আশরাফুল আলম আপন, বদরগঞ্জ
রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া মুক্তা বানুর (২০) পরিবারে নেই ঈদের আনন্দ। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে মুক্তার মা-বাবা বারবার ডুকরে উঠছেন। তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন প্রতিবেশীরা। তার ওপর মেয়ের লাশ ছাড়াতে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধার করে হাসপাতালে দেওয়া ৬৪ হাজার টাকা পরিশোধের দুশ্চিন্তায় দিশেহারা দরিদ্র পরিবারটি।
আজ রোববার বেলা ২টায় মুক্তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাড়ি নিস্তব্ধ। প্রতিবেশীরা বাড়িতে বসে আছেন। একটি ঘরে মুক্তার মা জায়নামাজে বসে মেয়ের জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে দুই হাত তুলে দোয়া করছেন আর কাঁদছেন। বাড়ির পাশে মুক্তার কবর ঘিরতে বাঁশের বাতা তৈরি করছেন মুক্তার দিনমজুর বাবা।
প্রতিবেশী আলোকা বেগম বলেন, ‘একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে মুক্তার মা-বাবা বারবার ডুকরে উঠছেন। আমরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কারণ, মেয়েকে খুবই ভালোবাসতেন মা-বাবা।’
আলোকা বেগম আরও বলেন, ‘মেয়ের চিকিৎসার নামে প্রাইম হাসপাতাল অনেক টাকা নিয়েছে। এই টাকা গ্রামের মানুষের কাছ থেকে ধার করেছেন মা-বাবা। কয়দিন ধরে মেয়ের শোকে কাজে যেতে পারেননি বাবা। এ কারণে পরিবার অনেকটাই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঈদের আমেজ নেই তাঁদের মাঝে। এক দিকে মেয়ের শোক, অন্যদিকে ধারের টাকা পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত মুক্তার মা-বাবা।’
সরেজমিন জানা গেছে, মুক্তা অল্পে বয়সে বিয়ে করতে চায়নি। সে চেয়েছিল সমাজের জন্য কাজ করতে। এ জন্য ছোটবেলা থেকে তার ঝোঁক ছিল লেখাপড়ার প্রতি। সে সব সময়ে উচ্চশিক্ষিত হয়ে সমাজের জন্য কাজ করার কথা বলত পরিবার-গ্রামবাসীকে। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে মুক্তা বানুর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তাঁর লেখাপড়া বন্ধ করে দেড় বছর আগে বিয়ে দেওয়া হয়। গত ২৯ মার্চ সন্তান প্রসবকালে না ফেরার দেশে চলে যান মুক্তা বানু।
মুক্তা বানুর বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়নের মোস্তফাপুর বখশীপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা মোক্তার হোসেন দিনমজুর ও মা মোহসিনা বেগম গৃহিণী।
জানা গেছে, মুক্তাকে দেড় বছর আগে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর স্বামী সালমান হোসেন। সালমান রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মুক্তা বানু আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে গত দুই মাস আগে বাবা মোক্তার হোসেন তাঁকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। গত ২৮ মার্চ প্রসববেদনা উঠলে তাঁকে প্রথমে রংপুরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে উচ্চ রক্তচাপ থাকায় গভীর রাতে তাঁকে নেওয়া হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পরদিন (২৯ মার্চ) ভোর ৫টার দিকে স্বাভাবিকভাবে মৃত ছেলেসন্তান প্রসব করেন মুক্তা বানু। এরপর ওই দিন দুপুরে তাঁর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তখন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে আইসিইউতে রেফার্ড করেন। সেখানে শয্যা ফাঁকা না থাকায় ওই দিন বিকেলে তাঁকে ভর্তি করা হয় রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে রাত ১১টার দিকে মুক্তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
বাবা মোক্তার হোসেনের অভিযোগ করে বলেন, ৩০ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে মুক্তা মারা গেলেও বাড়তি টাকা আদায়ের জন্য তাঁকে রাত ২টা পর্যন্ত আইসিইউতে রেখে ১০০ প্রকার ওষুধ দেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসার বিল ৬৪ হাজার টাকা আদায়ে রাত ২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত লাশ আটকে রাখা হয়। সকাল ৬টার মধ্যে লাশের দুর্গন্ধ ছড়ালে দ্রুত হাসপাতাল থেকে লাশ ছাড়িয়ে বাড়ির পাশে দাদা-দাদির কবরের পাশে দাফন করা হয়।
এ নিয়ে ১ এপ্রিল আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘আইসিইউতে ১৪ ঘণ্টায় ১ রোগীকে ১০০ ওষুধ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে রংপুরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আজকের পত্রিকার সূত্র ধরে ওই দিন তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে দেন রংপুরের সিভিল সার্জন মো. ওয়াজেদ আলী। এতে কমিটির প্রধান করা হয় ডেপুটি সিভিল সার্জন রুহুল আমিনকে। ওই দিনই মুক্তার বাবা মোক্তার হোসেন প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রংপুর জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্ত প্রতিবেদন তিন কার্যদিবসের মধ্যে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে জমা দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও আজ রোববার পর্যন্ত জমা দেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, মুক্তা বানুর দিনমজুর বাবার ভিটাবাড়ি ছাড়া আর কোনো জমিজমা নেই। কখনো মানুষের বাড়িতে কাজ করেন, কখনো পৌর শহরে রাস্তার ধারে কাঁচামাল বিক্রি করে সংসার চালান মোক্তার হোসেন। নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসারে তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে মুক্তা বানু ২০২০ সালে আফতাবগঞ্জ দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসা থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ৪২ পেয়ে দাখিল পাস করার পর বদরগঞ্জ মহিলা কলেজে ভর্তি হয়। অর্থাভাবে সেখানে মুক্তা এইচএসসির ফরম পূরণ করতে পারেননি। ছেলে মোকছেদ আলী (১৮) পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করলেও অর্থাভাবে তাঁরও পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিবেশী ফারজেনা বেগম বলেন, ‘মুক্তা বানু ছিল পরিবারের আদরের মেয়ে। সে অত্যন্ত নম্র-ভদ্র মেয়ে ছিল। মুক্তা সব সময় বলত পড়াশোনা করে সমাজের জন্য ভালো কিছু কাজ করার কথা। লেখাপড়া শেষ না করে বিয়ে করতে চায়নি সে। কিন্তু তার গরিব মা-বাবা অর্থাভাবে তার লেখাপড়া বন্ধ করে বিয়ে দেয়।’
মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়ে লেখাপড়া কখনোই ছাড়তে চায়নি। এই বয়সে বিয়ে করতেও চায়নি। সে স্বপ্ন দেখত পড়াশোনা করে নিজ পায়ে দাঁড়ানোর। কিন্তু আমি তাকে পড়াতে পারিনি। মেয়ে বড় হয়ে গেলে প্রতিবেশীদের কটু কথা শোনার ভয়ে তাকে বাড়িতে রাখিনি। দেড় বছর আগে তাকে বিয়ে দেই। যদি জানতাম মেয়ে এভাবে চলে যাবে, কখনোই তাকে অমতে বিয়ে দিতাম না।’
মেয়ের মা মোহসিনা বলেন, ‘আমার মেয়ে লেখাপড়া করতে চেয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে তার ইচ্ছা পূরণ করতে পারিনি। এখন নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে।’ মোহসিনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পরও ১৪ ঘণ্টা আইসিইউতে রেখে বাড়তি টাকা যারা নিয়েছে, আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই।’
আজ বিকেলে মোবাইল ফোনে রংপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন মো. রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত শেষ করতে আরও সময় লাগবে। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারিনি।’
রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া মুক্তা বানুর (২০) পরিবারে নেই ঈদের আনন্দ। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে মুক্তার মা-বাবা বারবার ডুকরে উঠছেন। তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন প্রতিবেশীরা। তার ওপর মেয়ের লাশ ছাড়াতে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধার করে হাসপাতালে দেওয়া ৬৪ হাজার টাকা পরিশোধের দুশ্চিন্তায় দিশেহারা দরিদ্র পরিবারটি।
আজ রোববার বেলা ২টায় মুক্তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাড়ি নিস্তব্ধ। প্রতিবেশীরা বাড়িতে বসে আছেন। একটি ঘরে মুক্তার মা জায়নামাজে বসে মেয়ের জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে দুই হাত তুলে দোয়া করছেন আর কাঁদছেন। বাড়ির পাশে মুক্তার কবর ঘিরতে বাঁশের বাতা তৈরি করছেন মুক্তার দিনমজুর বাবা।
প্রতিবেশী আলোকা বেগম বলেন, ‘একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে মুক্তার মা-বাবা বারবার ডুকরে উঠছেন। আমরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কারণ, মেয়েকে খুবই ভালোবাসতেন মা-বাবা।’
আলোকা বেগম আরও বলেন, ‘মেয়ের চিকিৎসার নামে প্রাইম হাসপাতাল অনেক টাকা নিয়েছে। এই টাকা গ্রামের মানুষের কাছ থেকে ধার করেছেন মা-বাবা। কয়দিন ধরে মেয়ের শোকে কাজে যেতে পারেননি বাবা। এ কারণে পরিবার অনেকটাই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঈদের আমেজ নেই তাঁদের মাঝে। এক দিকে মেয়ের শোক, অন্যদিকে ধারের টাকা পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত মুক্তার মা-বাবা।’
সরেজমিন জানা গেছে, মুক্তা অল্পে বয়সে বিয়ে করতে চায়নি। সে চেয়েছিল সমাজের জন্য কাজ করতে। এ জন্য ছোটবেলা থেকে তার ঝোঁক ছিল লেখাপড়ার প্রতি। সে সব সময়ে উচ্চশিক্ষিত হয়ে সমাজের জন্য কাজ করার কথা বলত পরিবার-গ্রামবাসীকে। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে মুক্তা বানুর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তাঁর লেখাপড়া বন্ধ করে দেড় বছর আগে বিয়ে দেওয়া হয়। গত ২৯ মার্চ সন্তান প্রসবকালে না ফেরার দেশে চলে যান মুক্তা বানু।
মুক্তা বানুর বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়নের মোস্তফাপুর বখশীপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা মোক্তার হোসেন দিনমজুর ও মা মোহসিনা বেগম গৃহিণী।
জানা গেছে, মুক্তাকে দেড় বছর আগে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর স্বামী সালমান হোসেন। সালমান রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মুক্তা বানু আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে গত দুই মাস আগে বাবা মোক্তার হোসেন তাঁকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। গত ২৮ মার্চ প্রসববেদনা উঠলে তাঁকে প্রথমে রংপুরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে উচ্চ রক্তচাপ থাকায় গভীর রাতে তাঁকে নেওয়া হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পরদিন (২৯ মার্চ) ভোর ৫টার দিকে স্বাভাবিকভাবে মৃত ছেলেসন্তান প্রসব করেন মুক্তা বানু। এরপর ওই দিন দুপুরে তাঁর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তখন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে আইসিইউতে রেফার্ড করেন। সেখানে শয্যা ফাঁকা না থাকায় ওই দিন বিকেলে তাঁকে ভর্তি করা হয় রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে রাত ১১টার দিকে মুক্তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
বাবা মোক্তার হোসেনের অভিযোগ করে বলেন, ৩০ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে মুক্তা মারা গেলেও বাড়তি টাকা আদায়ের জন্য তাঁকে রাত ২টা পর্যন্ত আইসিইউতে রেখে ১০০ প্রকার ওষুধ দেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসার বিল ৬৪ হাজার টাকা আদায়ে রাত ২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত লাশ আটকে রাখা হয়। সকাল ৬টার মধ্যে লাশের দুর্গন্ধ ছড়ালে দ্রুত হাসপাতাল থেকে লাশ ছাড়িয়ে বাড়ির পাশে দাদা-দাদির কবরের পাশে দাফন করা হয়।
এ নিয়ে ১ এপ্রিল আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘আইসিইউতে ১৪ ঘণ্টায় ১ রোগীকে ১০০ ওষুধ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে রংপুরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আজকের পত্রিকার সূত্র ধরে ওই দিন তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে দেন রংপুরের সিভিল সার্জন মো. ওয়াজেদ আলী। এতে কমিটির প্রধান করা হয় ডেপুটি সিভিল সার্জন রুহুল আমিনকে। ওই দিনই মুক্তার বাবা মোক্তার হোসেন প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রংপুর জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্ত প্রতিবেদন তিন কার্যদিবসের মধ্যে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে জমা দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও আজ রোববার পর্যন্ত জমা দেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, মুক্তা বানুর দিনমজুর বাবার ভিটাবাড়ি ছাড়া আর কোনো জমিজমা নেই। কখনো মানুষের বাড়িতে কাজ করেন, কখনো পৌর শহরে রাস্তার ধারে কাঁচামাল বিক্রি করে সংসার চালান মোক্তার হোসেন। নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসারে তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে মুক্তা বানু ২০২০ সালে আফতাবগঞ্জ দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসা থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ৪২ পেয়ে দাখিল পাস করার পর বদরগঞ্জ মহিলা কলেজে ভর্তি হয়। অর্থাভাবে সেখানে মুক্তা এইচএসসির ফরম পূরণ করতে পারেননি। ছেলে মোকছেদ আলী (১৮) পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করলেও অর্থাভাবে তাঁরও পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিবেশী ফারজেনা বেগম বলেন, ‘মুক্তা বানু ছিল পরিবারের আদরের মেয়ে। সে অত্যন্ত নম্র-ভদ্র মেয়ে ছিল। মুক্তা সব সময় বলত পড়াশোনা করে সমাজের জন্য ভালো কিছু কাজ করার কথা। লেখাপড়া শেষ না করে বিয়ে করতে চায়নি সে। কিন্তু তার গরিব মা-বাবা অর্থাভাবে তার লেখাপড়া বন্ধ করে বিয়ে দেয়।’
মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়ে লেখাপড়া কখনোই ছাড়তে চায়নি। এই বয়সে বিয়ে করতেও চায়নি। সে স্বপ্ন দেখত পড়াশোনা করে নিজ পায়ে দাঁড়ানোর। কিন্তু আমি তাকে পড়াতে পারিনি। মেয়ে বড় হয়ে গেলে প্রতিবেশীদের কটু কথা শোনার ভয়ে তাকে বাড়িতে রাখিনি। দেড় বছর আগে তাকে বিয়ে দেই। যদি জানতাম মেয়ে এভাবে চলে যাবে, কখনোই তাকে অমতে বিয়ে দিতাম না।’
মেয়ের মা মোহসিনা বলেন, ‘আমার মেয়ে লেখাপড়া করতে চেয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে তার ইচ্ছা পূরণ করতে পারিনি। এখন নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে।’ মোহসিনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পরও ১৪ ঘণ্টা আইসিইউতে রেখে বাড়তি টাকা যারা নিয়েছে, আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই।’
আজ বিকেলে মোবাইল ফোনে রংপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন মো. রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত শেষ করতে আরও সময় লাগবে। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারিনি।’
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
১৫ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
১৫ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
১৫ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১৯ দিন আগে