Ajker Patrika

মোহাম্মদপুর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মোহাম্মদপুর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী গ্রেপ্তার

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী মো. নুরুল আমিন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-২। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শুক্রবার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম।

র‍্যাব জানায়, নুরুল আমিন রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। 

শিহাব করিম জানান, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে নুরুল আমিনসহ রাজাকারেরা পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের বৌদ্ধ বিহারি পল্লির চিত্ত রঞ্জন ব্যাপারী, সুধীস চন্দ্র ব্যাপারী, স্বরৎ চন্দ্র মাঝি, রশিদ ঘরামী, ওপেন্দ্র নাথ মিস্ত্রি, গঙ্গাচর, নিরোধ চন্দ্র বালা, অমূল্য, সর্মূল্য ও অনন্ত চাষিকে গুলি করে হত্যা করে। এ ছাড়া লুটপাট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধে জড়িত ছিল। 

এ ঘটনায় ২০১৫ সালে নিহত নিরোধ চন্দ্র বালার ছেলে বিজয় চন্দ্র বালা পিরোজপুর আদালতে নুরুল আমিন হাওলাদার ও তার সহযোগী রাজাকারদের বিরুদ্ধে অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা করেন। 

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল তদন্ত শুরু করেন এবং ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত শেষ করেন। তদন্ত শেষে ৩৩ জন সাক্ষীর প্রেক্ষিতে আসামির বিরুদ্ধে ভান্ডারিয়ার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের সাতজনকে হত্যা, চরখালী গ্রামের সুরবালা দাসীকে ধর্ষণ, চরখালী গ্রামের চন্দ্র কান্তি মিস্ত্রি ও মনোরঞ্জন মিস্ত্রিকে ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং পূর্ব পশারিবুনিয়া ও হাতালিয়া গ্রামের ১৮ জনকে হত্যার অভিযোগ ছাড়াও অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ৪টি অভিযোগপত্র গঠন করা হয়। 

তিনি জানান, এরই প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আরেকটি মামলা হয়। আসামির বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে চলতি বছরের ২০ জুলাই নুরুল আমিনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এরপর থেকেই নুরুল আমিনকে গ্রেপ্তারের র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। তারই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত