ছেলের জুয়ার ঋণ পরিশোধে কোম্পানিই ফতুর করে দিলেন হিসাবরক্ষক মা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ মে ২০২৩, ১৭: ২০
আপডেট : ০১ মে ২০২৩, ১৭: ৩৪

জুয়াড়ি ছেলের ঋণ শোধ করতে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের বিপুল অঙ্কের টাকা চুরি করেছেন এক মা। পরে ধরা পড়ে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে চীনের সাংহাই প্রদেশে। ৬৩ বছর বয়সী ওই মা তাঁর ৩৭ বছর বয়সী ছেলের জুয়ার ঋণ পরিশোধ করতে ৬৩ লাখ ইউয়ান বা ৯ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার চুরি করেছেন। শুধু তা–ই নয়, কোম্পানির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রেখেছেন মাত্র ২০ ইউয়ান বা ৩ ডলার! তিনি কোম্পানিটিতে হিসাবরক্ষকের পদে চাকরি করেন।

এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন বেরোনোর পর মা বাও কিহুয়া এবং তাঁর ছেলে জিয়াং শিয়াওবিন জালিয়াতির মামলায় বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন।

সাংহাই টিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই নারী ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়েছেন। একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষ টের পায় অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। তখন তারা পুলিশের কাছে চুরির অভিযোগ দেয়। ততক্ষণে কোম্পানির ব্যাংক ব্যালেন্স মাত্র ২০ ইউয়ানে নেমে গেছে! 

কোম্পানির মালিক সাংহাই টিভিকে বলেন, ‘ওই ঘটনা আমাকে পাগল করে তুলেছিল।’

বাও স্বীকার করেছেন, জুয়া খেলে ছেলে বিপুল পরিমাণ ঋণ করে ফেলে। এই ঋণ পরিশোধের জন্য ছেলে তাঁকে জোরাজুরি শুরু করে। ছেলের পরামর্শেই তিনি কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি করতে শুরু করেন।

ওই মা আরও বলেছেন, ছেলেকে ঋণ পরিশোধে সহায়তা করার জন্য এটাই প্রথম টাকা চুরির ঘটনা নয়। ২০০৫ সালে ছেলে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তখনো জুয়া খেলে বিপুল টাকা উড়িয়ে দিয়েছিল, সেই ঋণ পরিশোধের জন্য ছেলেকে ৩ লাখ ইউয়ান বা ৪৩ হাজার ৩০০ ডলার তিনিই দিয়েছিলেন।

কিন্তু এরপরও ছেলের জুয়া খেলার প্রতি আসক্তি কমেনি। ঋণ জমতে জমতে একপর্যায়ে ১০ লাখ ইউয়ান হয়ে যায়। যখন টাকার জন্য আবার মায়ের কাছে আসেন। তখন সম্পত্তি বিক্রি করে ছেলের ঋণ পরিশোধ করেন বাও।

বাও বলেন, ছেলের জুয়ার প্রতি আসক্তি যখন উভয়ের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে তখন ২০১৪ সাল থেকে সব ঋণ শোধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেন। এই সময় ছেলে মাকে তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর কাছ থেকে ১২ লাখ ইউয়ান চুরি করতে রাজি করান। একপ্রকার বাধ্য হয়েই বাও তখন তাঁর চাকরিদাতার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরাতে শুরু করেন।

এক পুলিশ কর্মকর্তা সাংহাই টিভিকে বলেন, অ্যাকাউন্টের টাকা একেবারে ফুরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত কোম্পানি বুঝতেই পারেনি।

জিয়াং অবশ্য দোষ স্বীকার করে বলেছেন, ‘আমি আমার মায়ের জন্য খুবই দুঃখিত।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত