চলন্ত বাসে নারীকে ধর্ষণচেষ্টা, বাঁচতে লাফ দিয়ে গুরুতর আহত 

ভালুকা ও ময়মনসিংহ প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৩, ১৮: ৫০
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৩, ১৯: ২৩

ময়মনসিংহের ভালুকায় চলন্ত বাসে এক নারী পোশাকশ্রমিককে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করতে বাস থেকে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ ত্রিশাল থেকে বাসচালক, সহকারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মায়ের মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী/// থানার কুমারপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে রাকিব (২১), ত্রিশাল উপজেলার কাশীগঞ্জের রবিদাশের ছেলে আনন্দ দাস (১৯) ও ত্রিশালের রায়মনি গ্রামের আরফান আলীর ছেলে আরিফ (২০)। 

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক কামাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই নারী মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। তিন দিন অবজারভেশনে রাখতে চাই। অবস্থার উন্নতি না হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

পুলিশ বলছে, গাজীপুরের মাওনা এলাকার একটি পোশাক কারখানা থেকে কাজ শেষে প্রতিদিনের মতো গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাসে ভালুকা ফিরছিলেন দুই সন্তানের মা,৩৮ বছর বয়সী ওই নারী। পরে ভালুকার সিডস্টোর এলাকায় বাসের সব যাত্রী নেমে গেলে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মায়ের মসজিদ এলাকায় তাঁর সম্ভ্রমহানির চেষ্টা করে চালকসহ বাসের দুই সহকারী। এ সময় ওই নারী বাসের চালকসহ তিনজনের কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চলন্ত বাস থেকে লাফ দেন। পরে স্থানীয়রা তাঁকে প্রথমে একটি স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। 

ভুক্তভোগী নারীর স্বজনেরা জানান, তাঁর দুই ছেলেকে পড়াশোনা করানোর জন্য ৮-১০ বছর ধরে তিনি পোশাক কারখানায় কাজ করছেন। ধর্ষণচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছেন তাঁরা। 

এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে বাসটি জব্দ করাসহ বাসের চালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় ধর্ষণচেষ্টার মামলা হয়েছে।’ 

ওসি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।’ 

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহাম্মদ ভূঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই গার্মেন্টসকর্মী কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে অন্যান্য যাত্রী নেমে গেল ওই নারী একা হয়ে যায়। এই সুযোগে বাসের চালক, হেলপারসহ তিনজন ওই নারীকে ধর্ষণচেষ্টা করেন। সে সময় ভুক্তভোগী নারী কোনো উপায় না পেয়ে, বাস থেকে লাফ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন। এতে ওই নারী গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাঁকে প্রথমে ভালুকা সিডস্টোর একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে। পরে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে ভোররাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।’ 

এসপি আরও বলেন, ‘সকালে হাসপাতালে দিয়ে ওই নারীর খোঁজখবর নিয়েছি। পরিবারটির পাশে আমরা রয়েছি। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার চেষ্টা করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত