জন্মতারিখ বদলে দ্বৈত ভোটার, হয়েছেন নির্বাচিতও

এম কে দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর (জামালপুর) 
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ২১: ১০

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত এক সদস্যের (সাধারণ সদস্য) বিরুদ্ধে দ্বৈত ভোটার হওয়ার (নিজের নামে দুটি ভোটার নম্বর) অভিযোগ উঠেছে। ওই ইউপি সদস্যের নাম মো. আলতাফুর রহমান। ইসলামপুর সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোটার হওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। ফলে খোদ জনপ্রতিনিধিই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একাধিক ভোটার হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত জনপ্রতিনিধির দাবি, কীভাবে তাঁর নামে দুটি ভোটার নম্বর তৈরি হয়েছে, তা তিনি বলতে পারেন না। 

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্যমতে, আলতাফুর রহমান তালা প্রতীকে ৮৩০ ভোট পেয়ে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচিত হন। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আবু সাইদ ফুটবল প্রতীকে পান ৬৭৬ ভোট।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগে থেকে প্রাপ্ত কাগজপত্র ঘেঁটে জানা যায়, মো. আলতাফুর রহমানের জন্ম তারিখ ১৯৭৭ সালের ২ মে। তাঁর বাবার নাম শাহ্ আলম শেখ, মায়ের নাম মোছা. আমেনা খাতুন। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ২৮৪৫৮০৪৫৩৯, পিন নম্বর ১৯৭৭৩৯১২৯৫৫৬২৫৫৪৪ ও ফরম নম্বর ৬২৫৫৪৪। ভোটার এলাকা গংগাপাড়া। ভোটার নম্বর ৩৯০৪৯২৬২৫৫৪৪। শিক্ষাগত যোগ্যতা ৫ম শ্রেণি পাস। 

অন্যদিকে, মো. আলতাফুর রহমানের নামে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে আরেকটি ভোটার নম্বর পাওয়া গেছে। সেখানে তাঁর বাবা-মায়ের নামসহ ভোটার এলাকা ঠিক থাকলেও জন্ম তারিখ দেওয়া হয়েছে ১৯৮০ সালের ১ জানুয়ারি। এ ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৫৫৫৩৭৯৯৩১২, পিন নম্বর ১৯৮০৩৯১২৯৫৫০০০০২৭, ফরম নম্বর ৪১০২৩২৬২ এবং ভোটার নম্বর ৩৯০৪৯২০০০৪৬৬। শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে সেখানে লেখা হয়েছে ‘নিরক্ষর’। 

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত ভোটার তালিকা ঘেঁটে জানা যায়, এলাকাভিত্তিক ভোটার তালিকায় ২২৮ নম্বর ক্রমিকে ভোটার হয়েছেন মো. আলতাফুর রহমান। সেখানে তাঁর জন্ম তারিখ হিসেবে ২ মে ১৯৭৭-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নির্বাচনের হলফনামায়ও একই জন্ম তারিখের বিপরীতে পাওয়া ভোটার নম্বর অনুযায়ী আলতাফুর রহমান ইউপি সদস্য পদে অংশ নেন। 

এ বিষয়ে মো. আলতাফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কীভাবে ভোটার তালিকায় আমার নাম দুইবার লিপিবদ্ধ হয়েছে, সেটা আমি বলতে পারি না।’ 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোছা. হোসনে আরা বলেন, ‘একই ব্যক্তির নামে দুটি ভোটার নম্বর থাকার বিষয়টি আমাদের নজরে আসেনি। এ ছাড়া ইউপি নির্বাচনে প্রার্থিতা যাচাই-বাছাইয়ের সময় বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগও করেনি। সে কারণেই নবনির্বাচিত ওই ইউপি সদস্য প্রার্থিতায় টিকেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোটার হওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। খোঁজখবর নিয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে একই ব্যক্তির একাধিক ভোটার হওয়া আইনসিদ্ধ নয়। বিষয়টি সম্পর্কে নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত