মিল্টন সমাদ্দার ৩ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০২ মে ২০২৪, ১৬: ৫৭
আপডেট : ০২ মে ২০২৪, ১৭: ০০

চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রমে মৃতদের জাল মৃত্যুসনদ দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেন এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের প্রসিকিউশন দপ্তরের মিরপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন।

দুপুরের পর মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ কামাল হোসেন আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। অন্যদিকে মিল্টন সমাদ্দারের পক্ষে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় মিরপুর থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয় পুলিশ। 

পরে আজ (বৃহস্পতিবার) ভোররাতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জালজালিয়াতির মাধ্যমে মৃত্যুর সনদ তৈরি করে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করার অপরাধে ডিবি’র এসআই মো. কামাল পাশা মিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় মিল্টন সমাদ্দারের সহযোগী হিসেবে কিশোর বালাকে আসামি করা হয়। মামলায় কিশোর বালাকে পলাতক দেখানো হয়েছে। 

মামলায় বলা হয়েছে, গত ২৪ এপ্রিল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও একটি দৈনিক পত্রিকা এবং গণমাধ্যমে ফলাওভাবে ‘মানবতার ফেরিওয়ালার অত্যাচার/মারামারি’ শীর্ষক সংবাদ প্রচার হতে থাকে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিষয়টি অনুসন্ধান ও তদন্তকালে গত ১ মে রাত ৮টার সময় রাজধানীর দক্ষিণ পাইকপাড়ায় মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার সেন্টারে পুলিশ ফোর্স নিয়ে হাজির হয় ডিবি পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মিল্টন সমাদ্দার পালিয়ে যেতে উদ্যত হলে, তাকে আটক করা হয়। তাঁর সহযোগী কিশোর বালা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। 

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আটকের পর মিলটন সমাদ্দার স্বীকার করেন যে, তিনি কোনো নিবন্ধিত চিকিৎসক নন। তাঁর প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত কোনো চিকিৎসককে নিয়োগ প্রদান করেননি। তিনি চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার প্রতিষ্ঠান তৈরি করে সেবার নামে নিজে চিকিৎসক সেজে প্রতারণা করতেন। এ সময় পলাতক আসামির সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণামূলকভাবে বিভিন্ন চিকিৎসা করে, সেবা করে, ক্রিয়েটিভ কনটেন্ট তৈরি করে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমোর মাধ্যমে এক কোটি ২০ লাখ ফ্রেন্ড ফলোয়ারের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে, প্রতারণামূলকভাবে অর্থ উপার্জন করেন। 

পরে আসামি মিল্টন সমাদ্দারের টেবিল থেকে ৫০টি মৃত্যুসনদ উদ্ধার করা হয়। এই সনদগুলোতে তিনি নিজে স্বাক্ষর দিয়েছেন। এ ছাড়া তার কাছ থেকে দুটি স্ট্যাম্প সিল উদ্ধার করা হয়। 

মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, মিল্টন সমাদ্দার দীর্ঘদিন ধরেই মানবতার সেবা ও চিকিৎসার নামে বিভিন্ন বয়স্ক ও শিশুকে নিয়ে শারীরিক মানসিক আঘাত করে, কখনো কখনো তাদের সুচিকিৎসার নাম করে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে বিক্রি করেন। তিনি শিশু পাচার করেন বলেও জানা যায়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত