‘হাসানাতের চামচা’ বলায় এমপির সামনে আ.লীগ নেতাকে মারধর, বহিষ্কার ৩ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৩, ২২: ২১
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৩, ২২: ২৯

বরিশালের উজিরপুরে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ‘আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর চামচা’ বলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় এমপি শাহে আলমের সামনে তাঁকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টায় উপজেলা পরিষদের স্মৃতিস্তম্ভের সামনে এই ঘটনা ঘটে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে কুচকাওয়াজের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা সরকারি ডব্লিউ বি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে চলে যান। তবে সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল মাঠে না গিয়ে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষের সামনে অনুসারীদের নিয়ে বসে ছিলেন। 

কিছুক্ষণ পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইদ্রিস সরদার সংসদ সদস্য শাহে আলমকে সালাম বিনিময় করতে যান। এ সময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আওয়ামী লীগ নেতা ইদ্রিসকে ‘আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর চামচা’ বলে কটূক্তি করেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ইকবাল তাঁর অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা কাজী রিয়াজ, পলাশ তালুকদারসহ ৭ / ৮ জন মিলে ইদ্রিসকে ধাওয়া দিয়ে বেদম মারধর করেন। এ সময় এমপি শাহে আলম সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। 

হামলার শিকার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইদ্রিস সরদার বলেন, ‘আমি হাসানাত ভাইয়ের রাজনীতি করি। এ জন্য এমপিকে খুশি করতে গিয়ে ইকবাল আমাকে লোকজন নিয়ে মারধর করেছে। ইকবাল এমপির সামনে আমাকে হাসানাত ভাইয়ের ‘‘চামচা’’ বলেছে।’ 

এদিকে হাফিজুর রহমান ইকবাল বলেন, ‘এমপির সামনে কিংবা তাঁর উপস্থিতিতে মারামারি হয়নি। কিছুটা দূরে ঘটনা ঘটেছে। আমি ইদ্রিসের সঙ্গে মজা করেছি মাত্র।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ইদ্রিসকে মারধরের ঘটনায় আমরা তিন নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছি। বহিষ্কৃতরা হলেন—বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান পলাশ, শিকারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রিয়াজুল ইসলাম কাজী এবং বামরাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য জসীম উদ্দিন রুবেল।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মারধরের সময় এমপি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল ঘটনাস্থলে ছিলেন।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য শাহে আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বসেছিলাম। একপর্যায়ে ইকবাল ও ইদ্রিসের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। তারা ঝামেলা করলে আমি কী করতে পারি! আমি না বললে থামল কী করে! আমিই তো ওদের থামিয়েছি। আমার উপস্থিতিতে কী করে হয়! কতিপয় ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা করে এসব কথা ছড়াচ্ছে।’ 

উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘মারামারির ঘটনা শুনেছি। তবে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত