Ajker Patrika

‘যে স্যারেরই মা হোক টাকা দিতে হবে’

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০: ১৭
‘যে স্যারেরই মা হোক টাকা দিতে হবে’

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে অসুস্থ মাকে ভর্তি করাতে গিয়ে কর্মচারীদের দ্বারা চিকিৎসক হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া মাসুদ ও ঝর্না বেগম নামের দুই কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়।

এদিকে এ ঘটনার পেছনে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা জানতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরীফুল হাসান।

হাসপাতালের পরিচালক জানান, অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট এ বি এম রাশেদুল আমীরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুই কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া হৃদ্‌রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হরিপদ সরকারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী এবং ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল হাসান। কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রমেক হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট এ বি এম রাশেদুল আমীর তাঁর অসুস্থ মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে গিয়ে বকশিশ সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রাশেদুল আমীর। এর অনুলিপি দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি মেয়র, রমেক অধ্যক্ষ, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবর।

ভুক্তভোগী চিকিৎসক রাশেদুল আমীরের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার তাঁর মা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। এ সময় জরুরি বিভাগে ভর্তির জন্য ২৫০ টাকা দাবি করা হয়। পরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মা পরিচয় জানতে পেরে তাঁরা ভর্তি বাবদ ৫০ টাকা নেন। যদিও হাসপাতালে নির্ধারিত ভর্তি ফি ২৫ টাকা এবং সরকারি কর্মকর্তার মা এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ভর্তি ফি না নেওয়ার কথা।

রাশেদুল আমীর অভিযোগে উল্লেখ করেন, ‘ভর্তি-পরবর্তী সিসিইউতে তাঁর মাকে নেওয়া হলে সেখানে জরুরি বিভাগে কর্মরত দুজন জোরপূর্বক আমার ব্যক্তিগত সহকারীর কাছ থেকে ২০০ টাকা বকশিশ নেন। এ সময় তাঁদের আমার নাম-পরিচয় এবং রোগী সম্পর্কে জানানো হলে তাঁরা বলেন ‘যে স্যারের মা-ই হোক টাকা দিতে হবে’। পরে আমি রাতে আসার পর মায়ের শয্যার পাশে অবস্থানের সময় সিসিইউতে কর্মরত ওয়ার্ডবয় পরিচয়ধারী মাসুদ আমার কাছে সরাসরি টাকা দাবি করে। এ সময় আমি সেই কথাবার্তার কিছু মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করি। এ ঘটনা আমার কাছে অত্যন্ত মানসিক পীড়াদায়ক এবং অপমানজনক। যে প্রতিষ্ঠানে আমি সেবা দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে আমি হয়রানির শিকার হচ্ছি তা সত্যি দুঃখজনক। আমি নিজে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা হয়েও যদি হয়রানির শিকার হই, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা তো সহজেই অনুমেয়। অভিযোগের বিষয়টি যথাযথ অনুসন্ধানপূর্বক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের হয়রানি বন্ধ এবং সেবার মান বৃদ্ধিতে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত