যশোরে হত্যা মামলা আসামির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার, মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ

যশোর প্রতিনিধি
Thumbnail image

যশোরে রনি শেখ নামের এক হত্যা মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে নিহতের মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। আজ সোমবার দুপুরে শহরের দড়াটানা থেকে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি প্রেস ক্লাব চত্বরে এসে শেষ হয়। মিছিলে নিহতের স্বজনেরা ছাড়াও প্রায় শতাধিক মানুষ অংশ নেন। মিছিল থেকে রনির হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি করা হয়। 

এর আগে রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের নারায়নপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার শ্মশানের পাশে খালের মধ্যে থেকে রনির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রনি শেখ চাঁচড়ার ইমরোজ হত্যা মামলার এজাহার ও চার্জশিটভুক্ত আসামি এবং চাঁচড়া হঠাৎপাড়ার বাবুর আলীর ছেলে। রনির বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, মাদকসহ নয়টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

এদিকে এই হত্যাকাণ্ডে সন্দেহজনকভাবে রকি নামের এক যুবককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

যশোর জেনারেল হাসপাতালে মর্গে স্বামী রনির মরদেহ নিতে এসে আহাজারি করতে থাকেন স্ত্রী সোনিয়া খাতুন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত শনিবার বিকেল ৫টার দিকে একই এলাকার রবিউল ইসলাম ও রকি নামে দুজন তাঁকে পূজা দেখার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। রাতে বাড়ি না ফেরায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

রোববার তাঁর শ্বশুর (রনির বাবা বাবর আলী শেখ) কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। তারপর রকিকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়। রকির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁচড়ার নারায়নপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের শ্মশানের পাশে খালের মধ্যে থেকে তাঁর স্বামীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

আহাজারি করতে করতে সোনিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই, তাই না হলে আমার স্বামীরে ফিরায়ে দিতে হবে। আমার দুধের শিশুরে যারা বাপ হারা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।’ 

নিহত রনি শেখস্থানীয় ও পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শনিবার রনিকে মদ খাওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে যান কুলিন বর্মনের ছেলে রকি (১৯)। এরপর আর খোঁজ মেলেনি রনির। ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রকিসহ কয়েকজন রনিকে হত্যা করেছে। তাঁর গলাকাটা ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। 

নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে যশোরের চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ আকিকুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন ব্যক্তির মাছের ঘেরে কাজ করতেন রনি। শনিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রোববার সন্ধ্যায় চাঁচড়া দক্ষিণ বর্মনপাড়ার শ্মশানের পাশে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে রকিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। 

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, নিহত রনি একই এলাকার নুরু মহুরীর ছেলে ইমরোজ হত্যা মামলার এজাহার এবং চার্জশিটভুক্ত আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ইমরোজ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতেও তাঁকে হত্যা করা হতে পারে। পুলিশ পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের জন্য পুলিশ অভিযানে আছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত