রাজশাহী প্রতিনিধি
ঈদের কেনাকাটা দুদিন আগেই হয়েছিল। সামিরা পছন্দ করে দুটি পোশাক নিয়েছে। টিপ, লিপস্টিক, চুড়ি, মেহেদি—সবই নিয়েছে। মেহেদিতে রাঙিয়েছিল এক হাত। আরেক হাত বাকি। এর মধ্যে একদিন গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার হয়। এতটুকু মেয়ের আত্মহত্যা করতে পারে— এটা বিশ্বাস হচ্ছে না বাবা-মায়ের। প্রতিবেশীরাও কোনো কিছু অনুমান করতে পারছেন না।
বাবা-মায়ের ধারণা, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে তাদের আদরের মেয়েকে। তাই তাঁরা হত্যা মামলা করার চেষ্টা করছেন। মৃত্যুর ঘটনা ৯ জুলাই, ঈদের আগের দিন। মেয়েটির পুরো নাম সামিরা জান্নাতুল ফেরদৌস। বয়স ১১। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার পশ্চিম বালিয়া শান্তির মোড়। বাবার নাম মো. শামীম (৩০)। তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান। তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে সামিরা ছিল সবার বড়।
শামীমের নিজের জায়গাজমি নেই। মহাসড়কের পাশে সরকারি জায়গায় কোনোরকম মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছেন। বাড়িতে ঘর একটাই। গতকাল শুক্রবার রাতে সরেজমিনে কথা হয় শামীমের সঙ্গে। সেদিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, মেয়েটি খুব শৌখিন ছিল। গ্রামে এক দিন বয়সী ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা ফেরি করতে আসে এক লোক। সে ৩০টি বাচ্চা কিনেছিল। ঈদের আগে আগে সেগুলোর এক থেকে দেড় কেজি করে ওজন হয়। শামীম সিদ্ধান্ত নেন, কয়েকটি মুরগি শ্বশুরবাড়িতে দেবেন।
বেলা ১টায় শামীম, তাঁর স্ত্রী নাদিরা বেগম, কোলের ছেলে আর আট বছরের মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি মুরগি দিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন। বাড়ির নিচু জায়গা থেকে উঁচু মহাসড়কে উঠতে সামিরাও অটোরিকশা ঠেলে দেয়। গাড়িতে ওঠার পর সামিরার মা বলেন, ‘ওমা, মুরগির ক্যারেটই তো নেওয়া হয়নি!’ হাসিমুখে সামিরা বলে, ‘আমিই এনে দিচ্ছি।’ সে মুরগির ক্যারেট এনে দেয়। তাকে বাড়িতে একা রেখে সবাই যান গোদাগাড়ীর বসন্তপুরে।
স্ত্রী-সন্তানদের নামিয়ে দিয়ে যাত্রী নিয়ে রাজশাহীর কাটাখালী যান শামীম। তখন বেলা ৩টা বেজে ২৫ মিনিট। একসঙ্গে চলাফেরা করেন, বাড়িতেও আসা-যাওয়া আছে এমন এক যুবক শামীমকে কল করেন। জানতে চান শামীম কোথায়? শামীম জানান বাইরে আছেন। এরপর ওই ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে এখন তো বাড়ি আসছ না?’ শামীম জবাব দেন, ‘না’।
এরপর ওই ব্যক্তি কলটি কেটে দেন। শামীমের ভেতরটা অস্থির হয়ে ওঠে। তিনি রওনা দেন বাড়ির দিকে। শামীম সাধারণত বাড়ির সামনে দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় দুই মেয়েকে ডেকে ১০টা টাকা করে দেন। সেদিনই সামিরার জন্য হাতে টাকা নিয়ে নামেন। নামতেই বাড়ির সামনে ওই ব্যক্তিকে দেখেন। একসঙ্গে চলাফেরা থাকলেও সেদিন ওই ব্যক্তি শামীমকে দেখেই মুখ ঘুরিয়ে নেন। তাঁকে কেমন যেন বিচলিত দেখাচ্ছিল বলে জানান শামীম। বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে মেয়েকে ডাকতে থাকেন তিনি, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।
শামীম বাড়ির ভেতরে ঢোকেন। বাইরে থেকেই দেখেন, চোখ বড় বড় করে তাঁর দিকে তাকাচ্ছে মেয়ে। শামীম বলেন, ‘এই মেয়ে তুমি কি পাগল? এত ডাকছি শুনতে পাচ্ছ না?’ মেয়ে কথা বলে না। শামীম ঘরে ঢোকেন। দেখেন, ঘরের আড়ার সঙ্গে রশি দিয়ে সামিরার গলায় ফাঁস লাগানো। পা ঠেকে আছে মাটিতে। দ্রুতই ফাঁস খোলেন শামীম। জোরে শব্দ করে একটা শ্বাস নেয় সামিরা। দ্রুতই মেয়েকে নিজের অটোরিকশায় তুলে হাসপাতালের দিকে রওনা হন শামীম। ততক্ষণে সব শেষ। এ কথা বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন শামীম।
সামিরাকে হাসপাতালে নেওয়ার কারণ জানতে চেয়েছিলেন চিকিৎসক। শামীম বলেছিলেন, ‘গলায় ফাঁস।’ সেভাবেই মৃত্যুর সনদ হয়েছে। তাই থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে ঈদের দিন সামিরার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। সামিরার আত্মহত্যার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না পরিবার। সেদিনের সব ঘটনা এবং মরদেহ দেখার পর পরিবার ধারণা করছে, মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। আর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি।
শামীম ও তাঁর স্ত্রী নাদিরা বলেন, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করার মতো কোনো কারণ নেই। তাহলে কেন সে আত্মহত্যা করবে! তাঁরা সামিরার দেহের সবকিছুই দেখেছেন। গোপনাঙ্গ দেখে মনে হয়েছে মেয়ে ধর্ষণের শিকার। একটা হাতও ভাঙা মনে হয়েছে তাঁদের। কিন্তু মামলার ব্যাপারে ঘটনার দিন পুলিশ কিছুই জিজ্ঞেস করেনি। পুলিশ বাদী হয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেছে। তবে তাঁরা হত্যা মামলা করতে চান।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে গতকাল শুক্রবার রাতে রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, আলামত দেখে তাঁদের কাছে মনে হয়েছে যে সামিরা আত্মহত্যা করেছে। তবে পরিবার চাইলে হত্যা মামলা করতে পারবে। আজ শনিবার সকালে হত্যা মামলা করতে থামায় যান সামিরার বাবা-মা। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত তাঁরা থানায় ছিলেন। তখন পর্যন্ত মামলা হয়নি।
ঈদের কেনাকাটা দুদিন আগেই হয়েছিল। সামিরা পছন্দ করে দুটি পোশাক নিয়েছে। টিপ, লিপস্টিক, চুড়ি, মেহেদি—সবই নিয়েছে। মেহেদিতে রাঙিয়েছিল এক হাত। আরেক হাত বাকি। এর মধ্যে একদিন গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার হয়। এতটুকু মেয়ের আত্মহত্যা করতে পারে— এটা বিশ্বাস হচ্ছে না বাবা-মায়ের। প্রতিবেশীরাও কোনো কিছু অনুমান করতে পারছেন না।
বাবা-মায়ের ধারণা, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে তাদের আদরের মেয়েকে। তাই তাঁরা হত্যা মামলা করার চেষ্টা করছেন। মৃত্যুর ঘটনা ৯ জুলাই, ঈদের আগের দিন। মেয়েটির পুরো নাম সামিরা জান্নাতুল ফেরদৌস। বয়স ১১। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার পশ্চিম বালিয়া শান্তির মোড়। বাবার নাম মো. শামীম (৩০)। তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান। তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে সামিরা ছিল সবার বড়।
শামীমের নিজের জায়গাজমি নেই। মহাসড়কের পাশে সরকারি জায়গায় কোনোরকম মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছেন। বাড়িতে ঘর একটাই। গতকাল শুক্রবার রাতে সরেজমিনে কথা হয় শামীমের সঙ্গে। সেদিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, মেয়েটি খুব শৌখিন ছিল। গ্রামে এক দিন বয়সী ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা ফেরি করতে আসে এক লোক। সে ৩০টি বাচ্চা কিনেছিল। ঈদের আগে আগে সেগুলোর এক থেকে দেড় কেজি করে ওজন হয়। শামীম সিদ্ধান্ত নেন, কয়েকটি মুরগি শ্বশুরবাড়িতে দেবেন।
বেলা ১টায় শামীম, তাঁর স্ত্রী নাদিরা বেগম, কোলের ছেলে আর আট বছরের মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি মুরগি দিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন। বাড়ির নিচু জায়গা থেকে উঁচু মহাসড়কে উঠতে সামিরাও অটোরিকশা ঠেলে দেয়। গাড়িতে ওঠার পর সামিরার মা বলেন, ‘ওমা, মুরগির ক্যারেটই তো নেওয়া হয়নি!’ হাসিমুখে সামিরা বলে, ‘আমিই এনে দিচ্ছি।’ সে মুরগির ক্যারেট এনে দেয়। তাকে বাড়িতে একা রেখে সবাই যান গোদাগাড়ীর বসন্তপুরে।
স্ত্রী-সন্তানদের নামিয়ে দিয়ে যাত্রী নিয়ে রাজশাহীর কাটাখালী যান শামীম। তখন বেলা ৩টা বেজে ২৫ মিনিট। একসঙ্গে চলাফেরা করেন, বাড়িতেও আসা-যাওয়া আছে এমন এক যুবক শামীমকে কল করেন। জানতে চান শামীম কোথায়? শামীম জানান বাইরে আছেন। এরপর ওই ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে এখন তো বাড়ি আসছ না?’ শামীম জবাব দেন, ‘না’।
এরপর ওই ব্যক্তি কলটি কেটে দেন। শামীমের ভেতরটা অস্থির হয়ে ওঠে। তিনি রওনা দেন বাড়ির দিকে। শামীম সাধারণত বাড়ির সামনে দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় দুই মেয়েকে ডেকে ১০টা টাকা করে দেন। সেদিনই সামিরার জন্য হাতে টাকা নিয়ে নামেন। নামতেই বাড়ির সামনে ওই ব্যক্তিকে দেখেন। একসঙ্গে চলাফেরা থাকলেও সেদিন ওই ব্যক্তি শামীমকে দেখেই মুখ ঘুরিয়ে নেন। তাঁকে কেমন যেন বিচলিত দেখাচ্ছিল বলে জানান শামীম। বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে মেয়েকে ডাকতে থাকেন তিনি, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।
শামীম বাড়ির ভেতরে ঢোকেন। বাইরে থেকেই দেখেন, চোখ বড় বড় করে তাঁর দিকে তাকাচ্ছে মেয়ে। শামীম বলেন, ‘এই মেয়ে তুমি কি পাগল? এত ডাকছি শুনতে পাচ্ছ না?’ মেয়ে কথা বলে না। শামীম ঘরে ঢোকেন। দেখেন, ঘরের আড়ার সঙ্গে রশি দিয়ে সামিরার গলায় ফাঁস লাগানো। পা ঠেকে আছে মাটিতে। দ্রুতই ফাঁস খোলেন শামীম। জোরে শব্দ করে একটা শ্বাস নেয় সামিরা। দ্রুতই মেয়েকে নিজের অটোরিকশায় তুলে হাসপাতালের দিকে রওনা হন শামীম। ততক্ষণে সব শেষ। এ কথা বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন শামীম।
সামিরাকে হাসপাতালে নেওয়ার কারণ জানতে চেয়েছিলেন চিকিৎসক। শামীম বলেছিলেন, ‘গলায় ফাঁস।’ সেভাবেই মৃত্যুর সনদ হয়েছে। তাই থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে ঈদের দিন সামিরার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। সামিরার আত্মহত্যার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না পরিবার। সেদিনের সব ঘটনা এবং মরদেহ দেখার পর পরিবার ধারণা করছে, মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। আর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি।
শামীম ও তাঁর স্ত্রী নাদিরা বলেন, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করার মতো কোনো কারণ নেই। তাহলে কেন সে আত্মহত্যা করবে! তাঁরা সামিরার দেহের সবকিছুই দেখেছেন। গোপনাঙ্গ দেখে মনে হয়েছে মেয়ে ধর্ষণের শিকার। একটা হাতও ভাঙা মনে হয়েছে তাঁদের। কিন্তু মামলার ব্যাপারে ঘটনার দিন পুলিশ কিছুই জিজ্ঞেস করেনি। পুলিশ বাদী হয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেছে। তবে তাঁরা হত্যা মামলা করতে চান।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে গতকাল শুক্রবার রাতে রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, আলামত দেখে তাঁদের কাছে মনে হয়েছে যে সামিরা আত্মহত্যা করেছে। তবে পরিবার চাইলে হত্যা মামলা করতে পারবে। আজ শনিবার সকালে হত্যা মামলা করতে থামায় যান সামিরার বাবা-মা। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত তাঁরা থানায় ছিলেন। তখন পর্যন্ত মামলা হয়নি।
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
১৫ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
১৫ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
১৫ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১৯ দিন আগে