সামরিক আদালতে বিচারের মুখে পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান, ইতিহাসে প্রথম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০১: ০৯

পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ফয়েজ হামিদকে সামরিক হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ‘টপ সিটি হাউজিং স্কিম’ কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাঁর কোর্ট মার্শালের (সামরিক আদালতে বিচার) প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (১২ আগস্ট) সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সাবেক গোয়েন্দা প্রধানকে কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

পাকিস্তানের আইএসপিআর বিবৃতিতে জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ মেনে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদের বিরুদ্ধে করা টপ সিটি মামলার অভিযোগের সঠিকতা নিশ্চিত করার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী একটি বিশদ তদন্ত করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টের অধীনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, ফয়েজ হামিদের অবসর-পরবর্তী পাকিস্তান সেনা আইন লঙ্ঘনের একাধিক অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শালের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদকে সামরিক হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। 

পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার–সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সাবেক প্রধান ফয়েজ হামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তদন্তের জন্য গত এপ্রিলে সামরিক বাহিনী একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল বলে জানা যায়। সুপ্রিম কোর্ট ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের আলোকে এ কমিটি গঠন করা হয়। 

গত বছরের ১৪ নভেম্বর জারি করা লিখিত আদেশে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিলেন, সাবেক গোয়েন্দা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদের বিরুদ্ধে ‘অত্যন্ত গুরুতর প্রকৃতির’ অভিযোগগুলোকে ‘বিনা বিচারে ছেড়ে দেওয়া যাবে না’। কারণ এগুলো প্রমাণিত হলে দেশের একটি সংস্থার সুনাম ক্ষুণ্ন করবে। 

টপ সিটি, একটি বেসরকারি হাউজিং স্কিমের ব্যবস্থাপনা সংস্থা। তারা অভিযোগ করেছে, সাবেক আইএসআই প্রধান এই সংস্থার মালিক ময়েজ খানের কার্যালয় এবং বাসভবনে অভিযান চালিয়েছিলেন। 

২০২৩ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট ওই হাউজিং সোসাইটির মালিককে সাবেক গোয়েন্দা প্রধান এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগের প্রতিকারের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে যেতে বলেছিলেন।

 ২০২৩ সালের মার্চে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেছিলেন, সাবেক আইএসআই প্রধান এবং তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথিত দুর্নীতি এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।

চলতি বছরের মার্চে রাওয়ালপিন্ডির একটি আদালত সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের ভাই অবসরপ্রাপ্ত নায়েব তহসিলদার নাজাফ হামিদকে ১৪ দিনের বিচারিক রিমান্ডে আদিয়ালা জেলে পাঠিয়েছিলেন। নাজাফ ও অন্যান্য অভিযুক্তরা রাওয়ালপিন্ডিতে দুর্নীতি দমন সংস্থার (এসিই) কাছে আগাম জামিন চেয়েছিলেন। এফআইআরে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, সাবেক খনিজ সম্পদ মন্ত্রী হাফিজ আম্মার ইয়াসির বেনামিদারদের নামে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পত্তি রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত