ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হওয়া জিডি অনুযায়ী, সে দিন সবচেয়ে বেশি মোবাইল খোয়া যায় মিরপুর, মোহাম্মদপুর, শাহবাগ ও খিলগাঁও থানা এলাকায়। সর্বোচ্চ মিরপুরে ২১টি। বাকি তিন থানায় ১৮ থেকে ২০টি। তবে অন্যান্য থানা এলাকায়ও গড়ে আটটি মোবাইল খোয়া গেছে।
পুলিশ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পর্শকাতর ও ব্যক্তিগত এবং প্রয়োজনীয় নথি মোবাইলে না রাখাই ভালো। হারানো মোবাইলে থাকা তথ্য উদ্ধারের বিষয়ে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর জোহা হাসান বলেন, মোবাইলের কোনো তথ্য সংরক্ষণ করলে সেটা জিমেইলের সঙ্গে সংযুক্তি আছে এমন জায়গায় রাখা উচিত। এতে ওই ডিভাউস হারিয়ে গেলেও ই-মেইল আইডি দিয়ে সেটা উদ্ধার করা সম্ভব।
৩-৫ সেকেন্ডে আইএমইআই বদল
ডিবি পুলিশ জানায়, একটি চক্র চোরাই মোবাইলের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি নম্বর বা আইএমইআই নম্বর বদলে ফেলে বাজারে বিক্রি করে। আইএমইআই নম্বর বদল করায় হারানো মোবাইলের অবস্থান শনাক্ত করা যায় না। চক্রটি আইএমইআই নম্বর বদল করতে খুব দক্ষ। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ল্যাপটপের সঙ্গে সংযুক্ত করে মাত্র ৩ থেকে ৫ সেকেন্ডেই তাঁরা আইএমইআই নম্বর বদলে ফেলে। সম্প্রতি রাজধানীতে এমন একটি চক্রের কয়েকজনকে আটক করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করা অপরাধ।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি ও সম্প্রতি অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত (অপরাধ ও অপারেশন) আনোয়ার হোসেন বলেন, হারানো ফোনসেট ফিরে পাওয়াসহ সাইবার অপরাধ ঠেকাতে একটি ‘সাইবার থানা’ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিল সিআইডি। সাইবারে অপরাধ কমাতে এমন একটি থানা চালুতে জোর দিচ্ছে পুলিশ সদর দপ্তর।
দামি মোবাইল পাচার হয় বিদেশে
ডিএমপি ও সিআইডির কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে চুরি হওয়া মোবাইল ফোনসেটগুলো কয়েকটি হাত বদল হয়। খোয়া যাওয়া দামি মোবাইলের অর্ধেকের বেশি চলে যাচ্ছে বিদেশে, আন্তর্জাতিক চক্রের কাছে। সেগুলো পাচার হচ্ছে ভারত, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে। গোয়েন্দা পুলিশ চুরি হওয়া মোবাইল বিদেশে পাচার করা একাধিক চক্রের সন্ধান পেয়েছে। সম্প্রতি বাড্ডা থেকে এমন একটি চক্রের ৯ জন ভারতীয়সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রাজা শাও, পঙ্কজ বিশ্বাস, উৎপল মাইটি, দীপঙ্কর ঘোষ, রাজু দাস, সুজন দাস, এস কে আজগর আলী, লারাইব আশ্রাব, সমরজিৎ দাস এবং বাংলাদেশি মুরাদ গাজী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা বলেছেন, তাঁরা চোরাই ফোনসেট কিনে চক্রের মাধ্যমে ভারতের পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বিক্রি করেন। এসব মোবাইল মূলত অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্র আইফোন, স্যামসাংসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি স্মার্টফোন চুরি করে ভারতে পাচার করছে। সেখান থেকে অন্য দেশে পাচার হচ্ছে। এ কারণে দেশে মোবাইল ফোন হারালে বা চুরি গেলে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অনাগ্রহের মধ্যে ব্যতিক্রম
অনেক জিডি হলেও মোবাইল ফেরত পাওয়া যায় হাতে গোনা। পুলিশের সূত্র বলছে, নানা কাজের ব্যস্ততায় হারানো মোবাইল খুঁজতে পুলিশের আগ্রহ কম থাকে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়মিত কাজ এত বেশি থাকে যে হারানো মোবাইল খোঁজার সময় পান না।
অবশ্য এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও আছে। দেশের বিভিন্ন থানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা মোবাইল উদ্ধারে সাফল্যও দেখিয়েছেন। তাঁদের একজন খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক মিল্টন কুমার দেব দাস। তাঁর দাবি, গত আট-নয় বছরে তিনি ৬ হাজারের বেশি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করেছেন। এই দক্ষতার জন্য অনেকে তাঁকে নামে চেনেন। কেউ কেউ ডাকেন ‘মিল্টন কেডি’ বলে। তিনি বলেন, যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি বা বিদেশে পাচার না হলে হারানো মোবাইল খুঁজে পাওয়া যায়।

রাজধানীর রমনা পার্কে মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন কাপল ব্লগ করা এক দম্পতি। ফোনসেটে ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ছিল। তাতেই হলো বিপদ। তিন ধাপে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় (ভাইরাল) এক দুর্বৃত্ত। এতে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা।
মোবাইল ফোনসেট হারানোয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং ভিডিও-ছবি ভাইরাল ও টাকা আদায়ের ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টারে অভিযোগ করেন। কিন্তু দুই মাসেও ফোনসেট উদ্ধার হয়নি এবং ওই দুর্বৃত্তও ধরা পড়েনি। মোবাইল খোয়া যাওয়ায় এমন বিপদে আরও অনেকে পড়ছেন। তবে বেশির ভাগই পুলিশ পর্যন্ত যান না। আবার অনেকের মোবাইলে থাকে গুরুত্বপূর্ণ নথি। মোবাইল হারালে তাঁরাও পড়েন বিপদে।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্য, রাজধানীতে প্রতি মাসে গড়ে ১১ হাজারের বেশি মোবাইল ফোন চুরি হয়, ছিনতাই হয় বা হারায়। অর্ধেকের বেশি ভুক্তভোগীই এ নিয়ে থানায় আসেন না। যাঁরা জিডি করেন তাঁদের মোবাইল উদ্ধারের সংখ্যাও নামমাত্র। অন্য ব্যস্ততা থাকায় মোবাইল উদ্ধারে পুলিশের সময়ও কম। পুলিশ বলছে, খোয়া যাওয়া দামি মোবাইলের অর্ধেকের বেশি চলে যাচ্ছে বিদেশে। তাই এগুলোর হদিস পাওয়া যায় না। কম দামি মোবাইল আইএমইআই বদলে দেশেই বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। চুরি ও ছিনতাই হওয়া ফোনসেট উদ্ধার করতে না পারা নিয়ে গত সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরে অপরাধ পর্যালোচনা সভায়ও আলোচনা হয়। সভায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম হারানো মোবাইল উদ্ধারে অভিযান জোরদার করতে এবং মোবাইল ছিনতাই/চুরি প্রতিরোধে টহল বাড়াতে পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন।
খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনসংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে কাজ করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। জানতে চাইলে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মাদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মোবাইল হারানো অর্ধেকের বেশি মানুষই থানায় জিডি করেন না। যাঁরা আসেন, তাঁদের মোবাইল ছিনতাই বা চুরি হলেও হারিয়ে গেছে দাবি করে জিডি করেন। জিডি করার কারণে গুরুত্ব কম থাকায় মোবাইল উদ্ধার হয় না। তিনি বলেন, মামলার সংখ্যা কমানোর জন্য থানার পুলিশ জিডি করতে উৎসাহ দিলেও মোবাইল ছিনতাই হলে মামলা করতে হবে। গত বছর সিআইডির কাছে প্রায় দেড় হাজার অভিযোগ আসে। এর মধ্যে ৪৭১টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তিনি যাচাই ছাড়া পুরোনো মোবাইল না কেনারও পরামর্শ দিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীতে মোবাইল ফোন ছিনতাই ও চুরির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ৯ মার্চ ডিএমপির ৫০টি থানায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ৮ মার্চ (শুক্রবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেই মোবাইল ফোন হারানো নিয়ে এসব থানায় ৩৭১টি জিডি হয়। এ হিসাবে প্রতি মাসে মোবাইল খোয়া যাওয়ার সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ হাজার ১৩০টি। আর বছরে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৬০টি। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কর্মব্যস্ত দিনে মোবাইল হারানোর জিডি হয় আরও বেশি। ভুক্তভোগীদের অর্ধেকের বেশি জিডি না করায় মোবাইল খোয়া যাওয়ার প্রকৃত সংখ্যা জিডির দ্বিগুণের বেশি।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনসেটটি যদি অন্য কেউ ব্যবহার করে, তবেই সহজে সেটি উদ্ধার করা সম্ভব, না হলে নয়।
পুলিশ বলছে, মোবাইল ছিনতাই, চুরি বা হারানো গেলে সেই মোবাইলে থাকা সবকিছু চলে যায় অপরাধীর হাতে, যা দিয়ে দুর্বৃত্তরা ভুক্তভোগীকে ব্ল্যাকমেল করে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে মোবাইল হারিয়ে এমন ঘটনারই শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের এক শিক্ষার্থী। শাহবাগ থানায় জিডি করেন। কিন্তু মোবাইলে থাকা ব্যক্তিগত ছবি দিয়ে তাঁকে ভয় দেখিয়ে টাকা চায় এক দুর্বৃত্ত। তিনি শাহবাগ থানায় হয়রানির মামলা করেন। কিন্তু ফল হয়নি। উল্টো ছবি ভাইরাল করার হুমকি পাচ্ছেন এখনো।
এমন চক্রের ২০ জনকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, কুমিল্লা থেকে রাজিব নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছেন তাঁরা। রাজিবের কাজই হলো চোরাই মোবাইল কিনে সেখানে থাকা ছবি দিয়ে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করা। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কোনো ছবি, ভিডিও বা ডকুমেন্ট মোবাইলে সংরক্ষণ না করাই ভালো। এতে মোবাইল হারালেও বাড়তি বিপদের ঝুঁকি থাকে না। তারপরও এমন কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে।
৮ মার্চ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হওয়া জিডি অনুযায়ী, সে দিন সবচেয়ে বেশি মোবাইল খোয়া যায় মিরপুর, মোহাম্মদপুর, শাহবাগ ও খিলগাঁও থানা এলাকায়। সর্বোচ্চ মিরপুরে ২১টি। বাকি তিন থানায় ১৮ থেকে ২০টি। তবে অন্যান্য থানা এলাকায়ও গড়ে আটটি মোবাইল খোয়া গেছে।
পুলিশ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পর্শকাতর ও ব্যক্তিগত এবং প্রয়োজনীয় নথি মোবাইলে না রাখাই ভালো। হারানো মোবাইলে থাকা তথ্য উদ্ধারের বিষয়ে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর জোহা হাসান বলেন, মোবাইলের কোনো তথ্য সংরক্ষণ করলে সেটা জিমেইলের সঙ্গে সংযুক্তি আছে এমন জায়গায় রাখা উচিত। এতে ওই ডিভাউস হারিয়ে গেলেও ই-মেইল আইডি দিয়ে সেটা উদ্ধার করা সম্ভব।
৩-৫ সেকেন্ডে আইএমইআই বদল
ডিবি পুলিশ জানায়, একটি চক্র চোরাই মোবাইলের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি নম্বর বা আইএমইআই নম্বর বদলে ফেলে বাজারে বিক্রি করে। আইএমইআই নম্বর বদল করায় হারানো মোবাইলের অবস্থান শনাক্ত করা যায় না। চক্রটি আইএমইআই নম্বর বদল করতে খুব দক্ষ। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ল্যাপটপের সঙ্গে সংযুক্ত করে মাত্র ৩ থেকে ৫ সেকেন্ডেই তাঁরা আইএমইআই নম্বর বদলে ফেলে। সম্প্রতি রাজধানীতে এমন একটি চক্রের কয়েকজনকে আটক করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করা অপরাধ।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি ও সম্প্রতি অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত (অপরাধ ও অপারেশন) আনোয়ার হোসেন বলেন, হারানো ফোনসেট ফিরে পাওয়াসহ সাইবার অপরাধ ঠেকাতে একটি ‘সাইবার থানা’ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিল সিআইডি। সাইবারে অপরাধ কমাতে এমন একটি থানা চালুতে জোর দিচ্ছে পুলিশ সদর দপ্তর।
দামি মোবাইল পাচার হয় বিদেশে
ডিএমপি ও সিআইডির কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে চুরি হওয়া মোবাইল ফোনসেটগুলো কয়েকটি হাত বদল হয়। খোয়া যাওয়া দামি মোবাইলের অর্ধেকের বেশি চলে যাচ্ছে বিদেশে, আন্তর্জাতিক চক্রের কাছে। সেগুলো পাচার হচ্ছে ভারত, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে। গোয়েন্দা পুলিশ চুরি হওয়া মোবাইল বিদেশে পাচার করা একাধিক চক্রের সন্ধান পেয়েছে। সম্প্রতি বাড্ডা থেকে এমন একটি চক্রের ৯ জন ভারতীয়সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রাজা শাও, পঙ্কজ বিশ্বাস, উৎপল মাইটি, দীপঙ্কর ঘোষ, রাজু দাস, সুজন দাস, এস কে আজগর আলী, লারাইব আশ্রাব, সমরজিৎ দাস এবং বাংলাদেশি মুরাদ গাজী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা বলেছেন, তাঁরা চোরাই ফোনসেট কিনে চক্রের মাধ্যমে ভারতের পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বিক্রি করেন। এসব মোবাইল মূলত অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্র আইফোন, স্যামসাংসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি স্মার্টফোন চুরি করে ভারতে পাচার করছে। সেখান থেকে অন্য দেশে পাচার হচ্ছে। এ কারণে দেশে মোবাইল ফোন হারালে বা চুরি গেলে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অনাগ্রহের মধ্যে ব্যতিক্রম
অনেক জিডি হলেও মোবাইল ফেরত পাওয়া যায় হাতে গোনা। পুলিশের সূত্র বলছে, নানা কাজের ব্যস্ততায় হারানো মোবাইল খুঁজতে পুলিশের আগ্রহ কম থাকে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়মিত কাজ এত বেশি থাকে যে হারানো মোবাইল খোঁজার সময় পান না।
অবশ্য এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও আছে। দেশের বিভিন্ন থানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা মোবাইল উদ্ধারে সাফল্যও দেখিয়েছেন। তাঁদের একজন খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক মিল্টন কুমার দেব দাস। তাঁর দাবি, গত আট-নয় বছরে তিনি ৬ হাজারের বেশি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করেছেন। এই দক্ষতার জন্য অনেকে তাঁকে নামে চেনেন। কেউ কেউ ডাকেন ‘মিল্টন কেডি’ বলে। তিনি বলেন, যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি বা বিদেশে পাচার না হলে হারানো মোবাইল খুঁজে পাওয়া যায়।
শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

রাজধানীর রমনা পার্কে মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন কাপল ব্লগ করা এক দম্পতি। ফোনসেটে ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ছিল। তাতেই হলো বিপদ। তিন ধাপে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় (ভাইরাল) এক দুর্বৃত্ত। এতে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা।
মোবাইল ফোনসেট হারানোয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং ভিডিও-ছবি ভাইরাল ও টাকা আদায়ের ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টারে অভিযোগ করেন। কিন্তু দুই মাসেও ফোনসেট উদ্ধার হয়নি এবং ওই দুর্বৃত্তও ধরা পড়েনি। মোবাইল খোয়া যাওয়ায় এমন বিপদে আরও অনেকে পড়ছেন। তবে বেশির ভাগই পুলিশ পর্যন্ত যান না। আবার অনেকের মোবাইলে থাকে গুরুত্বপূর্ণ নথি। মোবাইল হারালে তাঁরাও পড়েন বিপদে।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্য, রাজধানীতে প্রতি মাসে গড়ে ১১ হাজারের বেশি মোবাইল ফোন চুরি হয়, ছিনতাই হয় বা হারায়। অর্ধেকের বেশি ভুক্তভোগীই এ নিয়ে থানায় আসেন না। যাঁরা জিডি করেন তাঁদের মোবাইল উদ্ধারের সংখ্যাও নামমাত্র। অন্য ব্যস্ততা থাকায় মোবাইল উদ্ধারে পুলিশের সময়ও কম। পুলিশ বলছে, খোয়া যাওয়া দামি মোবাইলের অর্ধেকের বেশি চলে যাচ্ছে বিদেশে। তাই এগুলোর হদিস পাওয়া যায় না। কম দামি মোবাইল আইএমইআই বদলে দেশেই বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। চুরি ও ছিনতাই হওয়া ফোনসেট উদ্ধার করতে না পারা নিয়ে গত সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরে অপরাধ পর্যালোচনা সভায়ও আলোচনা হয়। সভায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম হারানো মোবাইল উদ্ধারে অভিযান জোরদার করতে এবং মোবাইল ছিনতাই/চুরি প্রতিরোধে টহল বাড়াতে পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন।
খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনসংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে কাজ করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। জানতে চাইলে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মাদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মোবাইল হারানো অর্ধেকের বেশি মানুষই থানায় জিডি করেন না। যাঁরা আসেন, তাঁদের মোবাইল ছিনতাই বা চুরি হলেও হারিয়ে গেছে দাবি করে জিডি করেন। জিডি করার কারণে গুরুত্ব কম থাকায় মোবাইল উদ্ধার হয় না। তিনি বলেন, মামলার সংখ্যা কমানোর জন্য থানার পুলিশ জিডি করতে উৎসাহ দিলেও মোবাইল ছিনতাই হলে মামলা করতে হবে। গত বছর সিআইডির কাছে প্রায় দেড় হাজার অভিযোগ আসে। এর মধ্যে ৪৭১টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তিনি যাচাই ছাড়া পুরোনো মোবাইল না কেনারও পরামর্শ দিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীতে মোবাইল ফোন ছিনতাই ও চুরির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ৯ মার্চ ডিএমপির ৫০টি থানায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ৮ মার্চ (শুক্রবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেই মোবাইল ফোন হারানো নিয়ে এসব থানায় ৩৭১টি জিডি হয়। এ হিসাবে প্রতি মাসে মোবাইল খোয়া যাওয়ার সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ হাজার ১৩০টি। আর বছরে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৬০টি। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কর্মব্যস্ত দিনে মোবাইল হারানোর জিডি হয় আরও বেশি। ভুক্তভোগীদের অর্ধেকের বেশি জিডি না করায় মোবাইল খোয়া যাওয়ার প্রকৃত সংখ্যা জিডির দ্বিগুণের বেশি।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনসেটটি যদি অন্য কেউ ব্যবহার করে, তবেই সহজে সেটি উদ্ধার করা সম্ভব, না হলে নয়।
পুলিশ বলছে, মোবাইল ছিনতাই, চুরি বা হারানো গেলে সেই মোবাইলে থাকা সবকিছু চলে যায় অপরাধীর হাতে, যা দিয়ে দুর্বৃত্তরা ভুক্তভোগীকে ব্ল্যাকমেল করে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে মোবাইল হারিয়ে এমন ঘটনারই শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের এক শিক্ষার্থী। শাহবাগ থানায় জিডি করেন। কিন্তু মোবাইলে থাকা ব্যক্তিগত ছবি দিয়ে তাঁকে ভয় দেখিয়ে টাকা চায় এক দুর্বৃত্ত। তিনি শাহবাগ থানায় হয়রানির মামলা করেন। কিন্তু ফল হয়নি। উল্টো ছবি ভাইরাল করার হুমকি পাচ্ছেন এখনো।
এমন চক্রের ২০ জনকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, কুমিল্লা থেকে রাজিব নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছেন তাঁরা। রাজিবের কাজই হলো চোরাই মোবাইল কিনে সেখানে থাকা ছবি দিয়ে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করা। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কোনো ছবি, ভিডিও বা ডকুমেন্ট মোবাইলে সংরক্ষণ না করাই ভালো। এতে মোবাইল হারালেও বাড়তি বিপদের ঝুঁকি থাকে না। তারপরও এমন কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে।
৮ মার্চ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হওয়া জিডি অনুযায়ী, সে দিন সবচেয়ে বেশি মোবাইল খোয়া যায় মিরপুর, মোহাম্মদপুর, শাহবাগ ও খিলগাঁও থানা এলাকায়। সর্বোচ্চ মিরপুরে ২১টি। বাকি তিন থানায় ১৮ থেকে ২০টি। তবে অন্যান্য থানা এলাকায়ও গড়ে আটটি মোবাইল খোয়া গেছে।
পুলিশ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পর্শকাতর ও ব্যক্তিগত এবং প্রয়োজনীয় নথি মোবাইলে না রাখাই ভালো। হারানো মোবাইলে থাকা তথ্য উদ্ধারের বিষয়ে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর জোহা হাসান বলেন, মোবাইলের কোনো তথ্য সংরক্ষণ করলে সেটা জিমেইলের সঙ্গে সংযুক্তি আছে এমন জায়গায় রাখা উচিত। এতে ওই ডিভাউস হারিয়ে গেলেও ই-মেইল আইডি দিয়ে সেটা উদ্ধার করা সম্ভব।
৩-৫ সেকেন্ডে আইএমইআই বদল
ডিবি পুলিশ জানায়, একটি চক্র চোরাই মোবাইলের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি নম্বর বা আইএমইআই নম্বর বদলে ফেলে বাজারে বিক্রি করে। আইএমইআই নম্বর বদল করায় হারানো মোবাইলের অবস্থান শনাক্ত করা যায় না। চক্রটি আইএমইআই নম্বর বদল করতে খুব দক্ষ। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ল্যাপটপের সঙ্গে সংযুক্ত করে মাত্র ৩ থেকে ৫ সেকেন্ডেই তাঁরা আইএমইআই নম্বর বদলে ফেলে। সম্প্রতি রাজধানীতে এমন একটি চক্রের কয়েকজনকে আটক করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করা অপরাধ।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি ও সম্প্রতি অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত (অপরাধ ও অপারেশন) আনোয়ার হোসেন বলেন, হারানো ফোনসেট ফিরে পাওয়াসহ সাইবার অপরাধ ঠেকাতে একটি ‘সাইবার থানা’ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিল সিআইডি। সাইবারে অপরাধ কমাতে এমন একটি থানা চালুতে জোর দিচ্ছে পুলিশ সদর দপ্তর।
দামি মোবাইল পাচার হয় বিদেশে
ডিএমপি ও সিআইডির কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে চুরি হওয়া মোবাইল ফোনসেটগুলো কয়েকটি হাত বদল হয়। খোয়া যাওয়া দামি মোবাইলের অর্ধেকের বেশি চলে যাচ্ছে বিদেশে, আন্তর্জাতিক চক্রের কাছে। সেগুলো পাচার হচ্ছে ভারত, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে। গোয়েন্দা পুলিশ চুরি হওয়া মোবাইল বিদেশে পাচার করা একাধিক চক্রের সন্ধান পেয়েছে। সম্প্রতি বাড্ডা থেকে এমন একটি চক্রের ৯ জন ভারতীয়সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রাজা শাও, পঙ্কজ বিশ্বাস, উৎপল মাইটি, দীপঙ্কর ঘোষ, রাজু দাস, সুজন দাস, এস কে আজগর আলী, লারাইব আশ্রাব, সমরজিৎ দাস এবং বাংলাদেশি মুরাদ গাজী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা বলেছেন, তাঁরা চোরাই ফোনসেট কিনে চক্রের মাধ্যমে ভারতের পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বিক্রি করেন। এসব মোবাইল মূলত অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্র আইফোন, স্যামসাংসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি স্মার্টফোন চুরি করে ভারতে পাচার করছে। সেখান থেকে অন্য দেশে পাচার হচ্ছে। এ কারণে দেশে মোবাইল ফোন হারালে বা চুরি গেলে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অনাগ্রহের মধ্যে ব্যতিক্রম
অনেক জিডি হলেও মোবাইল ফেরত পাওয়া যায় হাতে গোনা। পুলিশের সূত্র বলছে, নানা কাজের ব্যস্ততায় হারানো মোবাইল খুঁজতে পুলিশের আগ্রহ কম থাকে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়মিত কাজ এত বেশি থাকে যে হারানো মোবাইল খোঁজার সময় পান না।
অবশ্য এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও আছে। দেশের বিভিন্ন থানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা মোবাইল উদ্ধারে সাফল্যও দেখিয়েছেন। তাঁদের একজন খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক মিল্টন কুমার দেব দাস। তাঁর দাবি, গত আট-নয় বছরে তিনি ৬ হাজারের বেশি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করেছেন। এই দক্ষতার জন্য অনেকে তাঁকে নামে চেনেন। কেউ কেউ ডাকেন ‘মিল্টন কেডি’ বলে। তিনি বলেন, যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি বা বিদেশে পাচার না হলে হারানো মোবাইল খুঁজে পাওয়া যায়।

রাজধানীর রমনা পার্কে মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন কাপল ব্লগ করা এক দম্পতি। ফোনসেটে ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ছিল। তাতেই হলো বিপদ। তিন ধাপে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় (ভাইরাল) এক দুর্বৃত্ত। এতে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা।
মোবাইল ফোনসেট হারানোয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং ভিডিও-ছবি ভাইরাল ও টাকা আদায়ের ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টারে অভিযোগ করেন। কিন্তু দুই মাসেও ফোনসেট উদ্ধার হয়নি এবং ওই দুর্বৃত্তও ধরা পড়েনি। মোবাইল খোয়া যাওয়ায় এমন বিপদে আরও অনেকে পড়ছেন। তবে বেশির ভাগই পুলিশ পর্যন্ত যান না। আবার অনেকের মোবাইলে থাকে গুরুত্বপূর্ণ নথি। মোবাইল হারালে তাঁরাও পড়েন বিপদে।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্য, রাজধানীতে প্রতি মাসে গড়ে ১১ হাজারের বেশি মোবাইল ফোন চুরি হয়, ছিনতাই হয় বা হারায়। অর্ধেকের বেশি ভুক্তভোগীই এ নিয়ে থানায় আসেন না। যাঁরা জিডি করেন তাঁদের মোবাইল উদ্ধারের সংখ্যাও নামমাত্র। অন্য ব্যস্ততা থাকায় মোবাইল উদ্ধারে পুলিশের সময়ও কম। পুলিশ বলছে, খোয়া যাওয়া দামি মোবাইলের অর্ধেকের বেশি চলে যাচ্ছে বিদেশে। তাই এগুলোর হদিস পাওয়া যায় না। কম দামি মোবাইল আইএমইআই বদলে দেশেই বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। চুরি ও ছিনতাই হওয়া ফোনসেট উদ্ধার করতে না পারা নিয়ে গত সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরে অপরাধ পর্যালোচনা সভায়ও আলোচনা হয়। সভায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম হারানো মোবাইল উদ্ধারে অভিযান জোরদার করতে এবং মোবাইল ছিনতাই/চুরি প্রতিরোধে টহল বাড়াতে পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন।
খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনসংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে কাজ করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। জানতে চাইলে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মাদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মোবাইল হারানো অর্ধেকের বেশি মানুষই থানায় জিডি করেন না। যাঁরা আসেন, তাঁদের মোবাইল ছিনতাই বা চুরি হলেও হারিয়ে গেছে দাবি করে জিডি করেন। জিডি করার কারণে গুরুত্ব কম থাকায় মোবাইল উদ্ধার হয় না। তিনি বলেন, মামলার সংখ্যা কমানোর জন্য থানার পুলিশ জিডি করতে উৎসাহ দিলেও মোবাইল ছিনতাই হলে মামলা করতে হবে। গত বছর সিআইডির কাছে প্রায় দেড় হাজার অভিযোগ আসে। এর মধ্যে ৪৭১টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তিনি যাচাই ছাড়া পুরোনো মোবাইল না কেনারও পরামর্শ দিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীতে মোবাইল ফোন ছিনতাই ও চুরির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ৯ মার্চ ডিএমপির ৫০টি থানায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ৮ মার্চ (শুক্রবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেই মোবাইল ফোন হারানো নিয়ে এসব থানায় ৩৭১টি জিডি হয়। এ হিসাবে প্রতি মাসে মোবাইল খোয়া যাওয়ার সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ হাজার ১৩০টি। আর বছরে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৬০টি। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কর্মব্যস্ত দিনে মোবাইল হারানোর জিডি হয় আরও বেশি। ভুক্তভোগীদের অর্ধেকের বেশি জিডি না করায় মোবাইল খোয়া যাওয়ার প্রকৃত সংখ্যা জিডির দ্বিগুণের বেশি।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনসেটটি যদি অন্য কেউ ব্যবহার করে, তবেই সহজে সেটি উদ্ধার করা সম্ভব, না হলে নয়।
পুলিশ বলছে, মোবাইল ছিনতাই, চুরি বা হারানো গেলে সেই মোবাইলে থাকা সবকিছু চলে যায় অপরাধীর হাতে, যা দিয়ে দুর্বৃত্তরা ভুক্তভোগীকে ব্ল্যাকমেল করে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে মোবাইল হারিয়ে এমন ঘটনারই শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের এক শিক্ষার্থী। শাহবাগ থানায় জিডি করেন। কিন্তু মোবাইলে থাকা ব্যক্তিগত ছবি দিয়ে তাঁকে ভয় দেখিয়ে টাকা চায় এক দুর্বৃত্ত। তিনি শাহবাগ থানায় হয়রানির মামলা করেন। কিন্তু ফল হয়নি। উল্টো ছবি ভাইরাল করার হুমকি পাচ্ছেন এখনো।
এমন চক্রের ২০ জনকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, কুমিল্লা থেকে রাজিব নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছেন তাঁরা। রাজিবের কাজই হলো চোরাই মোবাইল কিনে সেখানে থাকা ছবি দিয়ে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করা। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কোনো ছবি, ভিডিও বা ডকুমেন্ট মোবাইলে সংরক্ষণ না করাই ভালো। এতে মোবাইল হারালেও বাড়তি বিপদের ঝুঁকি থাকে না। তারপরও এমন কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে।
৮ মার্চ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হওয়া জিডি অনুযায়ী, সে দিন সবচেয়ে বেশি মোবাইল খোয়া যায় মিরপুর, মোহাম্মদপুর, শাহবাগ ও খিলগাঁও থানা এলাকায়। সর্বোচ্চ মিরপুরে ২১টি। বাকি তিন থানায় ১৮ থেকে ২০টি। তবে অন্যান্য থানা এলাকায়ও গড়ে আটটি মোবাইল খোয়া গেছে।
পুলিশ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পর্শকাতর ও ব্যক্তিগত এবং প্রয়োজনীয় নথি মোবাইলে না রাখাই ভালো। হারানো মোবাইলে থাকা তথ্য উদ্ধারের বিষয়ে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর জোহা হাসান বলেন, মোবাইলের কোনো তথ্য সংরক্ষণ করলে সেটা জিমেইলের সঙ্গে সংযুক্তি আছে এমন জায়গায় রাখা উচিত। এতে ওই ডিভাউস হারিয়ে গেলেও ই-মেইল আইডি দিয়ে সেটা উদ্ধার করা সম্ভব।
৩-৫ সেকেন্ডে আইএমইআই বদল
ডিবি পুলিশ জানায়, একটি চক্র চোরাই মোবাইলের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি নম্বর বা আইএমইআই নম্বর বদলে ফেলে বাজারে বিক্রি করে। আইএমইআই নম্বর বদল করায় হারানো মোবাইলের অবস্থান শনাক্ত করা যায় না। চক্রটি আইএমইআই নম্বর বদল করতে খুব দক্ষ। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ল্যাপটপের সঙ্গে সংযুক্ত করে মাত্র ৩ থেকে ৫ সেকেন্ডেই তাঁরা আইএমইআই নম্বর বদলে ফেলে। সম্প্রতি রাজধানীতে এমন একটি চক্রের কয়েকজনকে আটক করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করা অপরাধ।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি ও সম্প্রতি অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত (অপরাধ ও অপারেশন) আনোয়ার হোসেন বলেন, হারানো ফোনসেট ফিরে পাওয়াসহ সাইবার অপরাধ ঠেকাতে একটি ‘সাইবার থানা’ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিল সিআইডি। সাইবারে অপরাধ কমাতে এমন একটি থানা চালুতে জোর দিচ্ছে পুলিশ সদর দপ্তর।
দামি মোবাইল পাচার হয় বিদেশে
ডিএমপি ও সিআইডির কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে চুরি হওয়া মোবাইল ফোনসেটগুলো কয়েকটি হাত বদল হয়। খোয়া যাওয়া দামি মোবাইলের অর্ধেকের বেশি চলে যাচ্ছে বিদেশে, আন্তর্জাতিক চক্রের কাছে। সেগুলো পাচার হচ্ছে ভারত, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে। গোয়েন্দা পুলিশ চুরি হওয়া মোবাইল বিদেশে পাচার করা একাধিক চক্রের সন্ধান পেয়েছে। সম্প্রতি বাড্ডা থেকে এমন একটি চক্রের ৯ জন ভারতীয়সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রাজা শাও, পঙ্কজ বিশ্বাস, উৎপল মাইটি, দীপঙ্কর ঘোষ, রাজু দাস, সুজন দাস, এস কে আজগর আলী, লারাইব আশ্রাব, সমরজিৎ দাস এবং বাংলাদেশি মুরাদ গাজী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা বলেছেন, তাঁরা চোরাই ফোনসেট কিনে চক্রের মাধ্যমে ভারতের পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বিক্রি করেন। এসব মোবাইল মূলত অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্র আইফোন, স্যামসাংসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি স্মার্টফোন চুরি করে ভারতে পাচার করছে। সেখান থেকে অন্য দেশে পাচার হচ্ছে। এ কারণে দেশে মোবাইল ফোন হারালে বা চুরি গেলে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অনাগ্রহের মধ্যে ব্যতিক্রম
অনেক জিডি হলেও মোবাইল ফেরত পাওয়া যায় হাতে গোনা। পুলিশের সূত্র বলছে, নানা কাজের ব্যস্ততায় হারানো মোবাইল খুঁজতে পুলিশের আগ্রহ কম থাকে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়মিত কাজ এত বেশি থাকে যে হারানো মোবাইল খোঁজার সময় পান না।
অবশ্য এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও আছে। দেশের বিভিন্ন থানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা মোবাইল উদ্ধারে সাফল্যও দেখিয়েছেন। তাঁদের একজন খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক মিল্টন কুমার দেব দাস। তাঁর দাবি, গত আট-নয় বছরে তিনি ৬ হাজারের বেশি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করেছেন। এই দক্ষতার জন্য অনেকে তাঁকে নামে চেনেন। কেউ কেউ ডাকেন ‘মিল্টন কেডি’ বলে। তিনি বলেন, যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি বা বিদেশে পাচার না হলে হারানো মোবাইল খুঁজে পাওয়া যায়।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৫ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

রাজধানীর রমনা পার্কে মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন কাপল ব্লগ করা এক দম্পতি। ফোনসেটে ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ছিল। তাতেই হলো বিপদ। তিন ধাপে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় (ভাইরাল) এক দুর্বৃত্ত। এতে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা।
১৩ মার্চ ২০২৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর রমনা পার্কে মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন কাপল ব্লগ করা এক দম্পতি। ফোনসেটে ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ছিল। তাতেই হলো বিপদ। তিন ধাপে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় (ভাইরাল) এক দুর্বৃত্ত। এতে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা।
১৩ মার্চ ২০২৪
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৫ ঘণ্টা আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

রাজধানীর রমনা পার্কে মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন কাপল ব্লগ করা এক দম্পতি। ফোনসেটে ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ছিল। তাতেই হলো বিপদ। তিন ধাপে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় (ভাইরাল) এক দুর্বৃত্ত। এতে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা।
১৩ মার্চ ২০২৪
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৫ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

রাজধানীর রমনা পার্কে মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন কাপল ব্লগ করা এক দম্পতি। ফোনসেটে ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ছিল। তাতেই হলো বিপদ। তিন ধাপে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় (ভাইরাল) এক দুর্বৃত্ত। এতে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা।
১৩ মার্চ ২০২৪
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৫ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে