Ajker Patrika

সীমান্ত অপরাধ শূন্যে নামিয়ে আনতে যেসব পরামর্শ দিলেন হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪, ০০: ৪০
সীমান্ত অপরাধ শূন্যে নামিয়ে আনতে যেসব পরামর্শ দিলেন হাইকোর্ট

বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা কার্যকরীভাবে রক্ষা, আন্তরাষ্ট্র সীমান্ত অপরাধ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা এবং জাতীয় রাজস্ব আয় ফাঁকি প্রতিরোধে জাতীয় সংসদকে চার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট। চোরাচালানবিরোধী অভিযানে যশোর সীমান্তে ভারতীয় শাড়ি উদ্ধারের ঘটনায় তৎকালীন বিডিআরের করা মামলার আসামি জাকির হোসেনের সাজা বাতিলের রায়ে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়।

গত বছরের ৩ আগস্ট বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চের দেওয়া ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ১১ জুলাই প্রকাশ করা হয়েছে।

রায়ে সংসদকে দেওয়া চার পরামর্শ হলো—সীমান্তরেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ মাইল পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সম্পত্তি ঘোষণা করা। উক্ত ঘোষণার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সকলকে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে সমমূল্যের সরকারি খাস সম্পত্তি হতে বরাদ্দ প্রদান। সীমান্ত লাইন থেকে ৮ কিলোমিটার ভূমি সম্পূর্ণ ফাঁকা রাখা, যাতে ৮ কিলোমিটার দূর থেকে পরিষ্কার দেখা যায়। এ ছাড়া সীমান্তরেখা থেকে ৮-১০ কিলোমিটার মধ্যবর্তী স্থান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের যাবতীয় স্থাপনা, প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ডের জন্য সংরক্ষিত রাখা।

উল্লেখিত রায় ও আদেশের অনুলিপি জাতীয় সংসদ, অধস্তন আদালতের সকল বিচারক, বিজিবির মহাপরিচালক ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ প্রদান করা হয় রায়ে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৮৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন বিডিআর সদস্যরা যশোরের চাঁচড়া রায়পাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে আসামি জাকির হোসেনের বাড়ি থেকে ১৫টি ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার করেন। ওই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। ওই মামলায় ১৯৮৮ সালের ১৩ এপ্রিল তিন বছরের সাজা দেন বিচারিক আদালত। পরে রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন জাকির।

হাইকোর্ট রায়ে বলেন, The Record of Jute Growers (Border Areas) Act, 1974 এর ধারা ২(ক) পর্যালোচনায় এটি কাচের মতো স্পষ্ট যে, সীমান্তরেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ মাইল পর্যন্ত এলাকাকে সরকার ১৯৭৪ সালে ‘সীমান্ত এলাকা’ বা ‘border area’ মর্মে ঘোষণা করেছে। সুতরাং এটা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায়, বাংলাদেশ রাইফেলস বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এখতিয়ারাধীন এলাকা সীমান্তরেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ মাইল।

যেহেতু এই মামলায় বিডিআর সদস্যরা সীমান্ত এলাকা তথা ১০ মাইল সীমানার বাইরে গিয়ে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করেছে, তাই তাদের উক্ত তল্লাশি অভিযান এখতিয়ারবিহীন। ফলে এখতিয়ারবিহীন অভিযানের মাধ্যমে দায়েরকৃত মামলাও এখতিয়ারবিহীন। সার্বিক পর্যালোচনায় এটি প্রতীয়মান যে, বিজ্ঞ বিচারিক আদালত যে রায় প্রদান করেছেন তা হস্তক্ষেপযোগ্য। আপিলটি মঞ্জুরযোগ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত