Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষায় তিন বন্ধুর স্বপ্ন জয়

পল্লব আহমেদ সিয়াম, ইবি
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষায় তিন বন্ধুর স্বপ্ন জয়

রঙিন ফুলেল ক্যাম্পাসে তিন বন্ধুর স্বপ্ন ও চিন্তাভাবনা যেন শতভাগ মিলে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনের শুরুতে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসে পরিচয়। এরপর কথায়-আড্ডায় ধীরে ধীরে প্রকাশ হয়, তিনজনেরই আগ্রহ গবেষণা ও উদ্ভাবনে। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনজনই শুরু করেন গবেষণার কাজ—লক্ষ্য বিদেশে উচ্চশিক্ষা। তৃতীয় বর্ষ থেকেই শুরু গবেষণা। মাস্টার্স শেষ হওয়ার আগে সবারই প্রকাশিত হলো বেশ কয়েকটি করে গবেষণাপত্র। আইইএলটিএসেও স্কোর যথার্থ। অতঃপর আবেদন। সবশেষে তিন বন্ধুর একসঙ্গে স্বপ্ন জয়। এই হলো কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের তিন বন্ধুর গল্প।

এই তিন বন্ধু হলেন নাঈম হোসেন, সুমন আলী ও মামুনুর রশিদ। সম্প্রতি তিন বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের পৃথক তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি গবেষণার জন্য ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পেয়েছেন। আসছে আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন তাঁরা। এরই মধ্যে তাঁদের গল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

মজার বিষয় হলো, বিবিএতে ৩.৮৪ ও এমবিএতে ৩.৯৩ সিজিপিএ পেয়েছেন তিনজনই। এ ছাড়া তিনজনই আইইএলটিএসে ৬.৫-এর ওপর এবং জিআরইতে ৩০০-এর ওপর স্কোর পেয়েছেন।

বিবিএ তৃতীয় বর্ষে থাকাকালে ২০২০ সালের শুরুর দিকে হাসানস রিসার্চ ল্যাবে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হন তাঁরা। এর মধ্যে বিভিন্ন জার্নালে নাঈমের ৭টি, মামুনের ১০টি ও সুমনের ৬টি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের প্রত্যেকেরই কিছু গবেষণাপত্র প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। এই গবেষণাগুলো তাঁদের ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপের পথ সুগম করে দিয়েছে।

সুমন আলী ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট ইআই পাসোতে পিএইচডি ইন ফিন্যান্স, নাঈম হোসেন ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলেন্সে পিএইচডি ইন ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিকস এবং মামুনুর রশিদ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস সান অ্যান্টনিওতে পিএইচডি ইন ফিন্যান্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

ব্যবসায় বিষয়ে যাঁরা নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের জন্য তিন বন্ধুর পরামর্শ হলো—আইইএলটিএস স্কোর ৭ থাকলে ভর্তির পথ সুগম হয়। এ ছাড়া বিজনেস ফ্যাকাল্টিতে জিআরইর গুরুত্ব বেশি। এতে ৩১০-এর ওপরে স্কোর তুলতে পারলে স্কলারশিপের অনেক সুযোগ সৃষ্টি হবে।

মো. মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, এই সাফল্য তাঁর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফিন্যান্সের পিএইচডি প্রোগ্রামগুলোর ভর্তির প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতাপূর্ণ। সেখানে একই বিশ্ববিদ্যালয়, একই বিভাগ এবং তিন বন্ধু একসঙ্গে পিএইচডিতে সুযোগ পাওয়া বেশ আনন্দের বিষয়।

বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনের শুরুতে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসে পরিচয়। এরপর কথায়-আড্ডায় ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয়, তিনজনেরই আগ্রহ গবেষণা ও উদ্ভাবনে। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনজনই শুরু করেন গবেষণার কাজ। 

তিন বন্ধুর সুপারভাইজার ছিলেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক ড. বখতিয়ার হাসান। তিনজনই এই শিক্ষকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

সুমন আলী জানান, তাঁর বিভাগ ও পরিবারের জন্য এই সাফল্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ড. বখতিয়ারের প্রকাশনা দেখে তিন বন্ধু মিলে একসময় ভাবতেন, একদিন তাঁরাও তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন প্রকাশনা করবেন। তাঁদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এখন তাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করেন। সুমন জানান, গবেষণাপত্রগুলোই মূলত তাঁদের স্কলারশিপের জন্য বড় ভূমিকা পালন করেছে।

অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে নাঈম হোসেন জানান, তাঁদের এই অর্জন মানুষ এত ভালোভাবে মূল্যায়ন করবে, ভাবতে পারেননি তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত