পেঁয়াজ চুরির অপবাদে সাবেক ইউপি সদস্যকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৪, ২১: ১৩
আপডেট : ১৮ মে ২০২৪, ২১: ৫৯

লক্ষ্মীপুরে পেঁয়াজ চুরির অপবাদে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক এক সদস্যকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। সদর উপজেলার পোদ্দার বাজারে আজ শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের পর তাঁর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। 

সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুর রহিমের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ স্থানীয়দের।

মারধরের শিকার ব্যক্তির নাম মো. ফারুক হোসেন (৫০)। তিনি চাটখিল উপজেলার দশঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা ও ওই বাজারের ব্যবসায়ী। তিনি ৩ নম্বর পরকোট ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য। 

স্থানীয় সূত্রে জানায়, ইউপি সদস্য আবদুর রহিমের ভাই আবুল কালামের দোকান থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুরে কে বা কারা এক বস্তা পেঁয়াজ নিয়ে যায়। আজ শনিবার সকালে মো. ফারুক হোসেন পোদ্দার বাজারে এলে ব্যবসায়ী আবুল কালাম তাঁকে পেঁয়াজ চুরির অপবাদ দিয়ে আটক করেন। 

পরে ব্যবসায়ী আবুল কালাম তাঁর ভাই ইউপি সদস্য আবদুর রহিমকে খবর দেন। খবর পেয়ে আবদুর রহিমসহ ১০-১৫ জন এসে পোদ্দার বাজার সড়কের একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ফারুক হোসেনকে লোহার শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে ফারুক হোসেনের আত্মীয়স্বজন বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে উদ্ধার করে আবদুল ওয়াহাবকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেন।

মো. ফারুক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে পোদ্দার বাজার এলাকায় ঘুরতে আসলে ইউপি সদস্য আবদুর রহিমের ভাই আবুল কালাম পেঁয়াজ চুরির অপবাদ দিয়ে আটকে মারধর করে। কিছুক্ষণ পরে আবদুর রহিম ১০-১৫ জন লোক নিয়ে এসে আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে লোহার শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালায়।’ এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আবদুর রহিম বলেন, ‘চুরি করার কারণে তাকে মারধর করা হয়েছে। চোরকে মারধর করলে সমস্যা কোথায়?’

বশিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাহাফুজুর রহমান বলেন, ‘মো. ফারুক হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে চুরির দায়ে মারধরের কথা শুনেছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছি।’

এদিকে মারধরের পর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও ইউপি সদস্য আবদুর রহিমের নেতৃত্ব বাজার অফিসে সালিস করা হয়। এ সময় ব্যবসায়ীর স্বজনদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা নেওয়া হয়। ওই ঘটনা নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি করবেন না মর্মে একটি মুচলেকাও নেওয়া হয়।

তবে হারুনুর রশিদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও মুচলেকা আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, চুরি করলেও কোনো ব্যক্তিকে বেঁধে মারধর করা অপরাধ। চোর হলে পুলিশে সোপর্দ না করে যদি কেউ অপরাধ করে তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত