জাহাঙ্গীর আলম
শিক্ষায় নাগরিকদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ব্যাপক সংস্কার আনছে চীন সরকার। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কোচিং বাণিজ্যে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত জুলাই মাসেই চীনের টিউটোরিয়াল কোম্পানিগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগে রাশ টেনেছে। সেই সঙ্গে এই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে নতুন করে তালিকাভুক্ত হওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের খাতটি ভয়ানক সংকটে পড়েছে। নিউইয়র্কের শেয়ারবাজারে রাতারাতি ১০০ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে বৃহৎ তিনটি টিউটোরিয়াল কোম্পানি। চাকরি হারিয়েছেন হাজার হাজার কর্মী।
সারা দুনিয়াতে বিদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চীনা। অধিকাংশ চীনা শিক্ষার্থীর গ্রাহক আবার অস্ট্রেলিয়া। এর জন্য সন্তানদের বলতে গেলে প্রাথমিক থেকেই প্রস্তুত করতে থাকেন চীনা অভিভাবকেরা। এই মরিয়া অভিভাবকদের আগ্রহের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রমরমা ব্যবসা জমিয়ে ফেলেছে কিছু কোম্পানি। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পর্যন্ত সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সরাসরি সহযোগিতা করে তারা। এমনকি কোনো কোনো টিউটোরিং কোম্পানির নিজস্ব ক্যাম্পাস পর্যন্ত আছে।
কিন্তু এসব কোম্পানি শুধু বড় শহর কেন্দ্রিক। একইভাবে হাতেগোনা কয়েকটি নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বড় শহরে। আর এক সন্তান নীতির কারণে চীনা বাবা-মায়েরা সন্তানের একটি সফল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য পড়াশোনার পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করেন। তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে বহু অভিভাবকই এসব প্রতিষ্ঠানে শিশুদের পাঠাতে পারেন না। ফলে বিশেষ করে শহরের বাইরের শিশুরা পিছিয়েই থাকছে। উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে গ্রামের শিক্ষার্থীদের যেতে হচ্ছে শহরে। কিন্তু সে সুযোগ শুধু সামর্থ্যবানদের জন্যই।
শি জিন পিং সরকার চাইছে, শিক্ষা ব্যয়ে ন্যায্যতা আনতে, সর্বোপরি নাগরিকদের জন্য শিক্ষা সহজলভ্য করতে, সবার জন্য শিক্ষায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে। সেই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিভাবকদের ব্যয় হ্রাসের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমানোও উদ্দেশ্য।
কিন্তু অনেক অভিভাবক বলছেন, তাঁদের সন্তানদের কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। ফলে তাঁদের টিউটোরিং কোম্পানির কাছে যেতেই হয়। বিশেষ করে ভর্তি পরীক্ষার আগে টিউটোরিং প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের ঢল নামে। সন্তানকে পছন্দের স্কুল বা কলেজে ভর্তি করানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন অভিভাবকেরা। এখন এসব কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে সন্তানদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রাপ্তি চরম অনিশ্চয়তা মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
সম্প্রতি বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন অনেক দিন ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কথা বলছে। গত জুলাই মাসে দেশে কার্যরত সব অনলাইন টিউটোরিং কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর নিয়মকানুন ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলো বাংলাদেশে কোচিং সেন্টারগুলোর মতোই অবাধে ব্যবসা করত।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এই কোচিং বাণিজ্যে বিদেশি বিনিয়োগ সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া তারা আর কোনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে না। সরকারের অভিযানের আগে এই শিল্পের আকার ছিল ১২০ বিলিয়ন ডলার। সরকার নিয়ন্ত্রণ আরোপের পর নিউইয়র্কের শেয়ারবাজার থেকে শীর্ষ তিনটি কোম্পানির বাজারদর রাতারাতি ১০০ বিলিয়ন ডলার উধাও হয়ে গেছে। টিএএল এডুকেশন, নিউ ওরিয়েন্টাল এডুকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি এবং গাওতু টেকএডু নামে এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর গত বছরও বেশ উচ্চ ছিল। নতুন আইনের কারণে চাকরি হারিয়েছেন হাজার হাজার কর্মীও।
জুলাইয়ে চীনের মন্ত্রিসভা নতুন আইন ঘোষণা করার পর ঝ্যাংমেন এডুকেশন এক হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে এবং দুটি অফিস ভবনের ইজারা চুক্তি বাতিল করেছে। অথচ জুনেও নিউইয়র্কের পুঁজিবাজারে কোম্পানিটি রীতিমতো উড়ছিল। চীনা সংবাদমাধ্যম কাইসিন জানিয়েছে, টিকটকের মূল কোম্পানি বাইটড্যান্সেরও কোটি টাকার টিউটোরিং ব্যবসা রয়েছে। হাজার হাজার কর্মী রয়েছে তাদের, রয়েছে শিক্ষা বিষয়ক প্রযুক্তি পণ্য। তারাও এরই মধ্যে কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টিউটোরিং প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠক্রমের অবশ্যপাঠ্য বিষয়গুলো পড়াতে পারবে। তবে এই কার্যক্রমটি অবশ্যই অলাভজনক হতে হবে। চলতি বছরের মধ্যেই তাদের এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে বলা হয়েছে।
এদিকে যেসব প্রতিষ্ঠান নতুন আইনের আওতার বাইরে থাকছে তাদের কার্যক্রমে কিছু পরিবর্তন আনার দিকে নজর দিচ্ছে সরকার। সেখানে হাইস্কুল টিউটোরিং, ভকেশনাল শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন শিক্ষা এবং হাইব্রিড বিজনেস মডেল এই পরিবর্তনের আওতায় থাকবে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, হাইব্রিড বিজনেস মডেল বলতে বোঝানো হচ্ছে, স্কুল খোলা থাকার সময় দৈনিক সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত স্কুলপাঠ্য পড়ানো যাবে। আর ক্রীড়া, সংগীত, শিল্পকলা ইত্যাদি বিষয়ে ক্লাস অবশ্যই সাপ্তাহিক ছুটি এবং সরকারি ছুটির দিন করতে হবে। এই মডেল অনুসরণ করলে কোম্পানিগুলো শিক্ষার্থী ধরে রাখতে পারবে এবং বিপুল অঙ্কের টাকা ফেরত দেওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সোজা কথায় কোম্পানিগুলোকে স্কুলপাঠ্য বিষয়ের কোচিং ব্যবসা থেকে নজর সরাতে হবে এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে হবে। টিকতে চাইলে তাদের স্কুলপাঠ্যের বাইরের শিক্ষার প্রতি নজর দিতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে পড়ানো স্কুলপাঠ্য বলতে নৈতিক শিক্ষা, চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি, ইতিহাস, ভূগোল, গণিত, বিদেশি ভাষা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান বোঝানো হয়েছে।
যেসব কোম্পানি এরই মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে, তাদের তালিকায় নাম রাখতে হলে হাইব্রিড বিজনেস মডেলে যেতে হবে এবং স্কুলপাঠ্যের বাইরের বিষয়ে নজর দিতে হবে। এতে তাদের ব্যবসা ব্যাপকভাবে সংকুচিত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যেখানে বৃহৎ টিউটোরিং কোম্পানি যেমন, নিউ ওরিয়েন্টাল, টিএএল এবং গাওতুর কোচিং ব্যবসার রাজস্বের ৫০ থেকে ৮০ শতাংশই আসে স্কুলপাঠ্য বিষয় থেকে।
এদিকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে টিউটোরিং কোম্পানিগুলো বিকল্প বিজনেস মডেল দাঁড় করানোর কথা ভাবছে। বিশেষ করে সার্বিক দক্ষতা উন্নয়ন, স্কুল উত্তর যত্ন, সরকারি বিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতা এবং ভকেশনাল শিক্ষার দিকে নজর দিচ্ছে তারা। কিন্তু মূল ব্যবসার চাইতে এটার আকার একেবারে নগণ্য।
চায়না ইন্টারন্যাশনাল ক্যাপিটালের হিসাবে, স্কুলপাঠ্য বিষয় পড়াতে না পারলে টিউটোরিং শিল্পের মোট রুটিন ভুক্ত ক্লাসের সংখ্যা ৬১ শতাংশ কমে যাবে। নিউ ওরিয়েন্টালের মতো কোম্পানির রাজস্ব কমবে ৪৩ শতাংশ আর টিএএলের রাজস্ব কমবে ৬৭ শতাংশ।
একটি আঞ্চলিক স্কুল উত্তর প্রশিক্ষণ কোম্পানির কর্মকর্তা বলেন, স্কুল খোলা থাকাকালেও কোম্পানিগুলো পড়াতে পারবে। কিন্তু সেই ক্লাস সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় শুরু হয়ে ৯টায় শেষ হবে। এখন শিক্ষার্থীদের যদি হোমওয়ার্ক শেষ করতেই সাড়ে ৮টা বেজে যায় তাহলে স্কুল ছুটির পর হাতে আর কত সময়ই বা থাকে! আগে যেখানে তাঁরা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আটটি ক্লাসের রুটিন করতেন, এখন সেখানে স্কুল ছুটির দিনে মাত্র পাঁচটি ক্লাস রাখতে হচ্ছে। এতে কোম্পানির রাজস্ব ৬০ শতাংশ কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেক কোম্পানি অনলাইন কোচিংয়ের দিকে ঝুঁকছে। লাইভ ক্লাসের পাশাপাশি কেউ কেউ রেকর্ড করা কোর্সও অফার করছে। কিন্তু শিক্ষা কমিশন সতর্ক করে বলেছে, রেকর্ডেড কোর্সগুলোকে ভবিষ্যতে শিক্ষা প্রকাশনী হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তার মানে, এর জন্য লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক হবে।
তবে নতুন নীতিমালায় স্কুলপাঠ্য বিষয়গুলো পড়ানোর রমরমা ব্যবসা সংকুচিত হলেও অন্যদিকে আরেক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাচ্ছে। কারণ শিক্ষা চাহিদা মেটাতে সরকারি বিদ্যালয়গুলোর ওপর চাপ বাড়বে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, স্কুলে ছয় ও সাত বছর বয়সী শিশুদের কোনো লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। প্রতি শিক্ষাবর্ষে নির্বাচনী ও মূল পরীক্ষার সংখ্যাও সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কাগজে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে না। অন্যান্য শ্রেণির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতি সেমিস্টারে একটি করে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারে। জুনিয়র হাইস্কুলে মিডটার্ম (অর্ধ সাময়িকী) পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে কোনো ধরনের আঞ্চলিক বা আন্তঃস্কুল পরীক্ষার আয়োজন করা যাবে না। নন-গ্র্যাজুয়েট জুনিয়র হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক নির্বাচনী পরীক্ষা, ইউনিট পরীক্ষা, মাসিক পরীক্ষা ইত্যাদি নেওয়া যাবে না। বিভিন্ন একাডেমিক রিসার্চের নামে নানা মোড়কে পরীক্ষা নেওয়া নিষেধ। প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্ক দেওয়াও নিষিদ্ধ করেছে। আর জুনিয়র হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য ছোট আকারে হোমওয়ার্ক দিতে বলেছে। বলা হয়েছে, রাতের বেলা দেড় ঘণ্টায় শেষ করা যাবে এমন হোমওয়ার্ক দিতে হবে।
ফলে কার্যকর শিক্ষা ব্যবস্থা উদ্ভাবন নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে গবেষণা ও শিক্ষা উপকরণ সরবরাহে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। এরই মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠদান ও উন্নত শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানে সহযোগিতা করছে।
বেইজিংয়ের লানসাম টেকনোলজি চীনা ভাষা শিক্ষার কোর্স করায়। তারা এখন নাটক ও শিল্পকলা শিক্ষার দিকে নজর দিচ্ছে। বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই ক্লাস শেষে তারা এই বিষয়ে পাঠদান করে। শেনঝেন দিয়ানমাও টেকনোলজি নামে আরেক প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সাল থেকে কোডিং কোর্স, পাঠদান উপকরণ এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। তারা ২১ হাজারের বেশি বিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করছে। যদিও স্কুলপাঠ্য বিষয়ে কোচিং ব্যবসার চেয়ে এখানে প্রান্তিক মুনাফা বেশ কম।
আবার তথ্যভিত্তিক কিছু প্ল্যাটফর্মও ব্যবসার নতুন ক্ষেত্র হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় সিঙ্গাপুরের টিমাসেকের সমর্থনপুষ্ট কোম্পানি ইকিজোয়ে। তারা ২০১১ সাল থেকেই সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে বিনা মূল্যে সেবা দিয়ে আসছে। তারা শিক্ষকদের কোর্স তৈরি, হোমওয়ার্ক দেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে সহযোগিতা করে। সেবাটি সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে হওয়ায় কোম্পানিটির রাজস্ব নির্ভর করে মূলত কে-১২ অনলাইন টিউটোরিং ক্লাসের ওপর। এ ক্ষেত্রে কোম্পানিকে ভর্তুকি দিতে পারে চীনা সরকার।
তথ্যসূত্র: নিক্কেই এশিয়া, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
শিক্ষায় নাগরিকদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ব্যাপক সংস্কার আনছে চীন সরকার। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কোচিং বাণিজ্যে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত জুলাই মাসেই চীনের টিউটোরিয়াল কোম্পানিগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগে রাশ টেনেছে। সেই সঙ্গে এই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে নতুন করে তালিকাভুক্ত হওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের খাতটি ভয়ানক সংকটে পড়েছে। নিউইয়র্কের শেয়ারবাজারে রাতারাতি ১০০ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে বৃহৎ তিনটি টিউটোরিয়াল কোম্পানি। চাকরি হারিয়েছেন হাজার হাজার কর্মী।
সারা দুনিয়াতে বিদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চীনা। অধিকাংশ চীনা শিক্ষার্থীর গ্রাহক আবার অস্ট্রেলিয়া। এর জন্য সন্তানদের বলতে গেলে প্রাথমিক থেকেই প্রস্তুত করতে থাকেন চীনা অভিভাবকেরা। এই মরিয়া অভিভাবকদের আগ্রহের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রমরমা ব্যবসা জমিয়ে ফেলেছে কিছু কোম্পানি। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পর্যন্ত সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সরাসরি সহযোগিতা করে তারা। এমনকি কোনো কোনো টিউটোরিং কোম্পানির নিজস্ব ক্যাম্পাস পর্যন্ত আছে।
কিন্তু এসব কোম্পানি শুধু বড় শহর কেন্দ্রিক। একইভাবে হাতেগোনা কয়েকটি নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বড় শহরে। আর এক সন্তান নীতির কারণে চীনা বাবা-মায়েরা সন্তানের একটি সফল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য পড়াশোনার পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করেন। তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে বহু অভিভাবকই এসব প্রতিষ্ঠানে শিশুদের পাঠাতে পারেন না। ফলে বিশেষ করে শহরের বাইরের শিশুরা পিছিয়েই থাকছে। উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে গ্রামের শিক্ষার্থীদের যেতে হচ্ছে শহরে। কিন্তু সে সুযোগ শুধু সামর্থ্যবানদের জন্যই।
শি জিন পিং সরকার চাইছে, শিক্ষা ব্যয়ে ন্যায্যতা আনতে, সর্বোপরি নাগরিকদের জন্য শিক্ষা সহজলভ্য করতে, সবার জন্য শিক্ষায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে। সেই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিভাবকদের ব্যয় হ্রাসের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমানোও উদ্দেশ্য।
কিন্তু অনেক অভিভাবক বলছেন, তাঁদের সন্তানদের কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। ফলে তাঁদের টিউটোরিং কোম্পানির কাছে যেতেই হয়। বিশেষ করে ভর্তি পরীক্ষার আগে টিউটোরিং প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের ঢল নামে। সন্তানকে পছন্দের স্কুল বা কলেজে ভর্তি করানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন অভিভাবকেরা। এখন এসব কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে সন্তানদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রাপ্তি চরম অনিশ্চয়তা মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
সম্প্রতি বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন অনেক দিন ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কথা বলছে। গত জুলাই মাসে দেশে কার্যরত সব অনলাইন টিউটোরিং কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর নিয়মকানুন ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলো বাংলাদেশে কোচিং সেন্টারগুলোর মতোই অবাধে ব্যবসা করত।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এই কোচিং বাণিজ্যে বিদেশি বিনিয়োগ সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া তারা আর কোনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে না। সরকারের অভিযানের আগে এই শিল্পের আকার ছিল ১২০ বিলিয়ন ডলার। সরকার নিয়ন্ত্রণ আরোপের পর নিউইয়র্কের শেয়ারবাজার থেকে শীর্ষ তিনটি কোম্পানির বাজারদর রাতারাতি ১০০ বিলিয়ন ডলার উধাও হয়ে গেছে। টিএএল এডুকেশন, নিউ ওরিয়েন্টাল এডুকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি এবং গাওতু টেকএডু নামে এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর গত বছরও বেশ উচ্চ ছিল। নতুন আইনের কারণে চাকরি হারিয়েছেন হাজার হাজার কর্মীও।
জুলাইয়ে চীনের মন্ত্রিসভা নতুন আইন ঘোষণা করার পর ঝ্যাংমেন এডুকেশন এক হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে এবং দুটি অফিস ভবনের ইজারা চুক্তি বাতিল করেছে। অথচ জুনেও নিউইয়র্কের পুঁজিবাজারে কোম্পানিটি রীতিমতো উড়ছিল। চীনা সংবাদমাধ্যম কাইসিন জানিয়েছে, টিকটকের মূল কোম্পানি বাইটড্যান্সেরও কোটি টাকার টিউটোরিং ব্যবসা রয়েছে। হাজার হাজার কর্মী রয়েছে তাদের, রয়েছে শিক্ষা বিষয়ক প্রযুক্তি পণ্য। তারাও এরই মধ্যে কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টিউটোরিং প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠক্রমের অবশ্যপাঠ্য বিষয়গুলো পড়াতে পারবে। তবে এই কার্যক্রমটি অবশ্যই অলাভজনক হতে হবে। চলতি বছরের মধ্যেই তাদের এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে বলা হয়েছে।
এদিকে যেসব প্রতিষ্ঠান নতুন আইনের আওতার বাইরে থাকছে তাদের কার্যক্রমে কিছু পরিবর্তন আনার দিকে নজর দিচ্ছে সরকার। সেখানে হাইস্কুল টিউটোরিং, ভকেশনাল শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন শিক্ষা এবং হাইব্রিড বিজনেস মডেল এই পরিবর্তনের আওতায় থাকবে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, হাইব্রিড বিজনেস মডেল বলতে বোঝানো হচ্ছে, স্কুল খোলা থাকার সময় দৈনিক সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত স্কুলপাঠ্য পড়ানো যাবে। আর ক্রীড়া, সংগীত, শিল্পকলা ইত্যাদি বিষয়ে ক্লাস অবশ্যই সাপ্তাহিক ছুটি এবং সরকারি ছুটির দিন করতে হবে। এই মডেল অনুসরণ করলে কোম্পানিগুলো শিক্ষার্থী ধরে রাখতে পারবে এবং বিপুল অঙ্কের টাকা ফেরত দেওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সোজা কথায় কোম্পানিগুলোকে স্কুলপাঠ্য বিষয়ের কোচিং ব্যবসা থেকে নজর সরাতে হবে এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে হবে। টিকতে চাইলে তাদের স্কুলপাঠ্যের বাইরের শিক্ষার প্রতি নজর দিতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে পড়ানো স্কুলপাঠ্য বলতে নৈতিক শিক্ষা, চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি, ইতিহাস, ভূগোল, গণিত, বিদেশি ভাষা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান বোঝানো হয়েছে।
যেসব কোম্পানি এরই মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে, তাদের তালিকায় নাম রাখতে হলে হাইব্রিড বিজনেস মডেলে যেতে হবে এবং স্কুলপাঠ্যের বাইরের বিষয়ে নজর দিতে হবে। এতে তাদের ব্যবসা ব্যাপকভাবে সংকুচিত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যেখানে বৃহৎ টিউটোরিং কোম্পানি যেমন, নিউ ওরিয়েন্টাল, টিএএল এবং গাওতুর কোচিং ব্যবসার রাজস্বের ৫০ থেকে ৮০ শতাংশই আসে স্কুলপাঠ্য বিষয় থেকে।
এদিকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে টিউটোরিং কোম্পানিগুলো বিকল্প বিজনেস মডেল দাঁড় করানোর কথা ভাবছে। বিশেষ করে সার্বিক দক্ষতা উন্নয়ন, স্কুল উত্তর যত্ন, সরকারি বিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতা এবং ভকেশনাল শিক্ষার দিকে নজর দিচ্ছে তারা। কিন্তু মূল ব্যবসার চাইতে এটার আকার একেবারে নগণ্য।
চায়না ইন্টারন্যাশনাল ক্যাপিটালের হিসাবে, স্কুলপাঠ্য বিষয় পড়াতে না পারলে টিউটোরিং শিল্পের মোট রুটিন ভুক্ত ক্লাসের সংখ্যা ৬১ শতাংশ কমে যাবে। নিউ ওরিয়েন্টালের মতো কোম্পানির রাজস্ব কমবে ৪৩ শতাংশ আর টিএএলের রাজস্ব কমবে ৬৭ শতাংশ।
একটি আঞ্চলিক স্কুল উত্তর প্রশিক্ষণ কোম্পানির কর্মকর্তা বলেন, স্কুল খোলা থাকাকালেও কোম্পানিগুলো পড়াতে পারবে। কিন্তু সেই ক্লাস সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় শুরু হয়ে ৯টায় শেষ হবে। এখন শিক্ষার্থীদের যদি হোমওয়ার্ক শেষ করতেই সাড়ে ৮টা বেজে যায় তাহলে স্কুল ছুটির পর হাতে আর কত সময়ই বা থাকে! আগে যেখানে তাঁরা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আটটি ক্লাসের রুটিন করতেন, এখন সেখানে স্কুল ছুটির দিনে মাত্র পাঁচটি ক্লাস রাখতে হচ্ছে। এতে কোম্পানির রাজস্ব ৬০ শতাংশ কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেক কোম্পানি অনলাইন কোচিংয়ের দিকে ঝুঁকছে। লাইভ ক্লাসের পাশাপাশি কেউ কেউ রেকর্ড করা কোর্সও অফার করছে। কিন্তু শিক্ষা কমিশন সতর্ক করে বলেছে, রেকর্ডেড কোর্সগুলোকে ভবিষ্যতে শিক্ষা প্রকাশনী হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তার মানে, এর জন্য লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক হবে।
তবে নতুন নীতিমালায় স্কুলপাঠ্য বিষয়গুলো পড়ানোর রমরমা ব্যবসা সংকুচিত হলেও অন্যদিকে আরেক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাচ্ছে। কারণ শিক্ষা চাহিদা মেটাতে সরকারি বিদ্যালয়গুলোর ওপর চাপ বাড়বে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, স্কুলে ছয় ও সাত বছর বয়সী শিশুদের কোনো লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। প্রতি শিক্ষাবর্ষে নির্বাচনী ও মূল পরীক্ষার সংখ্যাও সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কাগজে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে না। অন্যান্য শ্রেণির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতি সেমিস্টারে একটি করে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারে। জুনিয়র হাইস্কুলে মিডটার্ম (অর্ধ সাময়িকী) পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে কোনো ধরনের আঞ্চলিক বা আন্তঃস্কুল পরীক্ষার আয়োজন করা যাবে না। নন-গ্র্যাজুয়েট জুনিয়র হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক নির্বাচনী পরীক্ষা, ইউনিট পরীক্ষা, মাসিক পরীক্ষা ইত্যাদি নেওয়া যাবে না। বিভিন্ন একাডেমিক রিসার্চের নামে নানা মোড়কে পরীক্ষা নেওয়া নিষেধ। প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্ক দেওয়াও নিষিদ্ধ করেছে। আর জুনিয়র হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য ছোট আকারে হোমওয়ার্ক দিতে বলেছে। বলা হয়েছে, রাতের বেলা দেড় ঘণ্টায় শেষ করা যাবে এমন হোমওয়ার্ক দিতে হবে।
ফলে কার্যকর শিক্ষা ব্যবস্থা উদ্ভাবন নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে গবেষণা ও শিক্ষা উপকরণ সরবরাহে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। এরই মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠদান ও উন্নত শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানে সহযোগিতা করছে।
বেইজিংয়ের লানসাম টেকনোলজি চীনা ভাষা শিক্ষার কোর্স করায়। তারা এখন নাটক ও শিল্পকলা শিক্ষার দিকে নজর দিচ্ছে। বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই ক্লাস শেষে তারা এই বিষয়ে পাঠদান করে। শেনঝেন দিয়ানমাও টেকনোলজি নামে আরেক প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সাল থেকে কোডিং কোর্স, পাঠদান উপকরণ এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। তারা ২১ হাজারের বেশি বিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করছে। যদিও স্কুলপাঠ্য বিষয়ে কোচিং ব্যবসার চেয়ে এখানে প্রান্তিক মুনাফা বেশ কম।
আবার তথ্যভিত্তিক কিছু প্ল্যাটফর্মও ব্যবসার নতুন ক্ষেত্র হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় সিঙ্গাপুরের টিমাসেকের সমর্থনপুষ্ট কোম্পানি ইকিজোয়ে। তারা ২০১১ সাল থেকেই সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে বিনা মূল্যে সেবা দিয়ে আসছে। তারা শিক্ষকদের কোর্স তৈরি, হোমওয়ার্ক দেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে সহযোগিতা করে। সেবাটি সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে হওয়ায় কোম্পানিটির রাজস্ব নির্ভর করে মূলত কে-১২ অনলাইন টিউটোরিং ক্লাসের ওপর। এ ক্ষেত্রে কোম্পানিকে ভর্তুকি দিতে পারে চীনা সরকার।
তথ্যসূত্র: নিক্কেই এশিয়া, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) অনলাইনে এমপিও আবেদন নিষ্পত্তির সময়সীমা নির্ধারণ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)
২ ঘণ্টা আগে১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের মধ্যবর্তী শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে যাত্রা শুরু করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম এই বিশ্ববিদ্যালয় চার দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গত ২২ নভেম্বর ৪৬ বছরে পদার্পণ করেছে
২ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির যুগ্ম সচিব মো. রফিকুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগেদ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেডের ১৬তম গ্রেডভুক্ত ‘গাড়ি চালক (পুরুষ)’ পদে অনুষ্ঠিত ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (এইচআরডি-১) মো. জবদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে