Ajker Patrika

রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের গাড়িচালক সম্রাট হত্যার ঘটনায় মামলা, খোঁজ মেলেনি বন্ধু মমিনের

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৩, ১২: ৩১
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের গাড়িচালক সম্রাট হত্যার ঘটনায় মামলা, খোঁজ মেলেনি বন্ধু মমিনের

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নিকিমত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের গাড়িচালক সম্রাট হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে নিহত সম্রাটের বাবা ঈশ্বরদী থানায় মামলাটি করেন। 

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার মামলা হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘শনিবার (২৫ মার্চ) দিবাগত রাতে নিহতের বাবা আবু বক্কর বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মমিন ও তার স্ত্রী সীমা খাতুনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে।’ 

ওসি জানান, এর আগে শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্রাটের বন্ধুর স্ত্রী সীমা খাতুনকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর তিনি পুলিশের কাছে হত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। সেগুলোর সত্যতা যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে সম্রাটের বন্ধু মমিনকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারলে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। সীমা খাতুনের রিমান্ড চেয়ে তাঁকে রোববার আদালতে তোলা হবে। 

নিহত সম্রাটের বাবা আবু বক্কারের দাবি, ‘সম্রাটের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে বন্ধু মমিন ও তাঁর স্ত্রী সীমা মিলে কৌশলে সম্রাটকে হত্যা করেছেন। তাঁদের সঙ্গে আরও মানুষ জড়িত থাকতে পারে।’ 

মরদেহ উদ্ধারের পর প্রাডো গাড়ির মালিক আনিসুর রহমান বলেন, ‘আটক মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুন পুলিশকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে সম্রাট আমার বাসায় আসে। আমাকে বলে তার মাথা ধরেছে, বলেই বিছানায় শুয়ে পড়ে। আমার স্বামী মমিন ওষুধ আনতে গেলে সম্রাট আমার শরীরে হাত দেয়। আমি রাগে ও ক্ষোভে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় ও গোপানাঙ্গে আঘাত করলে সে মারা যায়। পরে আমার স্বামী বাসায় ফিরলে মরদেহ বস্তায় ভরে ওই গাড়িতে তুলে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করার পর আমার স্বামী আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে শিলাইদহে গাড়ি রেখে সটকে পড়ে।’ 

ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, নিহত সম্রাট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আরডিবি নামে একটি যানবাহন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আর তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ান নিকিমত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউরি ফেদারোপের ব্যবহৃত গাড়িটি চালাতেন। 

এদিকে, সম্রাট হোসেন হত্যার পর পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁর বন্ধু প্রধান আসামি আব্দুল মমিন (৩১)। আজ রোববার সকাল পর্যন্ত তাঁর কোনো সন্ধান পাননি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। 

এর আগে শনিবার সকালে পাবনা-কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী পদ্মা নদীর শিলাইদহ ঘাট এলাকা থেকে রূপপুর প্রকল্পের নিকিমত কোম্পানির গাড়িচালক সম্রাট হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা হয় নিকিতম কোম্পানির এমডির ব্যবহৃত বিলাসবহুল প্রাডো গাড়িটি। 

নিহত সম্রাট পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মধ্য অরণকোলা আলহাজ ক্যাম্প এলাকার আবু বক্কারের ছেলে। রূপপুর প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে সম্রাটের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয় একই উপজেলার বাঁশেরবাদা গ্রামের আব্দুল মমিনের। 

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার আরও বলেন, শনিবার দুপুরের পর আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে সম্রাটের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সন্ধ্যার পর দাফন সম্পন্ন হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত