বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা আসন্ন শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে চীনের টিকা

 নিজস্ব প্রতিবেদক 
আপডেট : ০৬ জুন ২০২১, ১৯: ০০
Thumbnail image

ঢাকা: আগামী ১৩ জুন চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম থেকে দ্বিতীয় দফায় ছয় লাখ ডোজ টিকা উপহার পাবে বাংলাদেশ। এই টিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে– এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, যেসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা আসন্ন আপাতত শুধু তাঁদেরকেই এই টিকা দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তথ্যমতে, বর্তমানে সরকারি, বেসরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬৭ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। সেই হিসেবে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রায় সাড়ে ২৩ লাখ ডোজ টিকার দরকার।

তবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র রোবেদ আমিন আজকের পত্রিকাকে জানান, যেসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা আসন্ন, আপাতত তাঁরাই কেবল অগ্রাধিকার পাবেন।

করোনা প্রতিরোধে এ পর্যন্ত দেশে পাঁচটি টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ আজ রোববার (৬ জুন) পঞ্চম ভ্যাকসিন হিসেবে চীনের সিনোভ্যাককে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অনুমোদনের বিষয়টি গণমাধ্যমে জানানো হয়। এই টিকার পরিবেশক হিসেবে কাজ করবে ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড।

এতে বলা হয়েছে, দুই ডোজ বিশিষ্ট সিনোভ্যাক চীনা লাইফ সায়েন্সেস কোম্পানির উৎপাদিত টিকা ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীরা নিতে পারবেন। প্রথম ডোজ দেওয়ার দুই বা চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। টিকাটি সংরক্ষণ করতে হবে দুই থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়।

এতে আরও বলা হয়, চীনের এনএমপিএ (ন্যাশনাল মেডিসিন্যাল প্রোডাক্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) গত ৯ ফেব্রুয়ারি এই টিকার অনুমোদন দেয়। যা আরও ২২টি দেশে জরুরি ব্যবহারে অনুমোদন পেয়েছে।

এর আগে বছরের শুরুতেই দেশে প্রথমবারের মতো জরুরি অনুমোদন পায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত কোভিশিল্ড টিকা। পরে এপ্রিলে অনুমোদন পায় চীনের সিনোফার্ম ও রাশিয়ার স্পুতনিক-ভি। এই দুই টিকা পেতে দুই দেশের সঙ্গে আলোচনা শেষ পর্যায়ে সরকারের। এ ছাড়া গত ২৭ মে ফাইজারের টিকা অনুমোদনের পর এবার পঞ্চম ভ্যাকসিন হিসেবে সিনোভ্যাক ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হলো।

টিকা পাওয়া সহজতর করতে এতগুলো ভ্যাকসিনের অনুমোদনকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।

আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘অনুমোদন দেওয়ার মানে হলো, ইচ্ছে করলে আমরা টিকাটি নিতে পারি। এখন সংগ্রহ করতে সরকার কতটা সক্ষম হবে সেটাই বড় বিষয়। সারা পৃথিবীতে এখন টিকার সংকট চলছে। সরকার চেষ্টা করছে কিন্তু কোথায় যেন ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে!’

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিনোভ্যাকের টিকা অনুমোদন দিলেও এটির ব্যবহার নিয়ে এখনো দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন। টিকা হাতে পেলে বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যাবে।

প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, যেহেতু মাত্রই অনুমোদন দেওয়া হলো। আমরা এটি নিয়ে বিস্তর আলোচনা করব। এরপর জানতে পারব, কীভাবে এই টিকা সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা যায়।

এদিকে গত মাসে উপহার হিসেবে আসা সিনোফার্মের টিকা যাদের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে প্রত্যেকই ভালো আছেন বলে জানা গেছে। গত ২৫ মে পরীক্ষামূলকভাবে মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ ২ হাজার ১৬২ জনকে এই টিকা দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত তাদের শরীরে জটিল কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। ফলে শিগগিরই এই টিকা প্রয়োগ শুরু হবে বলেও জানান ডা. রোবেদ আমিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত