Ajker Patrika

চিকেন’স নেকে হঠাৎ ভারী অস্ত্র মোতায়েন ভারতের

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২: ৪৮
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কর্পসের ট্যাংক মহড়া। ছবি: সংগৃহীত
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কর্পসের ট্যাংক মহড়া। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সরাসরি যোগাযোগের একমাত্র স্থলপথটি পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি চিকেন’স নেক হয়ে। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বাংলাদেশকে ভারতের এই অঞ্চলের সাতটি রাজ্যের সমুদ্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে ‘একমাত্র অভিভাবক’ বলে মন্তব্য করেন। আর এর পরপরই চিকেন’স নেক অঞ্চলে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে ভারত।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দিনের সফরে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি এই অঞ্চলের কৌশলগত উন্নয়নের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে।

ধারণা করা হচ্ছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেলে ব্যাংককে মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক হবে। যদি এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, তবে গত বছরের আগস্টে ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম মোদির সঙ্গে তাঁর সরাসরি সাক্ষাৎ হবে।

এই কূটনৈতিক তৎপরতার নেপথ্যে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে ইউনূসের সাম্প্রতিক মন্তব্য, যা ভারতের কাছে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিলিগুড়ি করিডরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই করিডর ‘চিকেন’স নেক’ নামেও পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গের এই সংকীর্ণ ভূখণ্ড উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং এর উত্তরে নেপাল, পূর্বে বাংলাদেশ ও ভুটান এবং উত্তরে চীন সীমান্ত। সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভারত এই গুরুত্বপূর্ণ করিডরের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনী শিলিগুড়ি করিডরকে তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যূহ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এই অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ত্রিশক্তি কর্পসের সদর দপ্তর করিডরের কাছে শুকনায় অবস্থিত। এই কর্পস আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় সজ্জিত।

সম্প্রতি ভারতীয় সেনাপ্রধানের দেওয়া এক বিবৃতি করিডরের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের অবস্থান আরও সুস্পষ্ট করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘চিকেন’স নেক’ কোনো দুর্বল জায়গা নয়, বরং এটি ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক অঞ্চল।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) মাধ্যমে বাংলাদেশে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ভারত।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঢাকার বেইজিংয়ের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা ভারতের জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।

চিকেন’স নেকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্ব ২০১৭ সালের ডোকলাম অচলাবস্থার সময় স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সে সময় ভারতীয় বাহিনী ভুটানের ভূখণ্ডে চীনের রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা প্রতিহত করেছিল। এই সড়ক শিলিগুড়ি করিডরকে বিপন্ন করতে পারত। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারত প্রতিরক্ষা পরিকাঠামো ও প্রস্তুতিকে আরও জোরদার করছে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত