ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নতুন ক্যাম্পাস রাজধানীর মেরুল বাড্ডায়

বিজ্ঞপ্তি
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৪, ১৬: ১১
Thumbnail image

সবুজের আবাহনে আগামীর আহ্বানে’ শীর্ষক মিট অ্যান্ড গ্রিট উইথ মিডিয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন ক্যাম্পাস ‘উন্মোচন’ করেছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় অবস্থিত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পরিবেশবান্ধব নতুন ক্যাম্পাসে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষ, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়। পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন কার্যক্রম, লোকায়ত পারফরম্যান্স এবং আলোচনার মাধ্যমে একটি সামগ্রিক শিক্ষা অভিজ্ঞতা এগিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং ভবিষ্যৎ অঙ্গীকার আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে তুলে ধরে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। 

এই মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্য সদস্যরা, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর মাহফুজুল আজিজসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারপারসন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন। 

মেরুল বাড্ডায় সাত একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই নতুন ক্যাম্পাস বাংলাদেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ইনার সিটি ক্যাম্পাস। সুন্দরবন থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া এই ক্যাম্পাস প্রকৃতি এবং স্থাপত্যের মিশেলে নির্মিত হয়েছে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই ভবন ডিজাইন, নির্মাণ, পরিবেশ সচেতনতাবিষয়ক বিভিন্ন ফিচারে সিঙ্গাপুর, চীন, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের সেরা বিশেষজ্ঞরা কাজ করেছেন। 

এই ভবনে ক্রস ভেন্টিলেশন এবং হাইব্রিড থার্মাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ভবনটির সব দিক থেকেই আলো ও বাতাস প্রবেশ করতে পারে। অ্যারো ডায়নামিক ফিন ভবনের ভেতরে বাতাসের সর্বোচ্চ প্রবাহ নিশ্চিত করবে। ভবনের গায়ে সবুজ চাদরের মতো লেগে থাকা গাছগুলো অক্সিজেন সরবরাহ করবে এবং হাইব্রিড কুলিং সিস্টেম ক্লাসের ভেতরে বিশুদ্ধ বাতাস নিয়ে আসবে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে ক্লাসে বসে থাকলেও তাদের ক্লান্তি আসবে না। এসবের ফলে এয়ারকন্ডিশনিংয়ের নির্ভরতা কমে আসবে, যা এই ভবনের ৪০ শতাংশ এনার্জি সাশ্রয় করবে। 

সুন্দরবনের ইকোসিস্টেম থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এই ভবন তৈরি করা হয়েছে। যেখানে একটি স্বচ্ছ জলাধারের ওপর অ্যাকাডেমিয়ার কার্যক্রম চলবে। বৃষ্টির পানি জলাধার পর্যন্ত যাতে পৌঁছাতে পারে সেজন্য অসংখ্য রেইন চেইন বসানো হয়েছে। এই পানি দিয়েই ভবনের গাছপালায় সেচ দেওয়া হবে এবং বাড়তি পানি জলাধার পূরণে কাজে লাগবে। এই ভবনে রয়েছে অ্যাডভান্সড সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। এই প্ল্যান্টেই হবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। ভবনের ছাদে রয়েছে ১ দশমিক ৫ মেগাওয়াট পরিমাণ বিদ্যুৎশক্তিসম্পন্ন সোলার প্যানেল, যা এই ভবনের প্রয়োজনীয় শক্তির ২৫ শতাংশ জোগান দেয়। অত্যাধুনিক ও নান্দনিক এই ভবনের বেশির ভাগ জায়গা শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এসব উন্মুক্ত জায়গায় তারা পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া এবং এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজ করতে পারবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা যাতে সহজে ক্যাম্পাসে আসতে পারেন এবং সব জায়গায় বিচরণ করতে পারেন, সে জন্য রয়েছে ইউনিভার্সাল এক্সেসিবিলিটি।

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস নির্মাণের অনুপ্রেরণা এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের শিক্ষাদর্শন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘স্যার ফজলে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যেখানে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে শিক্ষা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চা হবে। প্রকৃতি এবং আধুনিক স্থাপত্যের মিশেলে এই নতুন ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হয়েছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জীবন সম্পর্কে অন্যভাবে ভাবতে শেখাবে। উন্নয়নের কারণে নগরায়ণ হবেই, কিন্তু প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল হতেই হবে। নগর পরিকল্পনা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই ক্যাম্পাস শিক্ষার্থী, পরিকল্পনাবিদ এবং সংশ্লিষ্টদের জন্য একটি আদর্শ মানদণ্ড হয়ে থাকবে।’ 

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই নতুন ক্যাম্পাসকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ল্যাবরেটরি হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ। তিনি বলেন, ‘আমরা মূলত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই নতুন ক্যাম্পাসকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের একটা ল্যাবরেটরি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে যে, আমরা মানসম্মত গবেষণা আর উচ্চমানের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাংলাদেশের একটি ফ্ল্যাগশিপ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলব। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ 

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নতুন ক্যাম্পাসে মিট অ্যান্ড গ্রিট উইথ মিডিয়া অনুষ্ঠানে অতিথিরাঅনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এবং ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারপারসন সালাহদীন ইমাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অফিস অব কমিউনিকেশনসের ডিরেক্টর খায়রুল বাশার। অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত সাংবাদিকদের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নতুন ক্যাম্পাস ঘুরিয়ে দেখান ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার আরিফুল ইসলাম, ডিরেক্টর অব অপারেশন্স মোহাম্মদ সাজেদুল করিম এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রজেক্ট আর্কিটেক্ট শফিকুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত