আজিমপুর মাতৃসদনে কেনাকাটায় নয়ছয়: চিকিৎসক, ঠিকাদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৪, ২১: ২৬
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৪, ২২: ০৩

আজিমপুরের মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকসহ ১৮ কর্মকর্তা ও তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হাসপাতালের কেনাকাটায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের মাধ্যমে সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

আজ রোববার কমিশনের অনুমোদনক্রমে আদালতে পৃথক তিনটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার। সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন—আজিমপুর মাতৃসদন হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইসরাত জাহান, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকার সাবেক অধ্যক্ষ ডা. পারভীন হক চৌধুরী, মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাবেক সিনিয়র কনসালট্যান্ট (অক্স/গাইনি) ডা. রওশন হোসনে জাহান, সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর (ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ) ডা. মো. লুৎফুল কবীর খান, আজিমপুর জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সাবেক মেডিকেল অফিসার ডা. রওশন জাহান, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) ডা. মো. আমীর হোচাইন, সাবেক সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দন, সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা মোছা. রইছা খাতুন, আজিমপুর মাতৃসদনের সাবেক জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মাহফুজা খাতুন, সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর ডা. চিন্ময় কান্তি দাস, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাবেক মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল ইসলাম, আজিমপুর মাতৃসদনের মেডিকেল অফিসার (শিশু) ডা. বেগম মাহফুজা, দিলারা আকতার, ডা. নাজরীনা বেগম, সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) ডা. নাদিরা আফরোজ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সাবেক ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নাছের উদ্দিন, সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা বিলকিস আক্তার এবং সাবেক মেডিকেল অফিসার (সনোলজিস্ট-ইমেজিং) ডা. আলেয়া ফেরদৌসি।

চার্জশিটভুক্ত তিন ঠিকাদার হলেন—মনার্ক এস্টাবলিশমেন্টের মালিক মো. ফাতে নূর ইসলাম, নাফিসা বিজনেস কর্নারের স্বত্বাধিকারী শেখ ইদ্রিস উদ্দিন (চঞ্চল) এবং সান্ত্বনা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নিজামুর রহমান চৌধুরী। 

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০১৪–১৫ অর্থবছরে মেডিসিন অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন। কেনাকাটায় মনগড়া ও ভিত্তিহীন দর বিবেচনায় নিয়ে হাসপাতালের মালামাল কেনার মাধ্যমে ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৭৯ হাজার ৫২৩ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। 

দুদক সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর পৃথক চারটি মামলা করে কমিশন। ওই মামলাগুলোতে মোট ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪২ হাজার ৭৬৩ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। তৎকালীন দুদক উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক মামলার বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। মামলার পরই আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। 

দুদক সূত্রে জানা যায়, মামলায় ১৭ জন চিকিৎসক এবং সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের আটজনকে আসামি করা হয়েছিল। আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ইসরাত জাহানকে চারটি মামলাতেই আসামি করা হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত