Ajker Patrika

গজনী অবকাশকেন্দ্রের অবৈধ চিড়িয়াখানা থেকে ১৭ বন্য প্রাণী উদ্ধার

শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরের গজনী অবকাশকেন্দ্রের অবৈধ মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা বন্য প্রাণী। ছবি: আজকের পত্রিকা
শেরপুরের গজনী অবকাশকেন্দ্রের অবৈধ মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা বন্য প্রাণী। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের গজনী অবকাশকেন্দ্রের অবৈধ মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে ১৭টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে।

বন বিভাগের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ঝিনাইগাতী উপজেলা সীমান্তে গারো পাহাড় এলাকায় ওই চিড়িয়াখানায় এ অভিযান চালায়। এতে নেতৃত্ব দেন ইউনিটের বন্য প্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা।

অভিযানকালে পাঁচটি বানর, চারটি করে হরিণ ও বনবিড়াল এবং একটি করে অজগর সাপ, গন্ধগোকুল, শিয়াল ও বাজপাখি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে শিয়াল ও বানরগুলো রাতেই গারো পাহাড়ের বনে অবমুক্ত করা হয়। হরিণগুলো চিড়িয়াখানার ইজারাদার ফরিদ আহমেদের জিম্মায় দিয়ে লাইসেন্স নিতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় এগুলো জব্দের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাকি ১০টি প্রাণী বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। পরে সেগুলোর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী বনে অবমুক্ত করা হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন পর্যটনকেন্দ্র গজনী অবকাশে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে একটি মিনি চিড়িয়াখানা পরিচালনা করা হচ্ছিল। তবে ইজারাদার ফরিদ চিড়িয়াখানা পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বেড়ে যায় বিভিন্ন প্রাণীর উপস্থিতি। তিনি অনুমতি ছাড়া বন্য প্রাণী আটকে রেখে তা টিকিটের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের দেখিয়ে আসছিলেন। একটি চক্র এই প্রাণীগুলোর বেশির ভাগই বন থেকে ধরে এনে ইজারাদারের কাছে বিক্রি করেছিল। কয়েক মাস আগে চিড়িয়াখানাটিতে অন্তত ২০ প্রজাতির বিভিন্ন প্রাণী থাকলেও চিকিৎসা ও সঠিক পরিচর্যার অভাবে এ সংখ্যা হ্রাস পায়। সম্প্রতি একটি ভালুক চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর পর সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয়। প্রাণীটির জন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগ নেওয়া হয়নি কোনো চিকিৎসাসেবা।

শেরপুরের গজনী অবকাশকেন্দ্রের অবৈধ মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা বন্য প্রাণী। ছবি: আজকের পত্রিকা
শেরপুরের গজনী অবকাশকেন্দ্রের অবৈধ মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা বন্য প্রাণী। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানতে চাইলে ইজারাদার ফরিদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নিয়ে চিড়িয়াখানাটি পরিচালনা করে আসছিলাম। বন বিভাগ জানিয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া বন্য প্রাণী রাখা যাবে না। বুধবার বন কর্মকর্তারা প্রাণীদের তালিকা তৈরি করে। শুক্রবার রাতে লাইসেন্সবিহীন প্রাণীগুলো জব্দ করা হয়। আর যেসব প্রাণী সংরক্ষণ করা যাবে, সেগুলোর জন্য আমি আবেদন করব।’

এ বিষয়ে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী পরিদর্শক নার্গিস জানান, বন্য প্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই চিড়িয়াখানা থেকে ১৭টি প্রাণী জব্দ করা হয়েছে। এগুলো স্বাভাবিক বন্য পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে।

ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এস বি তানভীর আহমেদ ইমন বলেন, ‘গজনী অবকাশকেন্দ্রে অবস্থিত মিনি চিড়িয়াখানায় অবৈধভাবে বেশ কিছু বন্য প্রাণী খাঁচায় বন্দী রেখে প্রদর্শন করা হচ্ছিল, যা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থী। আর ওখানে বন্য প্রাণী রাখার মতো পরিবেশ ছিল না। জব্দ করা প্রাণীগুলো কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। তারপর প্রজাতি অনুযায়ী প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

র‍্যাবের গুলিতে নিহত কলেজছাত্র সিয়াম মাদক কারবারি নয়, দাবি পরিবারের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত