চাকরির কথা বলে ডেকে নির্যাতন, ৪ সহোদর গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২২, ১৯: ১৮
Thumbnail image

ময়মনসিংহে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মো. কাউছার হামিদ (২৭) নামে এক যুবককে মোবাইল ফোনে কল করে ডেকে আনেন চার ভাই। এরপর তাঁকে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দিয়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই চার ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের সুতিরপাড়া গ্রামের মুন্সিবাড়ী এলাকার সেকান্দর আলীর (মৃত) ছেলে মো. সাবিকুর রহমান ওরফে শফিক মাস্টার (৩৪), মো. শাহজাহান মিয়া (৩৫), মো. শামীম হাসান (২৬), মো. সাইদুল ইসলাম (২৪)। 

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর ভুক্তভোগী কাউছার হামিদ প্রতারক চার ভাইকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। ওই দিন রাতেই অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত চার প্রতারককে আদালতে পাঠায় পুলিশ। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

মামলার নথির বরাত দিয়ে ওসি বলেন, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার আবুল কাশেমের ছেলে মো. কাউছার হামিদ সাপ্তাহিক ‘চাকুরির খবর’ নামের একটি পত্রিকায় প্রতিবন্ধীদের কাজ করে এমন একটি সংস্থার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখেন। গত ৪ মে নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত অফিসার ইনচার্জ পদে জীবন বৃত্তান্ত পাঠান। গত ২৮ জুন তাঁর মোবাইল নম্বরে কল আসে। মো. সাবিকুর রহমান ওরফে শফিক মাস্টার তাঁকে জানান, তাঁর চাকরি হয়েছে। পরদিন (২৯ জুন) ময়মনসিংহে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন। 

কথা মতো ২৯ জুন বিকেলে কাউছার হামিদ মহানগরীর শম্ভুগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে আসেন। তখন শফিক মাস্টার ও তাঁর ভাই মো. শাহজাহান মিয়া তাঁকে গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের সুতিরপাড়া গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে একটি ঘরে তাঁকে আটকে রেখে প্রথমে কিডনি খুলে রাখার হুমকি দেন। এরপর ৫ লাখ টাকা দাবি করে রাতভর নির্যাতন করেন। কাউছার হামিদ ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকাশের মাধ্যমে বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা আনিয়ে দেন। ওই দিন রাত ১১টার দিকে কাউছার হামিদকে ছেড়ে দেন তাঁরা। 

ওসি বলেন, কাউছার হামিদ সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে ওই চার ভাইকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় প্রতারণার মামলা করেন। মামলার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

ভুক্তভোগী কাউছার হামিদ বলেন, ‘চাকরির দরকার ছিল। তাই বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করি। প্রাথমিক পর্যায়ে সিলেক্ট হওয়ায় তারা আমাকে ময়মনসিংহ নিয়ে একটা অন্ধকার রুমে বেঁধে নির্যাতন করে। পরে টাকা দিতে রাজি হওয়ায় নির্যাতন একটু কম করে। ১ লাখ টাকা দিয়ে কৌশলে তাদের কাছ থেকে বেঁচে থানায় গেলে পুলিশ সহযোগিতা করে।’ 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক মো. সাবিকুর রহমান ওরফে শফিক মাস্টার বলেন, ‘এক বড় ভাইয়ের নির্দেশে প্রতারণার কাজে যুক্ত হই। এর আগে আরও একবার পুলিশের হাতে ধরা খেয়েছিলাম। তবে এবার ছাড়া পেলে আর করব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত