মাদারীপুরের কালকিনিতে স্ত্রীর পরকীয়ার বলী হয়েছেন মো. নাজিমউদ্দিন কাজী (২৫) নামে এক যুবক। ঘটনার ৪১ দিন পর স্বামী হত্যার দায় স্বীকার করেছেন নিহতের স্ত্রী রুবি বেগম (২৩)। 

এদিকে এ হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে রোববার দিবাগত রাতে কালকিনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত রুবিকে গ্রেপ্তার করে সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৪ বছর আগে পারিবারিক ভাবে কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর এলাকার পূর্ব আলীপুর গ্রামের মান্নান কাজীর ছেলে নাজিমউদ্দিন কাজীর সঙ্গে একই এলাকার কামাল সিকদারের মেয়ে রুবি বেগমের বিয়ে হয়। চলতি বছরের ২১ জুন রাতে স্বামী নাজিমউদ্দিন স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে এলাকায় প্রচার করে রুবি বেগম। পরে তার লাশ স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে দাফন করা হয়। 

নিহত নাজিমউদ্দিনের বাবা-মা নেই। তবে আত্মীয়দের মাঝে নাজিমউদ্দিনের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হয়। তাদের ধারণা পরকীয়ার জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। নাজিমউদ্দিনের মৃত্যু এক মাস ১১ দিন পরে রোববার বিকেলে এলাকাবাসীর তোপের মুখে এ হত্যার দায় স্বীকার করেন রুবি বেগম। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রেহানা নেয়ামুলের স্বামী নেয়ামুল আকন কালকিনি থানা-পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যার পরে ঘটনাস্থালে গিয়ে রুবি বেগমকে উদ্ধার করে। পরে নিহতের ভাই নাঈম কাজী বাদী হয়ে রুবিকে আসামি করে কালকিনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কালকিনি থানা-পুলিশ ঘাতক রুবিতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান। 

অভিযুক্ত রুবি বেগম স্বীকারোক্তিতে জানান, আলীপুর মোল্লারহাট বাজারের ওষুধের দোকানের চিকিৎসক আব্দুল আলীর কাছ থেকে ঘুমের ওষুধ এনে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নাজিমউদ্দিনকে খাইয়ে অচেতন করে হত্যা করেন তিনি। একজনের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করলেও ওই ব্যক্তির বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। 

নিহতের ভাই ও মামলার বাদী নাঈম বলেন, আমাদের আগেই সন্দেহ হয়েছিল নাজিমউদ্দিন মারা যায়নি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় এলাকার লোকজন নিয়ে রুবিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রুবি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেন। তাই তার বিরুদ্ধে আমি হত্যা মামলা দায়ের করেছি। 

এ প্রসঙ্গে কালকিনি থানার ওসি ইশতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় হত্যা মামলা করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন রুবি বেগম। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে মাদারীপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়।